বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ-
কারোর কাছে যদি জিলহজ মাসের ১০,১১ ও ১২ তারিখে নিজ ও নিজ পরিবারের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে ৫২
তোলা রুপা বা তার সমপরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। সুতরাং যদি কারোর এই পরিমাণ সম্পত্তি উক্ত দিনগুলোতে না থাকে তাহলে তার উপর কুরবানী করা
ওয়াজিব নয়।প্রয়োজনীয় জিনিস বলতে বোঝায় এক বছরের খোরাকি, বসবাসের জায়গা, প্রয়োজনীয় পরনের
কাপড় ও বাসার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ইত্যাদি। পক্ষান্তরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিনিস
বলতে বোঝায় সোনা রুপার অলংকার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজনে
আসে না এমন জমি, সঞ্চিত টাকা, বসবাসের অতিরিক্ত বাড়ির অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র
ইত্যাদি। আর যদি শুধু স্বর্ণ থাকে তাহলে কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার জন্য শর্ত হলো সাড়ে
সাত ভরি বা তার থেকে বেশি স্বর্ণ থাকা।
কুরবানী ওয়াজিব হওয়ার
ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " من وجد سعة فليضح" .
হযরত আবু হোরায়রা
রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু হতে বর্ণিত । তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তির সামর্থ্য রাখে সে যেন কুরবানী
করে। ( আল মুহাল্লা, ৭/৩৫৭)
অন্য এক হাদীসে এসেছে
-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ " مَنْ كَانَ لَهُ سَعَةٌ وَلَمْ يُضَحِّ
فَلاَ يَقْرَبَنَّ مُصَلاَّنَا " .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্তেও কোরবানি করে না, সে যেন আমাদের ঈদের মাঠের কাছেও না আসে। [সুনানে
ইবনে মাজাহ, ৩১২৩]
সুতরাং যে ব্যক্তির
উপর কুরবানী করা ওয়াজিব সে যদি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা কোরবানি
দিতে চাই তাহলে একা একা দিতে হবে। দুইজন মিলে দিলে সহীহ হবে না।আর যদি গরু, মহিষ ও
উট কোরবানি দিতে চাই তাহলে সর্বোচ্চ ৭ জন মিলে দিতে পারবে। সাত শরীকের বেশি
হলে কুরবানী সহীহ হবে না। -সহীহ মুসলিম ১৩১৮,
মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯, কাযীখান ৩/৩৪৯, বাদায়েউস সানায়ে
৪/২০৭-২০৮
হাদীস শরীফে এসেছে-
حَدَّثَنِي يَحْيَى عَنْ مَالِك عَنْ أَبِي
الزُّبَيْرِ الْمَكِّيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ قَالَ: نَحَرْنَا
مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْحُدَيْبِيَةِ
الْبَدَنَةَ عَنْ سَبْعَةٍ وَالْبَقَرَةَ عَنْ سَبْعَةٍ.
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ
(রা) থেকে বর্ণিতঃ
হুদায়বিয়ার বৎসর রসূলুল্লাহ
সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে প্রতিটি উট সাতজনের এবং প্রতিটি গরু সাতজনের
পক্ষে যবেহ করেছি (কুরবানীর উদ্দেশ্যে)। (সহীহ,
মুসলিম ১৩১৮)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই!
কোরবানির পশুর যে
কোনো এক ভাগ দুইজন মিলে কোরবানি দিলে কোরবানি সহীহ হবে না। সুতরাং দুই ভাই কোরবানি
দিতে চাইলে গরু, মহিষ কিংবা উটের ক্ষেত্রে সাত অংশের পৃথক পৃথক এক একটি
অংশ দিতে হবে। এক অংশ দুই ভাই মিলে কোরবানি দিলে কোরবানি সহীহ হবে না।
বি:দ্র: দুই ভাইয়ের যদি কুরবানী
ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণ সম্পত্তি না থাকে তাহলে তাদের উপর কোরবানি দেওয়া
ওয়াজিব নয়।