বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
■ আল্লাহ তায়ালা বলেন-
لِّلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ
وَالْأَرْضِ ۚ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ يَهَبُ لِمَن يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ
لِمَن يَشَاءُ الذُّكُورَ
নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের
রাজত্ব আল্লাহ তা’আলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যা-সন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান
দান করেন। (সূরা শূরা, আয়াত ৪৯)
■ তিনি অন্যত্রে ইরশাদ
করেন-
وَإِذَا بُشِّرَ أَحَدُهُم
بِالْأُنثَىٰ ظَلَّ وَجْهُهُ مُسْوَدًّا وَهُوَ كَظِيمٌ. يَتَوَارَىٰ مِنَ
الْقَوْمِ مِن سُوءِ مَا بُشِّرَ بِهِ ۚ أَيُمْسِكُهُ عَلَىٰ هُونٍ أَمْ يَدُسُّهُ
فِي التُّرَابِ ۗ أَلَا سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ
যখন তাদের কাউকে কন্যা
সন্তানের সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা মুখ কাল
হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের
কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে
থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নীচে পুতে ফেলবে।
শুনে রাখ, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।
(সূরা নাহল, আয়াত ৫৮-৫৯)
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ قَالَ رَسُولُ
اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ ابْتُلِيَ بِشَيْءٍ مِنَ الْبَنَاتِ
فَصَبَرَ عَلَيْهِنَّ كُنَّ لَهُ حِجَابًا مِنَ النَّارِ " . قَالَ أَبُو
عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ .
আইশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার মেয়ে সন্তানদের জন্য কোনরকম পরীক্ষার
সম্মুখীন হয় (বিপদগ্রস্ত হয়) , সে তাদের ব্যাপারে
ধৈর্য ধরলে তার জন্য তারা জাহান্নাম হতে আবরণ (প্রতিবন্ধক) হবে। (সুনানে তিরমিযী ১৯১৩)
■ পর্দা করা ফরজ। আল্লাহ
তাআলা বলেন,
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا
تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
‘আর তোমরা স্বগৃহে
অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব
৩৩)
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ
عَنهُمَا قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ وَإِنَّهَا إِذَا
خَرَجَتِ من بيتها اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ وَإِنَّهَا لَا تَكُونُ أَقْرَبَ
إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا.
আব্দুল্লাহ বিন উমার
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মেয়ে মানুষ (সবটাই)
লজ্জাস্থান (গোপনীয়)। আর সে যখন নিজ বাড়ি থেকে বের হয়, তখন শয়তান তাকে পুরুষের দৃষ্টিতে সুশোভন করে তোলে।
সে নিজ বাড়ির অন্দর মহলে অবস্থান ক’রে আল্লাহর অধিক নিকটবর্তী থাকে। (তাবরানী ২৯৭৪)
■ এক মহিলার সামনে আরেক
মহিলার সতর কতটুকু এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
(وَأَمَّا بَيَانُ الْقِسْمِ الثَّانِي)
فَنَقُولُ: نَظَرُ الْمَرْأَةِ إلَى الْمَرْأَةِ كَنَظَرِ الرَّجُلِ إلَى
الرَّجُلِ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ. وَهُوَ الْأَصَحُّ
এক মহিলার সামনে অন্য
মহিলার সতরঃ
এক মহিলা অন্য মহিলার
ঐ সমস্ত অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে,যা এক পুরুষ অন্য
পুরুষের দিকে পারে।যখিরা নামক কিতাবে বর্ণিত আছে এবং এটাই বিশুদ্ধ মত।
এক পুরুষ অন্য পুরুষের
কোন কোন অঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করতে পারবে
■ এসম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে
হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
وَيَجُوزُ أَنْ يَنْظُرَ الرَّجُلُ إلَى
الرَّجُلِ إلَّا إلَى عَوْرَتِهِ كَذَا فِي الْمُحِيطِ وَعَلَيْهِ الْإِجْمَاعُ،
كَذَا فِي الِاخْتِيَارِ شَرْحِ الْمُخْتَارِ. وَعَوْرَتُهُ مَا بَيْنَ سُرَّتِهِ
حَتَّى تُجَاوِزَ رُكْبَتَهُ، كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ
একজন পুরুষ অন্য পুরুষের
দিকে সতর ব্যতীত অন্যান্য স্থানের দিকেও দৃষ্টিপাত
করতে পারবে,এর উপর ইজমা বা উলামায়ে কেরামদের
ঐক্যমত রয়েছে। মুহিত ইত্যাদি গ্রন্থাবলীতে এভাবেই বর্ণিত আছে।
পুরুষ-পুরুষের সামনে
সতর হচ্ছে,নাভীর নিচ থেকে হাটু পর্যন্ত।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩২৭।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
আলট্রাসনো করে বাচ্চার
লিঙ্গ সম্পর্কে জানা মূলত নাজায়েজ নয়। তবে
যেহেতু পর্দা করা ফরজ। আর শুধু বাচ্চার লিঙ্গ সম্পর্কে জানার জন্য আলট্রাসনো করাটা মুবাহ পর্যায়ের। তাই শুধু একটা মুবাহ কাজের
জন্য পর্দার বিধান লঙ্ঘন করার অনুমতি শরিয়তে নেই। একান্ত জরুরী হলে সেই ক্ষেত্রে আলট্রাসনো
করা যাবে। তখন ডাক্তারের জন্য সতর দেখাটাও জায়েজ হবে। অন্যথায় শুধু লিঙ্গ জানার
জন্য আলট্রাসনো করার কারণে অন্য পুরুষকে অথবা অন্য মহিলাকে সতর দেখানো জায়েজ হবে
না। এই ক্ষেত্রে পর্দার বিধান লঙ্ঘন করা ছাড়া আলট্রাসনো করা সম্ভব হলে জায়েজ
অন্যথায় জায়েজ হবে না।