আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
294 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ!

প্রথম প্রশ্ন:

আমাদের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার জন্য নির্দিষ্ট কোন ইমাম ঠিক করা নেই। এই অবস্থায় অনেক সময় দেখা যায় বহু লোক একসাথে মসজিদে জামায়াত হলেও নামাজে ভুল হবার আশঙ্কায় কেউ ইমামতি করতে চায়না।(উল্লেখ্য: এখানে কেউই সঠিক তেলাওয়াত জানেনা এবং ভুল হবার আশঙ্কা প্রবল)। তাই বাধ্য হয়ে লোকজন একা একা নামাজ পড়েন। এই ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই হয়ে থাকে। আমার প্রশ্ন হল, অনেক মুসল্লী একসাথে হয়েও জামাতে ফরজ সালাত আদায় করতে পারলো না! এখানে কি তাদের সালাত কবুল হবে?? কিংবা এরূপ অবস্থায় আমাদের কি করা প্রয়োজন?

দ্বিতীয় প্রশ্ন:
কেউ একা একা ফরজ সালাত আদায় করলে কি ইকামত দিয়ে শুরু করতে হয়? যদি এমন হয় যে,  জামাত হবার কোন সম্ভাবনাই নেই কিংবা কেউ বাসায় সালাত আদায় করলে তবুও কি তাকে ইকামত দিতে হবে?? অনুগ্রহপূর্বক  সালাতে ইকামত দেয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত বলবেন একটু।

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

জামাআতের সাথে নামাজ আদায় কারীর জন্যে ইকামত দেওয়া সুন্নাত।একাকী নামাজ আদায় কারীর জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব।যদি একাকী নামাজ আদায় কারী ইকামত না দেয়,তাহলে মাকরুহ হবেনা এবং নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা।  জামায়াতের সহিত নামাজ যদি ইকামত ছাড়া হয়,তাহলে মাকরুহ হবে,সুন্নাতের খেলাফ হবে।

উকবা ইবনু আমির রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ -কে বলতে শুনেছি যে,

يَعْجَبُ رَبُّكَ مِنْ رَاعِي غَنَمٍ فِي رَأْسِ شَظِيَّةِ الْجَبَلِ يُؤَذِّنُ بِالصَّلاَةِ وَيُصَلِّي فَيَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ انْظُرُوا إِلَى عَبْدِي هَذَا يُؤَذِّنُ وَيُقِيمُ الصَّلاَةَ يَخَافُ مِنِّي قَدْ غَفَرْتُ لِعَبْدِي وَأَدْخَلْتُهُ الْجَنَّةَ

তোমার রব সে ব্যক্তির উপর খুশি হন, যে পাহাড়ের উচ্চশৃঙ্গে বকরী চরায় এবং নামাযের জন্য আযান দেয় ও নামায আদায় করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, আমার এই বান্দাকে দেখ! নামাযের জন্য সে আযান ও ইকামত দিচ্ছে। সে আমাকে ভয় করছে। আমি আমার বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম ও জান্নাতে প্রবেশ করালাম। (আবু দাউদ ১২০৩)

 “কোন ব্যক্তি যখন কোন বৃক্ষ-পানিহীন প্রান্তরে থাকে, অতঃপর সেখানে নামাযের সময় উপস্থিত হয়, তখন সে যেন ওযু করে। পানি না পেলে যেন তায়াম্মুম করে। অতঃপর সে যদি শুধু ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার সাথে তার সঙ্গী দুই ফিরিশ্তা নামায পড়েন। কিন্তু সে যদি আযান দিয়ে ও ইকামত দিয়ে নামায পড়ে, তাহলে তার পশ্চাতে আল্লাহর এত ফিরিশ্তা নামায পড়েন, যাদের দুই প্রান্ত নজরে আসে না!” (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, সহিহ তারগিব ২৪১নং)

আরো বিস্তারিত দেখতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/12304/

* মসজিদের ইমামের তিলাওয়াত শুদ্ধ হতে হবে।কেননা তার নামাজের উপরেই সকলের নামাজের শুদ্ধতা নির্ভর করে।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমাম ও মুয়াযযিনের ব্যাপারে বলেছেন,

ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺿﺎﻣﻦ ﻭﺍﻟﻤﺆﺫﻥ ﻣﺆﺗﻤﻦ، ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺃﺭﺷﺪ ﺍﻷﺋﻤﺔ ﻭﺍﻏﻔﺮ ﻟﻠﻤﺆﺫﻧﻴﻦ

ইমাম হচ্ছে দায়িত্বশীল আর মুয়াজ্জিন আমানতদার, হে আল্লাহ! ইমামদের সঠিক পথ দেখান এবং মুয়াজ্জিনদেরকে ক্ষমা করুন’। (তিরিমিযী ২০৭)

 

শরীয়তের বিধান হলো কুরআনে কারীম শুদ্ধ করে পড়তে পারে এমন ব্যক্তি অশুদ্ধ তিলাওয়াত কারী ইমামের পিছনে নামায পড়লে তার নামায হয় না।

فى الفتاوى الهندية – ولا يصح اقتداء القارئ بالأمي وبالأخرس

কিরাত বিশুদ্ধ এমন ব্যক্তির নামায কেরাত অশুদ্ধ এমন ব্যক্তির পিছনে শুদ্ধ হয় না।

(ফাতাওয়া শামী- ২/৩২৪.ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৪৩-১৪৪)

فى الفتاوى الهندية – ولا يصح اقتداء القارئ بالأمي

উম্মির(অর্থাৎ যার কেরাত অশুদ্ধ) পিছনে ক্বারীর(অর্থাৎ যার ক্বিরাত বিশুদ্ধ) ইকতিদা সহীহ নেই। ফাতাওয়া শামী- ২/৩২৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৪৩-১৪৪, ফাতাওয়া তাতারখানিয়া-২/২৫৬

الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 581):

"(و) لا (غير الألثغ به) أي بالألثغ (على الأصح) كما في البحر عن المجتبى، وحرر الحلبي وابن الشحنة أنه بعد بذل جهده دائماً حتماً كالأمي، فلايؤم إلا مثله

সারমর্মঃ

যে ব্যাক্তি কিরাআত শুদ্ধ পড়ার উপর শক্তি রাখেনা,সে কিরাআত শুদ্ধ পাঠ কারীর ইমাম হতে পারবেনা।তবে তার মতো ব্যাক্তিদের ইমাম হতে পারবে।

প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!

১.উক্ত মসজিদ কমিটির উপর আবশ্যক যে, তারা দ্রুত একজন যোগ্য ইমাম নিয়োগ দিবে । প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে মুসল্লিদের নামাজ হয়ে যাবে, জামাত ত্যাগ করার কারণে তরকে জামাতের গুনাহ হবে । তাদের জন্য উচিৎ ছিল,তাদের মধ্য হতে একজন ইমাম হয়ে নামাজ পড়াবেন। কেননা উম্মী (যার ক্বেরাত শুদ্ধ না) ব্যক্তির পিছনে উম্মী ব্যক্তির নামাজ সহিহ হবে। কিন্তু উম্মীর পেছনে কারী(যার ক্বেরাত শুদ্ধ আছে)তার নামাজ শুদ্ধ হবে না ।

২. একাকী নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির জন্য ইকামত দেওয়া মুস্তাহাব। যদি কেউ ইকামত না দিয়ে নামজ পড়ে তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 232 views
...