আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ। আসলে আমি একটা পরামর্শ চাচ্ছি। আমি এতোটা গুছিয়ে কথা বা লিখতে পারি না। তাই আগে থেকেই ই মাফ চেয়ে নিচ্ছি।

আমরা জানি যে, কেউ যদি কোনো গুনাহ করে এবং তা মানুষকে বলে বেড়ায়, মানে সাক্ষী রাখে তাহলে সেই গুনাহ আল্লাহ মাফ করে নাহ। একটা উদাহরণ মাধ্যমে আমি আমার প্রশ্নটা বুঝিয়ে বলছি। যেমন আমি আগে একটা গুনাহ করতাম, তোহ আমার কাছের কেউ বিষয়টা জানতো এবং এই অভ্যাস ছাড়তে বলে।
এখন সে যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে সপ্তাহে কতবার অন্যায় করো, ছাড়তে পারছো, কয়বার করছো এমন প্রশ্ন করে তাহলে কি তার সাথে শেয়ার করা যাবে??
এখন আমার আলহামদুলিল্লাহ অনেকটাই এটা থেকে নিজেকে বের করে আনতে পেরেছি,তবেও মাঝে মধ্যে হয়ে যায়। কিন্তু বিষয়টা আমার আর আমার রবের মধ্যে আছে। উনি তোহ গোপন করে রেখেছেন আমার পাপ। আমি যদি বলে বেড়াই আমি পাপ করি নাহ তাহলে কি এটা রিহা মধ্যে পড়ছে নাহ???
আর যদি বলি আমি ছেড়ে দিছি একেবারে তাহলেও তোহ বিষয়টা পুরোপুরি সঠিক নাহ। এখন তাকে আমার কিভাবে উত্তর দেওয়া উচিত???
আফওয়ান কতটুকু গুছিয়ে লিখতে পেরেছি জানি না।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ [٢:٢٢٢

নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। [বাকারা-২২২]

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০]

গুনাহের পর তাৎক্ষণিক তাওবাহ করা ওয়াজিব।তাওবাহ করার মনস্থ করার পর তাওবাহকে বিলম্ব করা জায়েয হবে না।সুতরাং যে ব্যক্তি তাওবাহকে দেড়ীতে করার মনস্থ করবে,সে দু'টি গোনাহে লিপ্ত হবে।একটি হল,দীর্ঘ সময় যাবৎ একটি গোনাহের কাজে লিপ্ত থাকা।দ্বিতীয়টি হল,দেড়ীতে তাওবাহ করার মনস্থ করা।

ইয ইবনে আব্দুস-সালাম বলেন,

" والتوبة واجبة على الفور ، فمن أخرها زماناً صار عاصياً بتأخيرها ، وكذلك يتكرر عصيانه بتكرر الأزمنة المتسعة لها ، فيحتاج إلى توبة من تأخيرها "

গোনাহে লিপ্ত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক তাওবাহ করা ওয়াজিব।কেউ তাওবাহ করতে দেড়ী করলে সে গোনাহগার হবে।এবং যত দীর্ঘ সময় হবে,তার গোনাহও তত দীর্ঘ হবে।দেড়ী তাওবাহ করলে সাথে আরেকটি তাওবাহ করতে হবে,দেড়ীতে তাওবাহ করার জন্য।(কাওয়াঈদুল আহকাম-১/২২১)

যদি কেউ তাওবাহ করার ইচ্ছা পোষণ করে তাওবাহ করার পূর্বেই মারা যায়,তাহলে তাকে বিনা তাওবাহে মৃত্যুবরণ কারী রূপে গণ্য করা হবে।

মানুষের দোষ ও পাপ গোপন করার অনেক সওয়াব রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে কেউ অন্যের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।’ (বুখারি : ২৪৪২; মুসলিম : ২৬৯৯)

 সূরা আন-নিসা এর মধ্যে আল্লাহ্ বলেনঃ

لَّا يُحِبُّ اللَّهُ الْجَهْرَ بِالسُّوءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلَّا مَن ظُلِمَ ۚ وَكَانَ اللَّهُ سَمِيعًا عَلِيمًا

আল্লাহ্ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ্ শ্রবণকারী,বিজ্ঞ”। [সূরা আন নিসা, ৪:১৪৮]

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

গোনাহ হওয়ার সাথে সাথেই তাওবা ইস্তেগফার করা ওয়াজিব, গুনাহ গোপন  হোক বা প্রকাশ্য হোক। হ্যা, সর্বদা তাওবাহ ইস্তেগফার করা প্রত্যেক মুসলামনের উপর ওয়াজিব। যাতেকরে ভবিষ্যতে আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেন।আপনি আপনার বর্ণনামতে সর্বদা তাওবা ইস্তেগফার করতে থাকবেন , যাতে করে আল্লাহ তা’আলা আপনার সকল  গোনাহ সমূহকে ক্ষমা করে দেন।এবং যার সাথে আপনি আপনার গুনাহের কথা শেয়ার করেছেন তাকে অনুরোধ করা যে,আমি আমার গুনাহ থেকে সরে আসার চেষ্ট করছি। আমার গুনাহের কথা আপনি কাওকে বলবেন না । কারণ গোনাহ করা যেমন গুনাহ ,তা প্রকাশ করাও গুনাহ এবং কোন  মানুষের দোষ ও পাপ গোপন করাও অনেক সওয়াবের কাজ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 137 views
...