আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
427 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)

১। একজন দ্বীন পালনে সচেষ্ট মেয়ে অনেকদিন থেকে বিয়ের জন্য মা পরিবারকে ইঙ্গিতে বলেছিল, বিয়ে হয়নি। এক বান্ধবীর মাধ্যমে প্রাপ্ত বিয়ের একটা প্রস্তাবের বিষয়টি পরিবারকে জানায়। পরিবার প্রাথমিক অনুমতি দেয় এবং এ পাত্রের সাথে কথা বলে দেখবে কিনা জিজ্ঞেস করলে বাবা কথা বলার অনুমতি দেয়। উনার সাথে কথা বলে ভালো লাগতে থাকে অপরদিকে পরিবার থেকে বিয়েটার অগ্রগতি দেরি হচ্ছিল দেখে, ফিতনা থেকে বাঁচতে পরিচয়ের ২/৩ সপ্তাহের মধ্যেই নিজে থেকে (আলেমের সাথে কথা বলে এই বিয়ে বৈধ জেনে) সাক্ষীর উপস্থিতিতে কাবিননামা ছাড়াই বিয়ে করে। উনি ভেবেছিলেন যেহেতু বাবা প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে পরে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।

২। কিছুদিন পর বিয়ের ডকুমেন্ট রাখার জন্য তারা কাজী অফিসে কাবিননামাসহ বিয়ে করে।‌ পরবর্তীতে বাবার অনুমতিতে পারিবারিকভাবে আবার বিয়ে হয়। 

৩। পারিবারিক বিয়ের কাবিননামায় ১৮ নং কলামে তালাকে তৌফিজ এর অনুমতি দেয়া ছিল। আপনি কি তালাক-ই-তৌফিজের অনুমতি দেন, দিলে কি শর্তে ? এরকম প্রশ্নের উত্তরে লেখা ছিল "হ্যা, শরীয়তের শর্তানুযায়ী"।‌ পূর্বের করা কাবিননামায় কি লেখা ছিল সেটা মনে নেই।

 

৪। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে স্বামীর প্রচন্ড মানসিক অত্যাচার, ভরণপোষণ ঠিক মত না দেয়া, বহুবার বহুদিনের জন্য আলাদা ও কথা না বলে থাকা এবং অনেক দিনের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সম্পর্ক উন্নতি না হওয়ার পর ছাড়াছাড়ির প্রসঙ্গ আসে। স্বামী দ্বীনদারীতার বিষয়ে আগে সচেষ্ট থাকলেও পরে নামাজ না পড়া এবং এ সকল বিষয়ে স্ত্রী তাকে রিমাইন্ডার দিলে তার সাথে খারাপ আচরণ এবং হালকা ভাবে মারতে আসা বা মারা এসকল কারণে স্ত্রীও উনার সাথে আর সংসার করার আগ্রহ রাখে না। পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিটমাটের চেষ্টা করে লাভ হয়নি। প্রথমে স্বামী তালাকের নোটিশ পাঠিয়ে দিবে বলে জানায়। পরবর্তীতে স্বামী জানায় সে নোটিশ পাঠাবে না, স্ত্রী যেন তাকে নোটিশ পাঠিয়ে দেয়। 

৫। এই পরিস্থিতিতে এবং কাবিননামায় উল্লেখিত অনুমতির ভিত্তিতে কিছুদিন পর স্ত্রী তালাক নোটিশ পাঠায়। সেখানে উল্লেখ ছিল "বিবাহর পর হইতে স্বামী কর্তৃক কাবিননামার শর্তাদি বরখেলাপহেতু তালাকে তৌফিজ দেবার ক্ষমতা বলে আমি অপারগ ও নিরুপায় হইয়া অদ্য নিজেই নিজের নফসের উপর তালাকে বায়েন গ্রহণ করিলাম"। 

জিজ্ঞাস্য বিষয়ঃ

ক। যেহেতু কাবিননামার ১৮ নং কলামে শর্ত হিসেবে 'ভরণপোষণ না দেয়া' বা 'শারীরিক মানসিক অত্যাচার করা' এরকম কোন কিছু নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ না করে "শরীয়তের শর্ত অনুযায়ী" এই কথা লেখা আছে, এর ভিত্তিতে তালাক কি সঠিক হয়েছে? (দয়া করে প্যারা ৩ ও ৫ দেখুন)

খ। পূর্বের নিজে করা বিবাহ বা পূর্বে নিজেদের করা কাবিননামা সেগুলোর কী কোনো ইফেক্ট এখানে থাকবে?*

গ। প্যারা ৫ এ উল্লেখিত "বিবাহর পর হইতে স্বামী কর্তৃক.... " এই কথাটা কি ঠিক আছে? বিবাহর পর থেকেই তো খারাপ আচরণ করেনি কিছুদিন পর থেকে করছে বা মাঝে মাঝে করেছে! তাছাড়া এখানে উল্লেখিত "তালাকে বায়েন" কি ঠিক আছে? এই ধরণের তালাকে কি ২য় বা ৩য় তালাক উল্লেখ করার বা মৌখিক ভাবে বলার প্রয়োজনীয়তা আছে , সাধারণ তালাকের মতো?

গ। এই তালাক কি সঠিক হয়েছে?  না হলে, তালাক সঠিক করার কি উপায়?একটা জায়গায় দেখলাম খোলা তালাকে ১ হায়েজ পরিমাণ ইদ্দত করলেই হয়। তালাকে তৌফিজও তো খোলার মতো ফিরিয়ে নেয়া যায় না এমন তালাক। এক্ষেত্রে ইদ্দত কতদিন হবে?

ঘ। এই তালাকে কি খোলা তালাকের মত মোহর ফেরত দিতে হবে?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনার প্রশ্ন থেকে আমরা যা বুঝেছি সেই আলোকে বলছি,
আপনাদের তালাক হয়ে গেছে।তালাকে বায়েন হয়েছে।যেহেতু আপনার স্বামী আপনাকে তালাকের পূর্ণ অধিকার দিয়েছে, এবং আপনিও নিজের উপর তালাক গ্রহণ করেছেন,তাই শরীয়তের ব্যখ্যা ও নিয়ম অনুযায়ী আপনার উপর তালাক পতিত হয়ে গেছে। আপনি তালাক দেয়ার সময় যেহেতু সংখ্যা উল্লেখ করেননি,তাই এক তালাকে বায়েন পতিত হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
(ক)
কাবিননামার ১৮ নং কলামে শর্ত হিসেবে 'ভরণপোষণ না দেয়া' বা 'শারীরিক মানসিক অত্যাচার করা' এরকম কোন কিছু নির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ না করে "শরীয়তের শর্ত অনুযায়ী" এই কথা লেখা আছে, এর ভিত্তিতে তালাক দেয়া হয়েছে।

এভাবে তালাক দিলেও হবে,কেননা শরীয়তের শর্ত বলতে এগুলোই।তাছাড়া সে তো তালাকের নোটিশ প্রেরণের কথা আপনাকে বলেছে।

(খ)
পূর্বের বিয়েতে এগুলো না থাকলেও সমস্যা নাই, কেননা স্বামী তো পরবর্তীতে অনুমোদন দিয়ে দিছে।

(গ) 
সবগুলোই ঠিক আছে।কেননা সে তো আপনাকে অনুমোদন দিয়ে দিছে।
তালাকে বায়েন বললেও তালাক হবে।এক দুই বলার প্রয়োজনিয়তা আপাতত নাই।মৌখিক ভাবে বলারও কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।

(ঘ) এটা খুলা তালাক না।সুতরাং মহর ফিরিয়ে দিতে হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (590,550 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (1 point)
জাযাকাল্লাহ খায়ের ভাই। আপনার সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থাটা দয়া করে বলবেন? আপনার ইমেইল এড্রেস টা দিলে ভালো হয়। অথবা আমার ইমেইল এড্রেসে দয়া করে একটা যদি নক দিতেন।
by (590,550 points)
01717917686 এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।জাযাকাল্লাহ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...