بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মুসলমানের কবর যিয়ারত করা জায়েজ।
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-
عن ابن بريدة عن أبيه قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- «
نهيتكم عن زيارة القبور فزوروها فإن فى زيارتها تذكرة
অনুবাদ-হযরত ইবনে বুরাইদা রাঃ
তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-আমি তোমাদের কবর যিয়ারত করতে নিষেধ
করেছিলা, এখন যিয়ারত
কর। [কোন সমস্যা নেই।]। কেননা কবর যিয়ারত মৃত্যুকে স্মরণ করে দেয়। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৭০০, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৩০৫, সুনানে
ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৫৭১, সুনানে দারা
কুতনী, হাদীস নং-৬৯}
কবর যিয়ারত করা ছাড়া কবর তথা
মাযার ঘিরে আরো যত কাজ করা হয়, তা সবই বিদআত। এসব করা জায়েজ নেই। যেমন-
১-মাযার ঘিরে উরস করা।
২-মাযারে বাতি প্রজ্বলন করা
২-মাযারে মান্নত মানা।
৩-মাযারে গিয়ে দুআ করা। মৃত
ব্যক্তির কাছে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করে দেওয়ার আবেদন করা।
৪-মাযারে শিন্নি পাকানো ইত্যাদী
সকল কাজই বিদআত ও শরীয়ত গর্হিত কাজ। এসব করা খুবই গোনাহের কাজ। এসবের কোন ভিত্তি ইসলামে
নেই। সম্পূর্ণ হারাম এ সকল কাজ।
স্বীয় কবরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান
করাকে নিষিদ্ধ করে আল্লাহর নবী ইরশাদ করেন-
عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا
بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى
داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044
“তোমরা স্বীয়
ঘরকে কবর বানিয়োনা। (অর্থাৎ কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তেলাওয়াত
ও যিকির ইত্যাদি বিহীন করনা।) এবং আমার কবরে উৎসব করোনা।(অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন আসরের আয়োজন করনা। তবে হ্যাঁ আমার উপর দুরূদ পাঠ কর।
নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।(আল্লাহ তায়ালার
ফেরেশতারা পৌঁছিয়ে দেন।)” (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং-২০৪৪/৪০)
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে-
রাসূলে সাঃ নিজ রওযা মুবারকে উৎসব (উরস) পালন করতে বারণ করেছেন। তাহলে অন্য কে আর এমন
আছে যার কবরে তা বৈধ হবে?
হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার
আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদিসের ব্যাক্ষা করতে গিয়ে বলেন-
قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في
يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد الشيخ ويأكلون ويشربون وربما
يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله
(عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)
“এ হাদিস থেকে
বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা
দিনে (উরসের নামে) ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে-আজ পীর সাহেবের জন্ম বার্ষিকী
(মৃত্যু বার্ষিকী), সেখানে তারা পানাহারেরও আয়োজন করে,
আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই
শরীয়ত পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ। এ সব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। (আউনুল মা’বুদ-৬/২৩)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই
/ বোন!
মাযার ঘিরে উরস করা,বাতি প্রজ্বলন করা,মাযারে মান্নত মানা,মাযারে গিয়ে দুআ করা,মৃত ব্যক্তির কাছে নিজের প্রয়োজন পূর্ণ করে দেওয়ার আবেদন করা,মাযারে শিন্নি পাকানো ইত্যাদী সকল কাজই বিদআত ও শরীয়ত গর্হিত কাজ। এসব করা
খুবই গোনাহের কাজ। এসবের কোন ভিত্তি ইসলামে নেই। এ সকল কাজ সম্পূর্ণ হারাম।হারাম ও নাজায়েয কাজে সহযোগিতা করাও হারাম। অতএব আপনি
সঠিক কাজ করেছেন উক্ত নিষিদ্ধ কাজে সহযোগিতা না করে। সাহায্য না করাতে কোন গুনাহ তো
হবেই না বরং এতে আপনি সওয়াবের অধিকারী হবেন
ইনশাআল্লাহ।