ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
★স্বামী-স্ত্রী একজন আরেক জনের পোষাক সরূপ। তাই তারা একে অপরে পোষাকের মত মিলে
মিশে থাকবে।
■ আল্লাহ তায়ালা বলেন
-
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ
نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ
أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ
فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ
রোযার রাতে তোমাদের
স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ
এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর
তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান
করেছেন, তা আহরন কর। (সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৭)
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ مُعَاذٍ، قَالَ: قَالَ
رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا
أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ النِّسَاءَ أَنْ يَسْجُدْنَ لِأَزْوَاجِهِنَّ»
হযরত মুয়াজ রাঃ থেকে
বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যদি আমি যদি কোন ব্যক্তিকে অন্য কাউকে সেজদা করার আদেশ দিতাম, তাহলে আমি স্ত্রীদের আদেশ দিতাম তাদের স্বামীকে সেজদা দিতে। [কিন্তু সেজদা
আল্লাহ ছাড়া কাউকে দেয়া জায়েজ নয়, তাই এ আদেশ দেয়া হয়নি’।
মুসন্নাফ ইবনে আবী
শাইবা, হাদীস নং-৮৭৮৫, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৫০৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৪০, মুসনাদুল হারেস, হাদীস নং-৪৯৮,
■ অন্য এক হাদীসে এসেছে-
قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ،
يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثَةٌ لاَ
تُجَاوِزُ صَلاَتُهُمْ آذَانَهُمُ الْعَبْدُ الآبِقُ حَتَّى يَرْجِعَ وَامْرَأَةٌ
بَاتَتْ وَزَوْجُهَا عَلَيْهَا سَاخِطٌ وَإِمَامُ قَوْمٍ وَهُمْ لَهُ كَارِهُونَ
" .
আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তিন ব্যক্তির নামায তাদের কান ডিঙ্গায় না (কবূল হয়
না)। পলায়নকারী দাস যে পর্যন্ত
তার মালিকের নিকটে ফিরে না আসে; যে মহিলার স্বামী বিরাগ
নিয়ে রাত কাটায় এবং যে ইমামকে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা পছন্দ করে না। সুনানে
তিরমিযী ৩৬০
★মা-বাবাসহ সকলের মৃত্যুতে শোক পালন তিনদিন। পক্ষান্তরে
স্বামীর মৃত্যুতে শোক পালন করতে হবে ৪ মাস ১০ দিন।
■ আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ
مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ
وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا
فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে
ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার
মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই।
আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে। সূরা বাকারা, আয়াত ২৩৪
■ হাদীস শরীফে এসেছে-
ح عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أَبِي
سَلَمَةَ، قَالَتْ لَمَّا جَاءَ نَعْىُ أَبِي سُفْيَانَ مِنَ الشَّأْمِ دَعَتْ
أُمُّ حَبِيبَةَ ـ رضى الله عنها ـ بِصُفْرَةٍ فِي الْيَوْمِ الثَّالِثِ،
فَمَسَحَتْ عَارِضَيْهَا وَذِرَاعَيْهَا وَقَالَتْ إِنِّي كُنْتُ عَنْ هَذَا
لَغَنِيَّةً، لَوْلاَ أَنِّي سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ
" لاَ يَحِلُّ لاِمْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ أَنْ
تُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثٍ، إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ، فَإِنَّهَا تُحِدُّ
عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ".
যায়নাব বিন্ত আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, যখন সিরিয়া হতে আবূ সুফিয়ান (রাঃ)-এর মৃত্যুর খবর পৌছল, তার তৃতীয় দিবসে উম্মু হাবীবা (রাঃ) হলুদ বর্ণের সুগন্ধি
আনয়ন করলেন এবং তাঁর উভয় গন্ড ও বাহুতে মথিত করলেন। অতঃপর বললেন, অবশ্য আমার এর কোন প্রয়োজন ছিল না, যদি আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এ কথা
বলতে না শুনতাম যে, স্ত্রীলোক আল্লাহ্ এবং
ক্বিয়ামাতের দিবসের প্রতি ঈমান রাখে তার পক্ষে স্বামী ব্যতীত অন্য কোন মৃত
ব্যক্তির জন্য তিন দিনের বেশি শোক পালন করা বৈধ নয়। অবশ্য স্বামীর জন্য সে চার মাস
দশ দিন শোক পালন করবে। সহীহ বুখারী ১২৮০
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
বিয়ের আগে একজন মেয়ে তার পিতা-মাতার খেদমত করবে এবং বিয়ের পরে স্বামীর বাড়ীতে
থাকবে এবং স্বামীর খেদমত করবে। আর পিতা-মাতার সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং সময় সুযোগ
পেলে তাদের দেখতে আসবে। এটাই হলো ইসলামের বিধান। সুতরাং বিয়ের পরে একজন মেয়েকে তার
স্বামীকে বেশী মর্যাদা দিতে হবে এবং তার বেশী বেশী খেদমত করতে হবে। তাই মাকে খুশী
করার জন্য স্বামীর বাড়ী ছেড়ে মায়ের সাথে থাকা জায়েজ হবে না।