পর্দা সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাঃ
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ। মুহতারাম,
[১] আমার অফিসের অনেক গায়রে-মাহরাম নারী সহকর্মী আছেন যাদের সাথে আমাকে প্রায়ই কাজ করতে হয়। না চাইলেও অনেক সময় তাদের চেহারার দিকে তাকাতে হয়। এক্ষেত্রে তাদের দিকে তাকালে কি আমার কোন গুনাহ হবে?
[২] আমি যেহেতু একটি পোষাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে কর্মরত আছি, অনেক ক্ষেত্রেই কোম্পানীর জন্য নারী কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের বয়স যাচাই করার জন্য নিক্বাব/মাস্ক খুলতে বলি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী কোন পোষাক শিল্প প্রতিষ্ঠানে ১৮ বছরের কম বয়সী কর্মী নিয়োগ নিষিদ্ধ, তাই তাদের বয়স যাচাই করাটা বাধ্যতামূলক। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এইসব শ্রমিক/কর্মী ভুয়া/জাল জন্ম নিবন্ধন নিয়ে আসেন। তাই তাতক্ষনিকভাবে তাদের বয়স যাচাইয়ের জন্য চেহারা দেখাটা জরুরী। বলে রাখা ভালো, যে ক্ষেত্রে দূর থেকে দেখে মনে হয় যে তাদের বয়স ১৮ হয়েছে বা জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী ১৮ বছর হয়েছে, তাদের চেহারা দেখি না বা নিক্বাব/মাস্ক খুলতেও বলি না। কিন্তু যাদেরকে দেখে মনে হয় যে বয়স কম কিংবা ভুয়া জন্ম নিবন্ধন (এইসব শ্রমিকদের অধিকাংশ জন্ম নিবন্ধনই ভুয়া/জাল বা বয়স কমানো/বাড়ানো হয়ে থাকে) নিয়ে আসে, তাদেরকে নিক্বাব/মাস্ক খুলতে বলি।
এই নিক্বাব/মাস্ক খুলতে বলার কারনে কি আমার কোন গুনাহ হবে? কিংবা তাদের চেহারা দেখে যে আমি তাদেরকে নিয়োগ অনুমোদন করি, সেক্ষেত্রেও কি আমার গুনাহ হবে?
[৩] এছাড়াও আমাদের গ্রুপ অফ কোম্পানীর একাধিক অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক প্রতিষ্ঠানের কর্মী (চাকরি ছেড়ে চলে গেলে) গ্রুপের অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হয় না। এদের বেশিরভাগই নারী কর্মী। গ্রুপের এক প্রতিষ্ঠানের কর্মী অন্য প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বন্ধ করার জন্য উভয় প্রতিষ্ঠানের নিয়োগদাতারা সকল নতুন নারী কর্মীদের ছবি তুলে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে শেয়ার করেন যাতে অন্য প্রতিষ্ঠানের নিয়োগদাতা বুঝতে পারেন যে সংলিষ্ট নারী কর্মীটি অঙ্গ-প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছিল কিনা। যদি এমন কাউকে খুজে পায়, তাহলে অন্য প্রতিষ্ঠানে গেলে তাকে আর নিয়োগ দেওয়া হয় না।
এখন এইভাবে নারী কর্মীদের ছবি তুলে ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে (শুধু নিয়োগকর্তারা থাকেন ঐ গ্রুপে) শেয়ার করাটা কি জায়েজ হচ্ছে? কিংবা যেহেতু অনেক পর্দানশীল নারী কর্মীদের নিক্বাব খুলে ছবি তোলা হয়, তাই এভাবে ছবি তোলার জন্য আমি কি গুনাহগার হচ্ছি?
কথাগুলো একেবারে ভেঙ্গে বললাম। আশা করি বিরক্ত হননি। জাযাকাল্লাহু খাইরান।