আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
474 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
মনেকরি , একটি প্রতিষ্ঠান এমন এক ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো যেখানে শুধু এক হাজার জন মানুষকে একশত টাকা করে দিবে । কিন্তু এই এক হাজার জনকে তারা সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের মধ্যে লটারি করে নির্বাচন করলো এবং এ লটারির জন্য কারো নিকট থেকে কোনো অর্থ গ্রহন করলো না  । এখন এই এক হাজার জন যে একশত টাকা করে পেল তা কি হালাল হবে [ এখানে উল্লেখ্য যে এখানে কারো আর্থিক ক্ষতি হয় নি ] ?
আবার , অনেক কুইজ প্রতিযোগিতায় কিংবা অন্য কোনো প্রতিযোগিতায় যেখানে একই নম্বর প্রাপ্ত বা একই ধরনের কার্য সম্পাদন করেছে এমন প্রতিযোগিদের বা অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে প্রথম স্থান নির্নয়ের জন্য লটারি করা হয় , এই ধরনের প্রতিযোগিতা থেকে প্রাপ্ত অর্থ বা পুরষ্কার গ্রহন করা হারাম নাকি হালাল ?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/1505 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ক্ষেত্র বিশেষে লটারী বৈধ রয়েছে।সব রকম লটারী হারামের অন্তর্ভুক্ত না।বরং ঐ সমস্ত লটারী-ই হারাম যা দ্বারা কোনো হক্ব বা যোগ্যতা অথবা মালিকানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। কিন্তু যদি পূর্ব থেকেই হক্ব বা অধিকার প্রতিষ্টিত থাকে।কিন্তু উভয় সমান সমান হওয়ার ধরুণ কাউকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাচ্ছেনা।এমতাবস্তায় একজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে তাকে নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ প্রকার লটারী বৈধ রয়েছে ।যা কোরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমনঃ- আল্লাহ তা'আলার বানী, 
َ ﻭَﻣَﺎ ﻛُﻨﺖَ ﻟَﺪَﻳْﻬِﻢْ ﺇِﺫْ ﻳُﻠْﻘُﻮﻥ ﺃَﻗْﻼَﻣَﻬُﻢْ ﺃَﻳُّﻬُﻢْ ﻳَﻜْﻔُﻞُ ﻣَﺮْﻳَﻢَ ﻭَﻣَﺎ ﻛُﻨﺖَ ﻟَﺪَﻳْﻬِﻢْ ﺇِﺫْ ﻳَﺨْﺘَﺼِﻤُﻮﻥَ
"আপনি তখন তাদের কাছে উপস্থিত ছিলেন না। যখন তারা লটারীর মাধ্যমে প্রতিযোগিতা করছিল যে, কে মারইয়ামকে প্রতিপালন করবে। এবং আপনি তাদের কাছে ছিলেন না, যখন তারা এ নিয়ে ঝগড়া করছিলো।"(সূরা-আলে ইমরান-৪৪)

মারয়ামের পিতা না থাকার ধরুণ সবাই মারয়ামকে লালন-পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলো।তাদের মধ্য থেকে একেকজন একেক আঙ্গিকে নিজেকে লালনপালনের অগ্রাধিকারী ধাবী করছিলো।
যেহেতু তাদের সবার মধ্যে লালন-পালনের যোগ্যতা ও অধিকার প্রায় সামন সমান ছিলো।তাই লটারীর মাধ্যমে যাকারিয়া (আঃ)কে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছিলো। এখানে লালন-পালনের হক্বকে প্রমাণিত করা হচ্ছেনা।বরং লটারির মাধ্যমে ঝগড়াকে নিরসন করা হচ্ছিলো।

হাদীস শরীফে এসেছে,হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, 
عَنْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ( ﻛَﺎﻥَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺭَﺍﺩَ ﺳَﻔَﺮًﺍ ﺃَﻗْﺮَﻉَ ﺑَﻴْﻦَ ﻧِﺴَﺎﺋِﻪِ ، ﻓَﺄَﻳَّﺘُﻬُﻦَّ ﺧَﺮَﺝَ ﺳَﻬْﻤُﻬَﺎ ﺧَﺮَﺝَ ﺑِﻬَﺎ ﻣَﻌَﻪُ ) . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ( 2454 ) ﻭﻣﺴﻠﻢ ( 2770 ) .
নবীজী সাঃ যখনই সফরের ইচ্ছা করতেন,তখন সমস্ত বিবিগণের মধ্যে লটারী দিতেন, লটারীতে যার নাম উঠে আসত,তাকে নিয়েই সফরে বের হতেন।(সহীহ বুখারী -২৪৫৪,সহীহ মুসলীম-২৭৭০)

এখানেও নবীজী সাঃ এর সাথে সফরের অধিকার নিয়ে লটারী হচ্ছিল না। কেননা স্বামী সফরকালীন সময়ে স্ত্রীদের কোনো অধিকার নেই।যে কেউ যেতে পারবে।এখন লটারীর মাধ্যমে একজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।এরকম লটারী ইসলামী শরীয়তে বৈধ রয়েছে। 

ইমাম নববী রাহ বলেন 
  ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻹﻗﺮﺍﻉ ﻋﻨﺪﻧﺎ ﻭﺍﺟﺐ
এরকম স্থানে লটারী আমাদের দৃষ্টিতে ওয়াজিব।(আল-মিনহাজ-১৫/২১০)

★সু-প্রিয় পাঠকবৃন্দ!
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম,লটারী সর্বক্ষেত্রে নিষিদ্ধ নয়,বরং ক্ষেত্র বিশেষে বৈধও রয়েছে।

সুতরাং প্রশ্নে বর্ণিত সূরতে লটারি নাজায়েয হবে না।



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...