আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
287 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (13 points)
আমি মাজহাব সম্পর্কে পূর্বে স্পষ্ট জ্ঞান ছিল না৷আলহামদুলিল্লাহ এখন কিছু আলেমের কাছে জানলাম যে মাযহাব follow করার গুরুত্ব৷কিন্তু অন্তত এতটুকু জানি যে কিছু কিছু সুন্নাহ মাযহাবে পরিপূর্ণ অনুসরণ হয় না৷যেমন রাফাউল ইয়াদাইন কিছু মাযহাবে করা হয় না৷কিন্তু এটি সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত৷আবার অনেক মাযহাবে ঘাড় মাসেহ করার কথা আছে৷অন্য দিকে এ নিয়ে হাদিসের সনদগুলো দুর্বল৷আবার নামাজে হাত বাধা নিয়ে অনেকে মাযহাবে বলে নাভির নিচে,আবার অনেকে বলে নাভির উপরে!নাভি বরাবর হাত বাধার বিধান কিছু হাদিসে আছে কিন্তু অধিকাংশ  হাদিসে আছে বুক বরাবর৷আবার সহিহ হাদিস দ্বার ৮টির বেশি ছানা প্রমাণিত,কিন্তু মাযহাবের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় নির্দিষ্ট একটা বা তিন চারটার উপর আমল করা হয়৷ মানুষতো আর সকল ভুলের ঊর্ধ্বে নয়,জ্ঞানে,মতে ভিন্নতা থাকতেই পারে৷এখন একটা মাযহাব follow করলে যদি আমি এমন হাদিস দেখি যে সেটা সহিহ ,কিন্তু মাযহাবে নেই৷এমন অবস্থায় আমি কী ঐ হাদিসের উপর আমল করতে পারব?নাকি তা প্রবৃৃৃৃৃৃত্তির অনুসরণ হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


কোনো মাসয়ালাতে শুধু একই রকমের হাদীস থাকলে সেটি নিয়ে ইমামদের মাঝে মতবিরোধ নেই।
কোনো মাসয়ালায় একাধিক রকমের হাদীস পাওয়া গেলে সেক্ষেত্রে ইমামদের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
এক্ষেত্রে ইজতিহাদের ভিত্তিতে ইমামগন যেই মত অবলম্বন করেছেন,সবই ছহীহ।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حديث ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَنَا، لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ: لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ: لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا وقَالَ بَعْضُهُمْ: بَلْ نُصَلِّي، لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذلِكَ فَذُكِرَ لِلنَبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনু কুরাইযা এলাকায় পৌছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সলাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌছে সলাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সলাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাদের কারোর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেননি।
(অর্থাৎ উভয়ই ছহীহ ছিলো)
সহীহুল বুখারী, পৰ্ব ১২ খাওফ, অধ্যায় ৫, হাঃ ৯৪৬; মুসলিম, পর্ব ৩২: জিহাদ, অধ্যায় ২৩, হাঃ ১৭৭০


ﻋَﻦْ ﻋَﻤْﺮِﻭ ﺑْﻦِ ﺍﻟْﻌَﺎﺹِ ﻗَﺎﻝَ ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ – ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ- « ﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﺍﻟْﺤَﺎﻛِﻢُ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺻَﺎﺏَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮَﺍﻥِ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺣَﻜَﻢَ ﻓَﺎﺟْﺘَﻬَﺪَ ﻓَﺄَﺧْﻄَﺄَ ﻓَﻠَﻪُ ﺃَﺟْﺮٌ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম বলতে গিয়ে ইজতিহাদ করে,

আর তার ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদে ভুল হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব।
{সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৯১৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫৮৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৭৬}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন!
যেকোনো এক মাযহাবই মানতে হবে,একই সাথে সকল মাযহাব মানা যাবেনা।

ইসলামী স্কলার গন বলেছেনঃ 
যাকে ইচ্ছে তাকে মানা শরীয়তের অনুসরন নয় মন পূজা যখন যে ইমামকে ইচ্ছে তাকে মানার প্রবণতা দ্বীনে শরীয়তের পাবন্দী হবে না, হবে কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ। মন যখন চাইবে ইমাম আবু হানীফার অনুসরণ করা, আবার মন যখন চাইবে ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতকে অনুসরন করা, কিংবা অন্য কোন ইমামের অনুসরণ করা এটা দ্বীনে শরীয়তের আনুগত্ব হবে? না মন আর খাহেশাতের আনুগত্ব হবে?
যখন মন চাইল ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুসরণ করে বলে দিলেন যে, মহিলাদের স্পর্শ করলে অজু ভাঙ্গবে না। আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর বক্তব্য যে, মহিলা স্পর্শ করলে অজু ভেঙ্গে যায়, মতটিকে ছেড়ে দিলেন সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য।
আবার কিছুক্ষণ পর হাত কেটে গেল, এবার যখন দেখা গেল যে, ইমাম আবু হানীফা রহঃ এর মাযহাব অনুপাতে অজু ভেঙ্গে গেছে, আর ইমাম শাফেয়ী রহঃ এর মতে অজু ভাঙ্গেনি। তখন সাথে সাথেই মাযহাব পাল্টে বলতে শুরু করে দিলেন যে, না, না আমি হানাফী না, আমি শাফেয়ী। তাই আমার অজু ভাঙ্গেনি। এভাবে প্রতিটি মাসআলায় স্বীয় খাহেশাত অনুযায়ী মত পাল্টাতেই থাকলে এর নাম দ্বীন মানা? না মনপূজা?
,
এ কারণেই শায়েখ ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেনঃ “লাগামহীনভাবে যে মাযহাব যখন মনে চায়, সেটাকে মানা সুষ্পষ্ট হারাম ও অবৈধ।
{ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া-২/২৪১}

আরো জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!   
প্রশ্নে উল্লেখিত বিষয়ক আসলেই কোনো মাসয়ালা আসলে সেটি নিয়ে বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামদের স্বরনাপন্ন হবেন।
নিজে নিজে থেকে ঐ হাদীসের উপর আমল করতে গেলে প্রবৃৃৃৃৃৃত্তির অনুসরণ হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...