بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলাম ঋণ
দেওয়াকে যেমন লোকের সাহায্য তথা তাদের কষ্ট
দূরীকরণ হিসাবে স্বীকার করে, তেমন ঋণ পরিশোধে উত্তম দৃষ্টান্ত পেশ করে। তাই ঋণ গ্রহীতা ঋণ
ফেরত দেওয়ার সময় বেশি বা উত্তম ফেরত দিতে পারে, যাকে শরীয়তের পরিভাষায় ‘হুসনুল্ কাযা’
বা উত্তম পরিশোধ বলা হয়।
عن أبي رافع رضي الله عنه قال: استسلف رسول الله صلى الله عليه و سلم من رجل بكرا فقدمت عليه إبل من الصدقة فأمر أبا رافع أن يقضي الرجل بكره، فرجع إليه أبو رافع فقال: لم أجد فيها إلا خيارا رباعيا، فقال: أعطه إياه، إن خيار الناس أحسنهم قضاء” – رواه مسلم
অর্থ, আবু রাফে হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একদা নবী (সাঃ) এক ব্যক্তি
হতে একটি উষ্ট্রী ধার নেন। তার পর সাদাকার উট আসলে আবু রাফেকে আদেশ দেওয়া হয়, সে যেন সেই ব্যক্তির উট ফেরত দেয়। আবু
রাফে (রাযিঃ) ফিরে এসে বলেঃ [সেই সমগুণের উট নেই বরং তার থেকে উত্তম] রুবায়ী
মুখতার [এমন পুরুষ উট যা ছয় বছর বয়স অতিক্রম করে সপ্তম বছরে প্রবেশ করেছে এমন] উট আছে।
নবী (সাঃ) বলেনঃ তাই দিয়ে দাও; কারণ ভাল মানুষ তারা যারা উত্তম পরিশোধকারী।” [মুসলিম- ৪১০৮]
ইবনুল মুনযির
বলেনঃ ‘তাদের ঐক্যমত রয়েছে যে, ঋণ দাতা যদি ঋণ গ্রহীতাকে ঋণ ফেরতের সময় বেশী দেওয়া কিংবা হাদিয়া
সহ ঋণ ফেরত দেওয়ার শর্ত দেয় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে ঋণ দেওয়া হয়, তাহলে বেশি নেওয়াটা সুদ।’[মুগনী,৬/৪৩৬]
তাই ঋণ ফেরতের সময় বেশি গ্রহণ বৈধ নয়, যতক্ষণে দুটি শর্ত না পাওয়া যায়।
ক- ঋণ দাতা
ঋণ গ্রহীতার সাথে লাভ নেওয়ার শর্ত দেয় নি।
খ- সমাজে
বেশি দেওয়ার প্রথা প্রচলিত ও নয়।
যদি শর্ত
দেওয়া হয় কিংবা এটা সমাজে প্রচলিত থাকে, তাহলে বেশি নেওয়া সুদ হবে। এখানে প্রচলিত
শব্দটির উল্লেখ এই কারণে করা হচ্ছে যে, শরয়ী মূলণীতিতে প্রচলিত প্রথা শর্তর মতই।
অর্থাৎ শর্তারোপ তো করে না কিন্তু প্রথা ও প্রচলন অনুযায়ী বেশি নেয় বা দেয়, তাহলে সেটা শর্ত হিসাবেই গণ্য হবে।
প্রশ্নকারী
প্রিয় ভাই!
ধারকৃত
টাকার থেকে অতিরিক্ত টাকা পরিশোধের ব্যাপারে যদি আগে কোন চুক্তি না থাকে, বা এভাবে ঋণ দিয়ে অতিরিক্ত টাকা দেবার
প্রচলনও না থাকে, তাহলে আপনি
যদি স্বাভাবিকভাবে ঋণ পরিশোধের পর, নিজ থেকে খুশি হয়ে কিছু টাকা হাদিয়া স্বরূপ
প্রদান করেন, তা যত টাকাই
হোক না, কেন সমস্যা নেই। এছাড়া নিজ
পরিবারের জন্য ব্যয় করলে হাদিসে সদকা করার সওয়াব পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।