আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
129 views
in পবিত্রতা (Purity) by (80 points)
আসসালাুআলাইকুম।

বেশ কয়েদিন ধরে নামাজের শেষ রাকাতে বায়ুর অনেক চাপ আসে।বায়ু ধরে রাখার চেষ্টা করলেও মনে হয় যে বায়ু হয়তো বের হয়ে গেল।শেষ রাকাতে প্রায়ই মনে হয় যে অজু ভেঙে গেল।কিন্তু কখনই কোনো গন্ধ বা শব্দ পাই না। তাহলে এটা কি সন্দেহ হিসেবে ধরে নিবো? ইদানিং প্রায় সব নামাজেই মাঝের দিকে বা নামাজ শেষের দিকে এরকম হয়।


আরেকটা প্রশ্ন ছিল তাহলো ইসলামে সমকামীর শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।কিন্তু এটা কি বিবাহিত ও অবিবাহিত সমকামীদের জন্যে সমান শাস্তি? দলিল সহকারে জানালে ভালো হয়।


মুরতাদ, জিনাকারি, চোর, সমকামী এদের জন্য ইসলামের আলোকে নির্দিষ্ট শাস্তি আছে এবং তা রাষ্ট্র কর্তৃক দেওয়া হয়।কিন্তু যদি ইসলামী শাসনব্যবস্থা না থাকে সাধারণ মুসলিমদের পক্ষ থেকে এই শাস্তি দেওয়া কি জায়েয?অনেক যায়গায় দেখা যায় কেউ ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করলে সবাই মিলে তাকে হত্যা করে। রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়া এভাবে কাউকে হত্যা করা কি জায়েজ হবে?জানার জন্য জিজ্ঞাসা করলাম।


আত্মঘাতী বোমা হামলা কি ইসলাম সমর্থন করে?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আপনি নিশ্চয়তার উপর নির্ভর করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নামাজের মধ্যে বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যপারে নিশ্চিত হবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সন্দেহের বশে নামাজের মধ্যেই বায়ু বের হয়েছে বলা যাবে না। হাদীস শরিফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ -কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হে আল্লাহর রাসূল, যদি কোন ব্যক্তি সন্দেহ করে যে, তার নামাযে কিছু বের হয়েছে। উত্তরে তিনি বলেন, لَا يَنْصَرِفْ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا নামায ছেড়ে দিবে না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে, অথবা গন্ধ পায়। (বুখারী: ১৩৭)

*আল্লাহ তা’আলা বলেন,

وَلُوطًا إِذْ قَالَ لِقَوْمِهِ أَتَأْتُونَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنْ أَحَدٍ مِّن الْعَالَمِينَ

এবং আমি লূতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বললঃ তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি ?

إِنَّكُمْ لَتَأْتُونَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِّن دُونِ النِّسَاء بَلْ أَنتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُونَ

তোমরা তো কামবশতঃ পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।

وَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهِ إِلاَّ أَن قَالُواْ أَخْرِجُوهُم مِّن قَرْيَتِكُمْ إِنَّهُمْ أُنَاسٌ يَتَطَهَّرُونَ

তাঁর সম্প্রদায় এ ছাড়া কোন উত্তর দিল না যে, বের করে দাও এদেরকে শহর থেকে। এরা খুব সাধু থাকতে চায়।

فَأَنجَيْنَاهُ وَأَهْلَهُ إِلاَّ امْرَأَتَهُ كَانَتْ مِنَ الْغَابِرِينَ

অতঃপর আমি তাকে ও তাঁর পরিবার পরিজনকে বাঁচিয়ে দিলাম, কিন্তু তার স্ত্রী। সে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, যারা রয়ে গিয়েছিল। আমি তাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করলাম।

وَأَمْطَرْنَا عَلَيْهِم مَّطَرًا فَانظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِينَ

অতএব, দেখ গোনাহগারদের পরিণতি কেমন হয়েছে।(সূরা আরাফ-৮০--৮৪)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنهما قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( مَنْ وَجَدْتُمُوهُ يَعْمَلُ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ فَاقْتُلُوا الْفَاعِلَ وَالْمَفْعُولَ بِهِ )

যদি তোমরা সমকামী কাউকে পাও,তাহলে তাদের উভয়কে হত্যা করো(এ নির্দেশ সরকারের জন্য)

(সুনানে আবি-দাউদ-৪৪৬২,সুনানে তিরমিযি-১৪৫৬,সুনানে ইবনি মা'জা-২৫৬১)

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رضي الله عنهما أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: (لَعَنَ اللَّهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ ، لَعَنَ اللَّهُ مَنْ عَمِلَ عَمَلَ قَوْمِ لُوطٍ ، ثَلاثًا)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যারা লুত আঃ এর কওমের পথভ্রষ্টদের মত আ'মল(সমকাম) করবে,তাদের উপর আল্লাহর লা'নত।এ কথা রাসূলুল্লাহ সাঃ তিনবার বলেছেন(মসনদে আহমদ-২৯১৫)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.আপনি নিশ্চয়তার উপর নির্ভর করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নামাজের মধ্যে বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যপারে নিশ্চিত হবেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত কেবল সন্দেহের বশে নামাজের মধ্যেই বায়ু বের হয়েছে বলা যাবে না।

২.মুসলসমানদের রাষ্ট্রীয় বিধান হল, সমকামীদের হত্যা করা। সমকামীদের বিধান রাষ্ট্র বাস্তবায়ন করবে। রাষ্ট্রীয় আইন হওয়ার জন্য সয়কারের নিকট আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নেয়া যেতে পারে।

৩.কোনো মুসলমানের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে শরয়ী শাস্তি প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের কোনো সুযোগ নাই।

যেসব রাষ্ট্রে কাফেরদের সাথে মুসলমানদের যুদ্ধ চলছে। যেমন আফগানিস্তান, ইরাক, ফিলিস্তিন। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলার দ্বীনকে সমুন্নত করার উদ্দেশ্যে, সেই সাথে মুসলমানদের মাঝে জিহাদী ও শহীদী তামান্না জাগ্রত করার নিমিত্বে কাফেরদের ঘাঁটিতে অস্ত্র বা গোলা বারুদসহ প্রবেশ করা একথা জেনে যে, সেখানে গেলে তার মৃত্যু অবধারিত বা প্রায় নিশ্চিত। সেই সাথে উক্ত হামলার কারণে কাফেরদের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া নিশ্চিত বা প্রায় নিশ্চিত ধারণা থাকে, তাহলে উক্ত হামলাকারীর হামলার পদ্ধতি দু’টি হতে পারে। যথা-

১.প্রথমে শত্রু ঘাটিতে প্রবেশ করবে। তারপর সুযোগ মত নিজের থেকে গোলা বারুদ আলাদা করে শত্রুর উপর নিক্ষেপ করবে। তারপর পরিস্থিতি যা হয়, তা মেনে নিবে।

২.শত্রু ঘাটিতে নিজে প্রবেশ করে প্রথমে নিজেকে ধ্বংস করবে বোমা ফাটিয়ে। তারপর এ বিস্ফোরণ দ্বারা শত্রুর ক্ষতি হবে।

এ দুই সূরতের মাঝে প্রথমে উল্লেখিত শর্তসমূহ তথা এর দ্বারা আল্লাহর দ্বীন বুলন্দ করা মাকসাদ, সেই সাথে এর দ্বারা কাফেরদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন, মুসলিম যুবকদের মাঝে জিহাদ ও শহীদ হবার প্রতি আকাংশ জাগ্রতকরণ ইত্যাদি উদ্দেশ্য থাকার সাথে সাথে ইসলাম ও মুসলিমদের শত্রুতের রুখে দেবার আর কোন পথ ও পন্থা বাকি না থাকে তাহলে আত্মঘাতি হামলা জায়েজ আছে। এর মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তি মারা গেলে সে শরয়ী শহীদ বলেই গণ্য হবে। সেই সাথে শহীদের যত মর্যাদা কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। তার প্রতিটি মর্যাদার সে হকদার হবে ইনশাআল্লাহ।

তবে দ্বিতীয় সূরত তথা প্রথমে নিজেকে ধ্বংস করা তারপর এর দ্বারা ক্ষতি সাধন, এ পদ্ধতি বিষয়ে সরাসরি কোন বিধান কিতাবের মাঝে অধমের নজরে পড়েনি। তাই এ পদ্ধতিটিকে পরিহার করাই উচিত বলে মনে হয়।

কিন্তু যেসব রাষ্ট্রে যুদ্ধ চলছে না। বরং বিধর্মী এবং মুসলিমরা একত্র বসবাস করছে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে যেমন বাংলাদেশ এর মত যেসব রাষ্ট্রে কাফেরদের সাথে যুদ্ধ চলছে না, এসব এলাকা ও রাষ্ট্রে আত্মঘাতি হামলা কিছুতেই বৈধ নয়।

إِنَّ اللَّهَ اشْتَرَىٰ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ أَنفُسَهُمْ وَأَمْوَالَهُم بِأَنَّ لَهُمُ الْجَنَّةَ ۚ يُقَاتِلُونَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقْتُلُونَ وَيُقْتَلُونَ ۖ وَعْدًا عَلَيْهِ حَقًّا فِي التَّوْرَاةِ وَالْإِنجِيلِ وَالْقُرْآنِ ۚ وَمَنْ أَوْفَىٰ بِعَهْدِهِ مِنَ اللَّهِ ۚ فَاسْتَبْشِرُوا بِبَيْعِكُمُ الَّذِي بَايَعْتُم بِهِ ۚ وَذَٰلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ [٩:١١١

আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য। {সূরা তওবা-১১১}


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 248 views
0 votes
1 answer 608 views
...