আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
115 views
in পবিত্রতা (Purity) by (48 points)
reshown by
করোনা পরবর্তীসময়ে আমার ওসিডি(ওয়াসওয়াসাজনিত) সমস্যা হয়েছে৷ তাই বেশ মানসিক সমস্যায় আছি৷ আশা করি, কষ্ট করে প্রশ্নগুলার উত্তর দেবেনঃ-

১৷ হাত দিয়ে মশা মারলে যদি হাতে মশার রক্ত বা মশার দাগ লাগে, তবে কি হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা আছে? কিংবা মশা যদি হাতে পড়ে তবে ধোয়া লাগবে? এ ব্যাপারে হাদিস থাকলে জানাবেন দয়া করে৷
২৷ আমার শুচিবায়ুজনিত সমস্যা আছে৷ এজন্য কেউ যদি আমার কোন জিনিসে হাত দেয়, তবে তা ধরতে আমি ইতস্ততবোধ করি৷ আমার মনে হয়, সেই লোক যদি নাপাক হাতে ধরে কিংবা সেটা ধরার কারণে আমার হাতও নাপাক হয়ে যায়!

এছাড়া আমার পরিবারের লোক মশা মেরে হাত ধোয় না৷ এজন্য মনে সংশয় হয়, যদি ময়লাও ঠিকমত না ধোয়৷ তারা সুইচ, রিমোট, কলম, বেসিনের হ্যান্ডেলে, এমনকি প্লেট, গ্লাসে সবসময় হাত দেয় বলে আমি এগুলো ধরলে বারবার হাত ধুয়ে ফেলি৷ মনে হয়, বাসার লোকেরা সচেতন নয়, ময়লা হাতে ধরেছে, তাই হাত পরিস্কার করা জরুরি।

কেউ আমার জিনিসে হাত দিলে, আমি সেটা মুছে ফেলবার চেষ্টা করি, সেটা ধুতে না পারলে নিজের হাত ধুয়ে ফেলি৷ অন্য কারো কোন জিনিসে এমনকি মোবাইলেও হাত দেই না, দিলেও হাত ধুয়ে ফেলি নাপাকির ভয়ে। কারণ প্রতিনিয়ত আমি হাত মুখে দি, তাই পরিস্কার থাকা জরুরি।
প্রশ্ন হচ্ছে, অন্যের হাত নাপাক থাকার কারণে কি আমার হাত ও নাপাক হবে! না এটা সম্পূর্ণ ওয়াসওয়াসা, এভাবে নাপাক হবে না? পুরোপুরি চিন্তা বাদ দেবো? পরিবার থেকে আমাকে বার বার হাত ধোয়ায় অনেক কথা বলে, অনেক পানি নষ্ট হয়। এটার জন্য অনেক সমস্যা হচ্ছে, শুধরাতে পারছি না৷

মোটকথা, দৃশ্যমান নাপাক না দেখলে সবকিছু পাক হিসেব ধরবো? আর এই ওয়াসওয়াসা দূর করতে যদি নাপাকিও লাগে তবে কি ক্ষমা হবে?

৩৷ রাতে বিছানার চাদর নাপাক হলে সকালে মশারি ওঠানোর সময়, প্রায় নাপাক জায়গার ওপর মশারি পড়ে৷ ততক্ষণে তো নাপাক শুকিয়ে যাবার কথা৷ তাহলেও কি মশারি নাপাক হবে? এজন্য আমি প্রতিদিন মশারি টানানো আর ওঠানোর পর হাত ধুয়ে ফেলি৷ এটার কি দরকার আছে?
এমনকি মশারিতে হাত দেবার পরে জানালা খুলে দি৷ তাই জানালায় হাত দিলেও হাত ধুয়ে ফেলি, এটার কি প্রয়োজনীয়তা আছে? আর জানালা দিয়ে অনেক টিকটিকি যাওয়া আসা করে৷ মশারি আর জানালা নাপাক হয়ে আছে কিনা জানাবেন৷
৪৷ আমি বাথরুমে প্রসাব করবার পরে প্যানে পানি ঢেলে দি৷ এরপর টিস্যু দিয়ে অনেক সময় নিয়ে ব্যবহার করি৷ এরপর পানি দিয়ে খুব সাবধানে গোপনাংগ ধুয়ে ফেলি৷ তবে পানি দিয়ে সাবধানে ধুলেও প্রায় এক-দু ফোটা পানি প্যানে পড়ে ছিটে লাগে৷ এটা প্রসাব নয়, টিস্যু ব্যবহারের পর গোপনাংগ ধোবার সময়কার পানি৷ এটা কি নাপাক হবে? শরীর ধুয়ে দিতে হবে? আবার টয়লেটে গেলে অনেক মশা শরীরের পিছনে বসে, তাই মশা না পানির ছিটা বোঝা মুশকিল। আবার পিছন অংশে ধোয়া সম্ভব হয় না, অনেক পানি লাগে৷
৫৷ বেসিনে অনেক সময় ময়লা হাত ধুই৷ এরপরে হাত ধুতে গেলে প্রায় বেসিনের এক-দুই ফোটা পানি ছুটে গায়ে লাগে৷ হাতে লাগলে ধোয়া যায়, শরীরে লাগলে ধোয়া সম্ভব নয়৷ কিংবা পানি কনুইতে লাগলে ধুতে গেলে অন্য জায়গায় পানি ছিটে লাগে বা বেসিনের পরে হাতের অন্য অংশ পড়ে৷ এর ফলে অনেক পানি নষ্ট হয়৷ তাই জানতে চাই, বেসিনের পানি ছিটে লাগলে কি তা ধোয়ার প্রয়োজন আছে?

1 Answer

0 votes
by (708,320 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/4707 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
মশা বা মাছিতে কোনো প্রকার নাপাকি লেগে না থাকলে উক্ত মশা বা মাছি নাপাক নয়।এবং মশা বা মাছির রক্তও নাপাক নয়। তাই কাপড়ে মশা বা মাছির কিংবা মশার রক্ত লেগে থাকলে ঐ কাপড় পরে নামায পড়া যাবে।
হাসান বসরী, আতা, আবু জাফর, উরওয়া প্রমুখ তাবেয়ীগণ থেকে বর্ণিত আছে যে, কাপড়ে মাছি-মশার রক্ত লাগলে কোনো সমস্যা হবে না। তবে এক্ষেত্রে গেঞ্জি পরিবর্তন করে নেওয়া বা ধুয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া যে ভালো তা তো স্পষ্ট। 
(মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২০৩১, ২০৩২, ২০৩৩; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৪৩২; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৯৫; আলবাহরুর রায়েক ১/২২৯)

(২)
https://www.ifatwa.info/1379 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...
অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।
আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।
(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)

এরকম শয়তানি প্ররোচনা থেকে বাচতে হলে, রাসূলুল্লাহ সাঃ এর বিধিনিষেধকে আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে হবে।সাথে সাথে ঐ চিন্তা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে হবে।এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাওয়া সহ আল্লাহর যিকিরে নিজেকে ব্যস্ত করে রাখতে পারলেই তবে এরকম শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেবে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব।(আল-মিনহাজ-২/১৫৫-১৫৬)

(৩)
এভাবে হাত ধৌত করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
(৪)
এগুলো চিন্তা করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
এভাবে শরীর নাপাক হবে না।
(৫)
না ধৌত করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...