আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
313 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম,

আমি আজ এক সমসসার কথা বলতে চাই এবং সমাধান চাই

আলহামদুলিল্লাহ্‌ আমি বিবাহিত এবং ২৭ বছর বয়সেই নিজের বিবাহ সম্পন্ন করেছি। আমার স্ত্রীর সাথে আমার সম্পর্ক ছিল এবং করোনা কালীন সময়েই আমরা নিজেরা এই সম্পর্ককে হালাল করার নিয়তে, তউবা করে আল্লাহর নামে পরিবার কে রাজি করিয়ে বিয়ে করি, আমি চাকরি করি  কিন্তু সে লেখাপড়া করে বিধায় স্ত্রিকে তুলে আনতে পারিনি, স্ত্রিকে নিয়মিত সময় দেই আমি, ইনশাআল্লাহ অতি শীঘ্রই তুলেও আনব, কিন্তু জটিল এক সমস্যার সম্মুখিন হয়েছি, স্ত্রীর কিছু স্বপ্ন আছে, সে      আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে ভালো থাকার এবং নিজের স্বাধীনতা নিয়ে চলার, বিয়ের আরও আগে সে আমার বাবা -মার সাথে না থাকার কথা জানায়, আমি সেটায় সায় না দিলেও পরিস্থিতি এমন দাড়ায়  আমি তাকে হারানোর ভয়ে কথা দিয়ে বসি যে আমি তাকে আলাদা রাখব। এইদিকে আমার বাবা মার চট্টগ্রাম জাবার কথা ছিল, কিন্তু বর্তমান সময়ে বাবা অনেক দুর্বল হয়ে যায় , জার কারনে বাবাকে দূরে রাখা জাচ্চেহ না,আমি এক মাত্র সন্তান।

সে আমাকে অই শরতেই বিয়ে করে এবং এখন আমি এই অবস্থায় না পারছি বাবা মাকে কিছু বলতে, কারন উনারা আমাক অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন এবং আমি একমাত্র ছেলে, আবার অন্য দিকে স্ত্রী আমাকে দোষ দিচ্চেহ স্টেপ না নিতে পারার কারনে, সে তার আলাদা দুনিয়া চায় , আলাদা সংসার চায়, আমার মা বাবার সাথে তার বিরোধ নেই, সে তার পরিবারে অনেক অখুশি ছিল যার কারনে ভাবে আমার পরিবারেও এমন অবস্থায় পড়লে বাঁচা মুশকিল হয়ে যাবে, সে খুশি থাকবেনা। পরাধীন হয়ে যাবে। সে এসব দায়িত্ব নিতেই চায় না।

 বাবা মা বেপারটা জেনে গেছে এক ভাবে  , তাদের কষ্ট দিয়ে ভালো থাকা যায়না , একি বিল্ডিং এ আলাদা বাসা নিয়েও আত্নিও সজনের ভয়ে আছি। বউ উথালে কি বলবে, তাকে দোষ  দিবে, তার সম্মান নষ্ট হবে, আমাদের যে দেশ আর সমাজ

ওকে কেউ বুঝাতেও পারছেনা,তার নিজের আত্মীয় বা আমি নিজেও ।আমি কি করতে পারি, আমরা সাহায্য চাই, আল্লাহর রহমত চাই,তার বয়স কম অনেক কিছুই বুঝতে পারছেনা ,আমার ক্ষেত্রেও একি ব্যাপারটা। আমাদের জন্য দোয়া করবেন ।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ
স্ত্রীর ভরণ-পোষণ স্বামীর উপর সর্বাবস্থায় ফরযস্ত্রীর নিজের সম্পদ থাকুক বা না থাকুক।

আল্লাহ তাআলা বলেন-

 

الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ ۚ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ۚ

 

পুরুষেরা নারীদের অভিভাবকঐ (বিশেষত্বের) কারণেযার দ্বারা আল্লাহ তাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং ঐ সম্পদের কারণেযা তারা ব্যয় করেছে। সুতরাং সৎ নারীরা হল অনুগত, (স্বামীর) অবর্তমানে (নিজের সতিত্ব ও স্বামীর সম্পদ) রক্ষাকারীআল্লাহ রক্ষা করার কারণে ... -সূরা নিসা : ৩৪

 

এখানে  قَوَّامُونَ  -এর তরজমা করা হয়েছে ‘অভিভাবক’ মুফাসসিরীনের ব্যাখ্যামতে তা হচ্ছে,

 

শাসন ও ব্যবস্থায়ন এবং রক্ষা ও নিরাপত্তাবিধানের মাধ্যমে নারীর দেখভাল করা এবং আদেশ ও নিষেধের মাধ্যমে তার অবস্থার সংশোধন করাযেমন শাসকগণ প্রজাসাধারণের দেখভাল করে। তো পুরুষ হচ্ছে নারীর প্রধান ও উপরস্থ;নারীর শাসক ও সংশোধকযদি সে বেঁকে যায়।-আহকামুল কুরআনজাসসাস ২/১৮৮আহকামুল কুরআন ইবনুল আরাবী ২/৪১৬তাফসীরে কাশশাফ ১/৫০৫তাফসীরে ইবনে কাছীর ১/৪৯১

 

এই আয়াতে স্ত্রীর উপর স্বামীর অভিভাবকত্বের দুটো কারণ বলা হয়েছে : প্রথমত দৈহিক শক্তি-সামর্থ্য ও বিচার-বিচক্ষণতার মতো গুণাবলিদ্বিতীয়ত মোহরানা ও ভরণ-পোষণের জন্য ব্যয়বহন।

 

এই আয়াতে ‘পুরুষের ব্যয়কৃত সম্পদ’ মানে স্ত্রীর মোহরানাখোরপোষ ও আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচকুরআন ও সুন্নাহর বিধান অনুযায়ী যা বহন করা অবশ্যকর্তব্য। এ আয়াত প্রমাণ করেস্ত্রীর নাফাকা ও খোরপোষ স্বামীর উপর ফরয। -তাফসীর ইবনে কাছীর ১/৪৯২আহকামুল কুরআনজাসসাস ২/১৮৮

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

 

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেনতিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যেতোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

 

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

تجب السكني لها عليه في بيت خال

মর্থার্থ: স্ত্রীর জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা স্বামীর উপর আবশ্যক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াত, ১/৬০৪)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার সামর্থ্য থাকলে স্ত্রীর জন্য আলাদা বাসস্থান ব্যবস্থা করা আপনার উপর আবশ্যক। তবে যদি স্ত্রীকে বুঝিয়ে পরিবারের সাথে থাকাতে রাজী করাতে পারেন তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। আবার এই ক্ষেত্রে স্ত্রীরও উচিত হলো সামাজিক প্রথা মেনে চলার চেষ্টা করা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...