আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
525 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (30 points)
edited by
السلام عليكم ورحمة الله وبركاته.

আমাকে এক ব্যক্তি "আল্লাহর দোহাই" দিয়ে দুপুরের পর ঘুমাতে বলেছেন। অনেকটা এভাবে, "আল্লাহর দোহাই দিচ্ছি,তুমি দুপুরের পর ঘুমাবে" (এখানে,প্রতিদিনের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে।)
আমার দুপুরের পর অনেক ছোটবেলা থেকেই ঘুম আসেনা। এটা সেই ব্যক্তিও জানে। বরং এই চেষ্টা করতে গেলে, সময়গুলো এমনি এমনি চলে যায়। সেজন্য আমি তখন অন্য কোনো কাজ করি। কিন্তু সে এভাবে বলাতে আমার খারাপ লেগে যায় এবং অনেকটা এভাবে জবাব দিয়েছি যে, "আমাকে কেনো কসম দিবেন? প্রয়োজন হলে নিজের জন্য নিজে কসম করবেন। আপনার কসম আপনি রাখুন, আমি পারবো না।"

১। (ক) এভাবে কোনো ব্যক্তি অন্য কাউকে "আল্লাহর দোহাই/কসম" দিয়ে কিছু করতে বললে সেটা কি কসম হবে?
(খ) এবং অপর ব্যক্তিটির জন্য পালন করা কি ওয়াজিব হয়ে যাবে? অর্থাৎ, আমাকে যে "আল্লাহর দোহাই" দিয়ে কাজটি করতে বলা হলো,এটা কি আমার পালন করতেই হবে?
(গ) "আমি পারবো না" বলার পরেও কি আমার উপর কসম ওয়াজিব হয়েছে? মানে কসম আদায় করতে হবে?

২। যদি এটা কসম হয়ে থাকে তাহলে আমি যদি এই কাজ না করি তাহলে কে কাফফারা আদায় করবে? সেই ব্যক্তি নাকি আমি নাকি দুজনের ই কাফফারা আদায় করতে হবে?
৩। যদি কসম হয়ে থাকে তাহলে, আমি যদি উনার কথামতো কয়েকমিনিট শুয়ে থেকে ঘুমানোর চেষ্টা করি, কিন্তু ঘুম না আসে, তারপর উঠে কোনো ভালো কাজে নিয়োজিত থাকার চেষ্টা করি, তাহলেও কি কসম ভঙ্গ হবে?

৪। বাবা-মা অনেক সময় এমন কাজ করতে বলেন,যেটা জায়েজ কিন্তু সুন্নাহ বিরোধী। অথবা, অনেক নেক আমল ছুটে যায় বা বাধাপ্রাপ্ত হয় এমন। কিন্তু যদি দ্বীন পালনের নিয়তে উনাদের কথা না শুনে সেই নেক আমল করার চেষ্টা করি (তাদের সাথে মন্দ আচরণ না করে) তাহলে কি গুণাহ হবে?
(যেহেতু, মৃত্যু যেকোনো সময় আসতে পারে এবং আমার আমলনামা তো আমাকেই দেয়া হবে।)
কিছু উদাহরণ দেই-
★জায়েজ কাজ- ফজরের পর ঘুমাতে বলেন।
~কিন্তু
*ওই সময়টা নিরিবিলি ও বরকতপূর্ণ হওয়াতে যেকোনো আমল মনোযোগ সহকারে করা যায়, আল্লাহ তা'আলা চাইলে।
*সকাল-সন্ধ্যার যিকির মিস হওয়া।(করতে পারলেও অল্প কয়েকটা করা যায়। অথচ,এটা আমার জন্য খুব ই প্রয়োজন।)
*দুহার স্বলাত মিস। (ঘুম থেকে উঠার পরেও করা যায়, কিন্তু সকালে ঘুমালে নিজের মধ্যে আলসেমী আসে অনেক।) ইত্যাদি।
★জায়েজ কাজ-ফোন বেশি ব্যবহার করতে মানা করেন।
~কিন্তু
আমার দ্বীনি পড়ালেখা অনলাইন বেইসড। যার কারণে আমাকে অনলাইনে সময় দিতে হচ্ছে। আমার ইসলামিক বই তেমন না থাকাতে ও অনলাইনের দ্বীনি কোর্সের জন্য বেশিরভাগ সময় পিডিএফ পড়তে হয় বা অনলাইনে ক্লাস এটেন্ড করতে হয়। ফোনটা এজন্যই আরো বেশি ইউজ করা হয়।
এইরকম আরো কিছু।
(আমি বুঝতে পারি,আমার বাবা-মা আমার ভালো চান এবং তারা ভালো মানুষও,মাশাআল্লাহ! কিন্তু আমি যেই কাজগুলা করতে চাচ্ছি সেগুলা তো দুনিয়া ও আখিরাতের কথা ভেবে করতে চাই,এতে তাদের তো সমস্যা হচ্ছেনা,বরঞ্চ আল্লাহ চাইলে আমার লাভ হবে। আর এই আমলগুলো+আরো কিছু আমলে আমি অভ্যস্ত হতে চাই,তবে এখনো হতে পারিনি। কিন্তু হওয়াটা খুবই প্রয়োজন। আল্লাহ তাওফিক্ব দিলে পারবো। ইনশাআল্লাহ। এইরকম আরো কিছু ব্যাপার বুঝিয়েছি, যেগুলোতে তাদের হক্ব নষ্ট হচ্ছেনা, বরং আল্লাহ চাইলে আমার জন্য ভালো হবে।)

এত দীর্ঘ আলোচনার জন্য মাফ করবেন শাইখ!

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/  নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
(১)
(ক) কোনো ব্যক্তি অন্য কাউকে "আল্লাহর দোহাই/কসম" দিয়ে কিছু করতে বললে সেটা কসম হবে না। 
(খ) অপর ব্যক্তিটির জন্য উক্ত কাজ আঞ্জাম দেয়া /আদেশ  পালন করা ওয়াজিব হবে না। হ্যা, যেহেতু আল্লাহর নাম নিয়ে বলা হচ্ছে, তাই সম্ভব হলে কাজটি সম্পাদন করাই উচিৎ।
(গ)  "আমি পারবো না"  আপনি এভাবে বলুন আর নাই বলুন, আপনার জন্য কখনো কসম হবে না। 

(২) আপনার জন্য এটা কসম হবে না। 

(৩) আপনার জন্য যেহেতু কসম হবে না, তাই আপনার জন্য উক্ত কাজ আঞ্জাম দেওয়াও ওয়াজিব হবে না। 
(৪)
https://www.ifatwa.info/1722 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
গোনাহের কাজ ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত কাজে মাতাপিতার বিধি-নিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)

যে সমস্ত বিষয় মাতাপিতার ফায়দাদায়ক এবং সন্তানের জন্য ক্ষতিকর নয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতার অনুসরণ ওয়াজিব।যদি মাতাপিতা জন্য ফায়দাদায়ক না হয় বা সন্তানের জন্য ক্ষতিকর হয়,সে সমস্ত বিষয়ে মাতাপিতা আদেশ নিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ 'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,
" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।
এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না।কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(২৮/৩২৭) (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার মাতাপিতা যদি শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজের আদেশ দেন, তাহলে আপনার জন্য ঐ সমস্ত কাজ করা জায়েয হবে না। আর যদি শরীয়ত বিরোধী না হয়, তাহলে আপনার কোনো ক্ষতি না হলে আপনি মানতে বাধ্য। বিশেষ করে যদি তাদের কোনো লাভ থাকে। কিন্তু যদি তাদের কোনো লাভ না থাকে, এবং আপনার মনের সাথে মিল না হয়, তাহলে তখন তাদের বিধি নিষেধ মান্য করাও ওয়াজিব নয়। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1707


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,140 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...