ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
উযর বিল জাহালত তথা না জেনে শরীয়ত বিরোধী কোনো কাজ কেউ করে ফেললে সেটা সেটা ক্ষমাযোগ্য অপরাধ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَجَاوَزْنَا بِبَنِي إِسْرَآئِيلَ الْبَحْرَ فَأَتَوْاْ عَلَى قَوْمٍ يَعْكُفُونَ عَلَى أَصْنَامٍ لَّهُمْ قَالُواْ يَا مُوسَى اجْعَل لَّنَا إِلَـهًا كَمَا لَهُمْ آلِهَةٌ قَالَ إِنَّكُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُون َ* إِنَّ هَـؤُلاء مُتَبَّرٌ مَّا هُمْ فِيهِ وَبَاطِلٌ مَّا كَانُواْ يَعْمَلُون َ* قَالَ أَغَيْرَ اللّهِ أَبْغِيكُمْ إِلَـهًا وَهُوَ فَضَّلَكُمْ عَلَى الْعَالَمِينَ
বস্তুতঃ আমি সাগর পার করে দিয়েছি বনী-ইসরাঈলদিগকে। তখন তারা এমন এক সম্প্রদায়ের কাছে গিয়ে পৌছাল, যারা স্বহস্তনির্মিত মূর্তিপুজায় নিয়োজিত ছিল। তারা বলতে লাগল, হে মূসা; আমাদের উপাসনার জন্যও তাদের মূর্তির মতই একটি মূর্তি নির্মাণ করে দিন। তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে বড়ই অজ্ঞতা রয়েছে।এরা যে, কাজে নিয়োজিত রয়েছে তা ধ্বংস হবে এবং যা কিছু তারা করেছে তা যে ভুল!তিনি বললেন, তাহলে কি আল্লাহকে ছাড়া তোমাদের জন্য অন্য কোন উপাস্য অনুসন্ধান করব, অথচ তিনিই তোমাদিগকে সারা বিশ্বে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।(সূরা আরাফ-১৩৮-১৪০)
মুসা আঃ তাদেরকে ভৎসনা করেছেন। কিন্তু তাদেরকে অমুসলিম আখ্যা দেননি বা তাদের এজন্য মৃত্যুদণ্ডাদেশও দেননি। কাজেই বুঝা গেল উজর বিল জাহালত গ্রহণযোগ্য।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) ভুলক্রমে কুফরি করলে সাথে সাথেই আল্লাহর কাছে তাওবাহ করতে হবে। তবে এর জন্য কোনো কাফফারা দিতে হবে না।
(২) তাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, সে যদি ইসলামের এ বিষয়ের সংশ্লিষ্ট বিধি-বিধান জানার পরও এমনটা বলে থাকে, তাহলে তার ঈমান চলে যাবে। আবার ঈমানকে নবায়ন করতে হবে। আর যদি সে এ সম্পর্কে ইসলামের বিধি-বিধান না জেনে এমনটা বলে থাকে, তাহলে ক্ষমাযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
(৩)
ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক
ঈমান ও ইসলাম দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা। ঈমান অর্থ বিশ্বাস ।ইসলামের মূল বিষয় গুলোর প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস, মৌখিক স্বীকৃতি ও তদনুযায়ী আমল করা কে ইমান বলা হয়। অন্যদিকে ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পণ আনুগত্য ইত্যাদি।মহান আল্লাহর আদেশ-নিষেধ বিনা দ্বিধায় মেনে নেয়ার মাধ্যমে তার প্রতি পূর্ণাঙ্গরূপে আত্মসমর্পণ করার নাম হলো ইসলাম।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান এদের একটি ব্যতীত অন্যটি কল্পনাও করা যায় না। এদের একটি অপরটির উপর গভীরভাবে নির্ভরশীল।
ঈমান ও ইসলামের সম্পর্ক গাছের মূল শাখা-প্রশাখার মত। ইমান হলো গাছের মূল শিকর বা মূল আর ইসলাম তার শাখা-প্রশাখা।মূল না থাকলে শাখা-প্রশাখা হয়না আর শাখা-প্রশাখা না থাকলে মূল বা শিকড় মূল্যহীন। তদ্রুপ ঈমান ও ইসলাম একটি অন্যটি ব্যতীত পূর্ণাঙ্গ হয় না। ঈমান মানুষের অন্তরে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, অনুরাগ ও তাঁর সন্তুষ্টি লাভের বাসনা সৃষ্টি করে। আর তাতে ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে সজীব ও সতেজ হয়ে পরিপূর্ণ সৌন্দর্য বিকশিত হয় ইসলাম।ইসলাম হলো ঈমানের বহিঃপ্রকাশ। ঈমান হল অন্তরের সাথে সম্পৃক্ত। আর ইসলাম বাহ্যিক আচার-আচরণ ও কার্যাবলী সাথে সম্পৃক্ত। যেমন আল্লাহ, রাসুল, ফেরেশতা ইত্যাদি বিষয়ে বিশ্বাস করা হলো ঈমান।আর সালাত, জাকাত, হজ ইত্যাদি বিষয় পালন করা হলো ইসলাম।প্রকৃতপক্ষে, ঈমান ও ইসলাম একটি অপরটির পরিপূরক। দুনিয়া ও আখেরাতে সফলতা লাভ করতে হলে ঈমান ও ইসলাম উভয়টিকেই পরিপূর্ণভাবে জীবনে বাস্তবায়ন করতে হবে। আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করুন (তথ্যসূত্র: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বাংলাদেশ)