আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
303 views
in সালাত(Prayer) by (17 points)
একটা মাশালাহ জানতে চাচ্ছি,
সেটা হলো যদি কোন ইজমা কিয়াস হাদিসের বিপক্ষ্যে যায় তবে সেই ইজমা কিয়াজ কি গ্রহনীয়?
আমি যতটুকু জানি,ইজমা কিয়াস হয় কোরান হাদিসে যখন কোন বিষয় থাকে না তখন ইজমা কিয়াস হয়।
কিন্তু হাদিসে আছে তখন ইজমা কিয়াস কি গ্রহনীয়?
যেমন পবিত্র হজ্জের সময় নামাজ পড়তে দেখি অনেকে ই ফাকাফাকা হয়ে দাড়িয়েছে এর আগের বার ও দেখেছি করোনার কারনে ফাকা হয়ে দাড়িয়েছে,অসংখ্য হাদিসে কাতার মিলিয়ে দাড়ানোর কথা আছে।সেক্ষেত্রে,ফাকা হয়ে দাড়িয়ে নামাজ আদয় করলো ইজমা কিয়াসের মাধ্যমে সেক্ষেত্রে ইজমা দিয়ে হাদিস বাতিল হয়ে গেলো?
এই বিষয় যদি কেউ জানেন আপনার মুল্যবান মতামত
 দিতে পারেন।

আমাদের মসজিদে ফাকা হয়ে দাড়িয়ে নামাজ পড়ছে
বিঃদ্রঃ(হজ্জের সময় যে ফাকা হয়ে দাড়িয়ে এটা টিভিতে দেখে আমি আমার বন্ধু একজন সৌদির মুফতি তাকে ফোন দিয়ে বিষয় টা নিশ্চিত হই,এবং সে আমাকে লাইফে বিষয় টা নিশ্চিত করে।)

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
স্থান-কাল-পাত্র বেধে সময়ের  প্রয়োজনে ফুকাহায়ে কিরামগন সহজতার স্বার্থে আসল হুকুম থেকে সরে এসে তার বিপরীত সাময়িক হুকুম মাঝেমধ্যে প্রয়োগ করে থাকেন।একেই পরিভাষায় জরুরত বলে। জরুরত বা সময়ের চাহিদায় অনেক বিধিত সিদ্বান্তকে শর্তসাপেক্ষে সাময়িক পরিবর্তন করে দেয়।
এরকম কিছু ফিকহী মূলনীতি 'উসূলে ফিকহ' এর কিতাবাদিতে সবিস্তারে বর্ণিত আছে,তন্মধ্যে কিছু মূলনীতি হল।
 যথাক্রমেঃ-
(১) ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ
(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)
এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।
যেমনঃ-কোরআন থেকে.....
 ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ
তরজমাঃ-কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন।(সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)

আল্লাহ তা'আলা আরো বলেন,
ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢُ ﺍﻟْﻤَﻴْﺘَﺔَ ﻭَﺍﻟﺪَّﻡَ ﻭَﻟَﺤْﻢَ ﺍﻟْﺨِﻨﺰِﻳﺮِ ﻭَﻣَﺎ ﺃُﻫِﻞَّ ﺑِﻪِ ﻟِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺿْﻄُﺮَّ ﻏَﻴْﺮَ ﺑَﺎﻍٍ ﻭَﻻَ ﻋَﺎﺩٍ ﻓَﻼ ﺇِﺛْﻢَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻏَﻔُﻮﺭٌ ﺭَّﺣِﻴﻢٌ
তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মৃত জীব, রক্ত, শুকর মাংস এবং সেসব জীব-জন্তু যা আল্লাহ ব্যাতীত অপর কারো নামে উৎসর্গ করা হয়। অবশ্য যে লোক অনন্যোপায় হয়ে পড়ে এবং নাফরমানী ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়, তার জন্য কোন পাপ নেই। নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু।
(সূরা বাক্বারা-আয়াতঃ১৭৩)


বিশিষ্ট ততাফসির বিশারদ আব্দুর রহমান আস-সি'দী রহ, উক্ত আয়াতের ব্যখ্যা করে বলেনঃ
( ﻓَﻤَﻦِ ﺍﺿْﻄُﺮَّ
অর্থাৎ-পিপাসা বা খাবার না থাকার ধরুণ, অথবা কাররো ভয় প্রদর্শনের ধরুণ মৃতপ্রাণী (হারাম) ভক্ষণ করতে মজবুর হওয়া,এ ছাপড়ার বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকা।
ﻏَﻴْﺮَ ﺑَﺎﻍ
অর্থাৎ-হালালের উপর ক্ষমতা থাকার পর হারামকে অন্বেষণ করা অথবা প্রচন্ড বুক না থাকা-এরকম না হওয়া।
ٍ ) ﺃﻱ : ﻏﻴﺮ ﻃﺎﻟﺐ ﻟﻠﻤﺤﺮَّﻡ ، ﻣﻊ ﻗﺪﺭﺗﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻼﻝ ، ﺃﻭ ﻣﻊ ﻋﺪﻡ ﺟﻮﻋﻪ .ﻭَﻻ ﻋَﺎﺩٍ
তরজমাঃ-প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে বা সুবিধা ভোগ করে সীমালঙ্ঘন করা যাবে না।বরং প্রয়োজনের ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে।
) ﺃﻱ : ﻣﺘﺠﺎﻭﺯ ﺍﻟﺤﺪ ﻓﻲ ﺗﻨﺎﻭﻝ ﻣﺎ ﺃﺑﻴﺢ ﻟﻪ ﺍﺿﻄﺮﺍﺭﺍً ، ﻓﻤَﻦ ﺍﺿﻄﺮ ﻭﻫﻮ ﻏﻴﺮ ﻗﺎﺩﺭ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺤﻼﻝ ، ﻭﺃﻛﻞ ﺑﻘﺪﺭ ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺓ : ﻓﻼ ﻳﺰﻳﺪ ﻋﻠﻴﻬﺎ .( ﻓَﻼ ﺇِﺛْﻢ
অর্থাৎ-তখন হারাম জিনিষ ভক্ষণ করলেও কোনো গোনাহ হবে না।এ পরিস্থিতিতে হারাম সমায়িক সময়ের জন্য হালাল হয়ে যায়।এ সময় মানুষ আল্লাহর পক্ষ থেকে তা ভক্ষণ করে জীবন বাচাতে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে যায়।এমনি তখন নিজের জীবনকে ধংসের ধরুণ তিরস্কারেরও যোগ্য হয়ে যায়।নিজের জীবন বাচানো তখন ফরজ, হারাম ভক্ষণ না করে তৎক্ষনাৎ মারা গেলে গোনাহগার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়ে যায়।তখন সে আত্মহত্যাকারী বলে বিবেচিত হয়ে যায়।এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ। এজন্যই আল্লাহ শেষে বলছেন " নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান ক্ষমাশীল, অত্যন্ত দয়ালু"।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
এই জরুরতের কারণেই নামাযে বর্তমানে ফাঁক করে দাড়ানো হয়ে থাকে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (17 points)
উপরোক্ত আলোচনা অংশ বোঝা গেল,করোনার কারনে ফাকা হয়ে দাড়ানো ইজমা কিয়াস মতে জায়েজ।
সেক্ষেত্রে,একটা প্রশ্ন আমাকে করতে দিন তা হলো 
মুসলমানের আদিকাতে কি মহামারী বলতে কিছু আছে?
ফাকা হয়ে দাড়ানোর মত অবস্থা কি বাংলাদেশের পেক্ষাপটে হয়েছে কিনা! 
মানে,জরুরত কি প্রকিতপক্ষ্যে ই হয়েছে কিনা ফাকাফাকা হয়ে দাড়ানোর কারন হাটেবাজার,বাস বিভিন্ন জায়গাতে ২ বছর ধরে মানুষের সমাগত বিদ্যামান ছিল ও আছে।
এমত অবস্থায় জরুরত বলা যাবে কি ফাকা হয়ে দাড়ানো?
বিজ্ঞানিক ভাবে কি প্রমানিত ফাকা হয়ে দাড়ালে করোনা হবে না?
তর্কের জন্য নয়,আমি শুধু জানতে চাই একটা সুন্নত সাময়িক সময়ের জন্য বাদ দেয়া এটা জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন আসে না কি?
ফাকা হয়ে নামাজ পড়লে তো বাসা বাড়িতে ই পড়া যায়,জামায়াত শব্দের অর্থ তাহলে কি হলো?
গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো আমার কাছে বিষয় টি তাই এই একটি প্রশ্নের উত্তরের ই রিপ্লে কমেন্ট করেছি,দুখিত।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 112 views
0 votes
1 answer 249 views
...