আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
537 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by

আমি ঢাকা ভার্সিটি থেকে সংস্কৃত বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করলাম, এখন মাস্টার্স করবো, সংস্কৃত একটি প্রাচীন ইন্দো ইউরোপীয় আর্য ভাষা, হিন্দু শাস্ত্রের এই সংস্কৃত ভাষায় রচিত। আমাদের পাঠ্য ছিল রামায়ণ, মহাভারত, গীতা, বেদ সহ অন্যান্য প্রাচীন হিন্দু গ্রন্থ সমূহ। একজন মুসলমান স্টুডেন্ট হয়ে ভার্সিটিতে এসব ক্লাস লেকচার শুনতে, এবং সেইসব বিষয়াবলী পড়ে এক্সাম দেওয়াটা রীতিমত একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি হয়ে দাড়িয়েছে। আমি জানতে চাই এটা কী আমার জন্য নন বেনিফিটেড ইলম হিসেবে গ্রহীত হবে??? আমার এটা জানা গুরুতর প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

1 Answer

+1 vote
by (575 points)

বোন. আপনার প্রশ্নটির জবাবে আমাকে দুটি পয়েন্টের আলোকে উত্তর প্রদান করতে হবে: ১. ইসলাম কি ভাষা শিখার অনুমতি প্রদান করে? ২, অন্যান্য ধর্মের পুস্তক স্টাডি করা প্রসঙ্গে ইসলামের মূলনীতি কী?
প্রথম প্রশ্নটি প্রসঙ্গ: ভাষা হলো আল্লাহ তাআলার নেয়ামাত সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি নেয়ামত। মহাগ্রন্হ আল কুরআনের (সুরা রুম আয়াত নং ২২) আল্লাহ তা. নেয়ামাত হিসাবে অভিহিত করেছেন। এবং হাদীসে রাসূল সা. ভাষা শিখার প্রতি তাঁর সাহাবাদেরকে উদ্ধুদ্ধও করেছিলেন, বিশেষ করে ‘বিদেশী ভাষা’শিখার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‍মুসনাদে আহমাদের রেওয়ায়াতেে উল্লেখ হয়েছে, রাসূল সা. সুরইয়ানী ভাষা শিখার জন্য যায়েদ বিন সাবেতকে আদেশ করলে, তিনি মাত্র ১৭ দিনে তা শিখে নিয়েছিলেন।অবশ্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্র এসব প্রেক্ষাপট ছিলো ইসলাম প্রচারের প্রয়োজনে।(মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং: ২১৬২৭)
২. প্রশ্নের দ্বিতীয় বিষয় হলো, অন্যান্য ধর্মের পুস্তক অধ্যয়ন করা প্রসঙ্গে, আল্লাহ তাআলা মহাগ্রন্থ আল কুরআন কে চুড়ান্ত আসমানী গ্রন্থ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। এবং ইসলামকে কেয়ামাত পর্যন্ত মানবজাতীর ধর্ম হিসাবে সিলেক্ট করেছেন। তাই্ আল-ক্বুরআনের উপস্থিতিতে অন্যান্য মানুষের বানানো ধর্ম এর গ্রন্থ কিভাবে আমাদের স্টাডিতে স্থান লাভ করতে পারে!!! আল্লাহ কুরআনে বহুবার কুরআনকে ‘ফুরকান’ বলে নামকরণ করেছেন, যার অর্থ হলো সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারী, এবং অন্যান্য ধর্মীয় গ্রন্থের সংরক্ষক বলেও ইরশাদ করেছেন, তাই সবগুলি গ্রন্থের ভালো দিকগুলির একক একটি পুস্তক হলো আল কোরআন। বুখারী শরীফের রেওয়ায়াতে এসেছে, হযরত ওমার রাযি. অন্য ধর্মের একটি পৃষ্টা নিয়ে রাসূলূল্লাহ সা. এর সামনে উপস্থাপন করলে ক্রোধে রাসুলের চেহারা মোবারক লাল হয়ে যায়। তবে অন্যান্য ধর্ম স্টাডি প্রসঙ্গে একটি সুন্দর মূলনীতি দিয়েছেন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে হাজার রাহি. অমুসলিম কর্তৃক ইসলামের উপর আরোপিত প্রশ্নের জবাব, অথবা কুরআন-হাদীসের পাশাপাশি অমুসলিম দেরকে তাদের গ্রন্থ দিয়ে ইসলামের দাওয়াত এসব প্রেক্ষাপটে- অন্যান্য ধর্ম স্টাডি করা জায়েয ও প্রশংসনীয়। সাহাবাদের মাঝেও কেউ কেউ অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখতেন।তবে দুর্বল ইমান ওয়ালা ব্যক্তির জন্য সর্বাবস্থায় তা হারাম।
এবার আপনার মূল প্রশ্নে আসি . বেদ, রামায়ন ইত্যাদি অধ্যয়ন করত তার এক্সাম দেওয়া প্রসঙ্গে: সর্বপ্রথম একজন অমুসলিম বা হিন্দুকে আপনি ইসলামের সৌন্দয্য তুলনা করতে পারেন তাদের গ্রন্থীয় বিশ্বাষ বিপরীতে’ এ রকম নিয়ত করে আজই নিজেকে প্রস্তুত করুন। আমি বা আমরা নিজেও অন্যান্য ধর্মের পুস্তক অধ্যয়ন করি এবং করাই, শুধুমাত্র দাওয়াহ এর জন্য। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি ইসলামের মৌলিক আক্বিদা-বিশ্বাষ সম্পর্কে ধারণা রাখা জরুরী।আর (আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন) যদি আপনার নিজ বিশ্বাষের কোন ত্রুটি বা ইমানের ভিতকে দুর্বল হওয়ার কোন সম্ভাবনা দেখা দেয়, তাহলে আপনার জন্য তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ওয়াজিব। আর উপরোক্ত হাদীসে রাসূল সা. রাগ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সামগ্রিকভাবে নিষেধাজ্ঞা প্রমাণ বহন করে না।(আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন)
উত্তর প্রদানে:
আরিফুল ইসলাম
ফিক্বহ ডি.: ইসলামিক অনলাইন মাদ্রাসা

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...