করোনা পরবর্তীসময়ে আমার ওসিডি(ওয়াসওয়াসাজনিত) সমস্যা হয়েছে৷ তাই বেশ মানসিক সমস্যায় আছি৷ আশা করি, কষ্ট করে প্রশ্নগুলার উত্তর দেবেনঃ-
১৷ হাত দিয়ে মশা মারলে যদি হাতে মশার রক্ত বা মশার দাগ লাগে, তবে কি হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে? কিংবা মশা যদি হাতে পড়ে তবে ধোয়া লাগবে? এ ব্যাপারে হাদিস থাকলে জানাবেন দয়া করে৷
২৷ আমার শুচিবায়ুজনিত সমস্যা আছে৷ এজন্য কেউ যদি আমার কোন জিনিসে হাত দেয়, তবে তা ধরতে আমি ইতস্ততবোধ করি৷ আমার মনে হয়, সেই লোক যদি নাপাক হাতে ধরে কিংবা সেটা ধরার কারণে আমার হাতও নাপাক হয়ে যায়!
এছাড়া আমার পরিবারের লোক মশা মেরে হাত ধোয় না৷ এজন্য মনে সংশয় হয়, যদি ময়লাও ঠিকমত না ধোয়৷ তারা সুইচ, রিমোট, কলম, বেসিনের হ্যান্ডেলে, এমনকি প্লেট, গ্লাসে সবসময় হাত দেয় বলে আমি এগুলো ধরলে বারবার হাত ধুয়ে ফেলি৷ মনে হয়, বাসার লোকেরা সচেতন নয়, ময়লা হাতে ধরেছে, তাই হাত পরিস্কার করা জরুরি।
কেউ আমার জিনিসে হাত দিলে, আমি সেটা মুছে ফেলবার চেষ্টা করি, সেটা ধুতে না পারলে নিজের হাত ধুয়ে ফেলি৷ অন্য কারো কোন জিনিসে এমনকি মোবাইলেও হাত দেই না, দিলেও হাত ধুয়ে ফেলি নাপাকির ভয়ে। কারণ প্রতিনিয়ত আমি হাত মুখে দি, তাই পরিস্কার থাকা জরুরি।
প্রশ্ন হচ্ছে, অন্যের হাত নাপাক থাকার কারণে কি আমার হাত ও নাপাক হবে! না এটা সম্পূর্ণ ওয়াসওয়াসা, এভাবে নাপাক হবে না? পুরোপুরি চিন্তা বাদ দেবো? পরিবার থেকে আমাকে বার বার হাত ধোয়ায় অনেক কথা বলে, অনেক পানি নষ্ট হয়। এটার জন্য অনেক সমস্যা হচ্ছে, শুধরাতে পারছি না৷
মোটকথা, দৃশ্যমান নাপাক না দেখলে সবকিছু পাক হিসেব ধরবো? আর এই ওয়াসওয়াসা দূর করতে যদি নাপাকিও লাগে তবে কি ক্ষমা হবে?
৩৷ রাতে বিছানার চাদর নাপাক হলে সকালে মশারি ওঠানোর সময়, প্রায় নাপাক জায়গার ওপর মশারি পড়ে৷ ততক্ষণে তো নাপাক শুকিয়ে যাবার কথা৷ তাহলেও কি মশারি নাপাক হবে? এজন্য আমি প্রতিদিন মশারি টানানো আর ওঠানোর পর হাত ধুয়ে ফেলি৷ এটার কি দরকার আছে?
এমনকি মশারিতে হাত দেবার পরে জানালা খুলে দি৷ তাই জানালায় হাত দিলেও হাত ধুয়ে ফেলি, এটার কি প্রয়োজনীয়তা আছে? আর জানালা দিয়ে অনেক টিকটিকি যাওয়া আসা করে৷ মশারি আর জানালা নাপাক হয়ে আছে কিনা জানাবেন৷
৪৷ আমি বাথরুমে প্রসাব করবার পরে প্যানে পানি ঢেলে দি৷ এরপর টিস্যু দিয়ে অনেক সময় নিয়ে ব্যবহার করি৷ এরপর পানি দিয়ে খুব সাবধানে গোপনাংগ ধুয়ে ফেলি৷ তবে পানি দিয়ে সাবধানে ধুলেও প্রায় এক-দু ফোটা পানি প্যানে পড়ে ছিটে লাগে৷ এটা প্রসাব নয়, টিস্যু ব্যবহারের পর গোপনাংগ ধোবার সময়কার পানি৷ এটা কি নাপাক হবে? শরীর ধুয়ে দিতে হবে? আবার টয়লেটে গেলে অনেক মশা শরীরের পিছনে বসে, তাই মশা না পানির ছিটা বোঝা মুশকিল। আবার পিছন অংশে ধোয়া সম্ভব হয় না, অনেক পানি লাগে৷
৫৷ বেসিনে অনেক সময় ময়লা হাত ধুই৷ এরপরে হাত ধুতে গেলে প্রায় বেসিনের এক-দুই ফোটা পানি ছুটে গায়ে লাগে৷ হাতে লাগলে ধোয়া যায়, শরীরে লাগলে ধোয়া সম্ভব নয়৷ কিংবা পানি কনুইতে লাগলে ধুতে গেলে অন্য জায়গায় পানি ছিটে লাগে বা বেসিনের পরে হাতের অন্য অংশ পড়ে৷ এর ফলে অনেক পানি নষ্ট হয়৷ তাই জানতে চাই, বেসিনের পানি ছিটে লাগলে কি তা ধোয়ার প্রয়োজন আছে?