বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
এক্ষেত্রে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে এটি বাচ্চাদের জন্যেও নাজায়েজ, আর কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে শিশু বাচ্চাদের জন্য জায়েজ।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
আবু হুরায়রা রা. বলেন-
استأذن جبريل عليه السلام على النبي صلى الله عليه وسلم فقال : كيف أدخل وفي بيتك ستر فيه تصاوير، فإما أن تقطع رؤوسها أو تجعل بساطا يوطأ، فإنا معشر الملائكة لا تدخل بيتا في تصاوير.
একদিন জিব্রীল আ. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসার অনুমতি চাইলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ভিতরে আসুন। জিব্রীল আ. বললেন, কীভাবে আসব, আপনার গৃহে ছবিযুক্ত পর্দা রয়েছে। আপনি হয়তো এই ছবিগুলোর মাথা কেটে ফেলুন কিংবা তা বিছানায় ব্যবহার করুন, যা পদদলিত হবে। কেননা,আমরা ফেরেশতারা ওই গৃহে প্রবেশ করি না যাতে ছবি থাকে।’ (সুনানে নাসায়ী হা. ৫৩৬৫; সহীহ ইবনে হিববান ৫৮৫৩)
হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,তিনি বলেন,
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: «قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - مِنْ غَزْوَةِ تَبُوكَ أَوْ خَيْبَرَ وَفِي سَهْوَتِهَا سِتْرٌ فَهَبَّتْ رِيحٌ فَكَشَفَتْ نَاحِيَةَ السِّتْرِ عَنْ بَنَاتٍ لِعَائِشَةَ لُعَبٍ، فَقَالَ: مَا هَذَا يَا عَائِشَةُ؟ قَالَتْ: بَنَاتِي، وَرَأَى بَيْنَهُنَّ فَرَسًا لَهُ جَنَاحَانِ مِنْ رِقَاعٍ، فَقَالَ: مَا هَذَا الَّذِي أَرَى وَسْطَهُنَّ قَالَتْ: فَرَسٌ قَالَ وَمَا هَذَا الَّذِي عَلَيْهِ؟ قَالَتْ: قُلْتُ: جَنَاحَانِ، قَالَ فَرَسٌ لَهُ جَنَاحَانِ، قَالَتْ أَمَا سَمِعْتَ أَنَّ لِسُلَيْمَانَ خَيْلًا لَهَا أَجْنِحَةٌ؟ قَالَتْ: فَضَحِكَ حَتَّى رَأَيْتُ نَوَاجِذَهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ.
রাসূলুল্লাহ সাঃ তাবুক বা খায়বার এর যুদ্ধ থেকে ফিরে ঘরে আসছেন।আয়েশা রাযি এর রুমের সামনে পর্দা টানানো থাকতো।বাতাশ পর্দার একটি অংশকে সরিয়ে ফেললে আয়েশা রাযি এর খেলার সাথী কিছু বালিকাকে রাসূলুল্লাহ সাঃ দেখতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন,হে আয়েশা এরা কারা? তখন আয়েশা রাযি জবাবে বললেন,এরা আমার খেলার সাথী। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাঃ ঐ সমস্ত বালিকাদের মধ্যখানে দুই পাখা বিশিষ্ট কাপরের একটি গোড়া দেখতে পেলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,এটা কী জিনিষ যা আমি তাদের মধ্যখানে দেখলাম।আয়েশা রাযি জবাবে বললেন, এটা (একটা খেলনার)গোড়া। তখন রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার জিজ্ঞেস করলেন,ঐটা কোন জিনিষ?যা এই গোড়ার সাথে লাগানো দেখলাম। আয়েশা রাযি জবাবে বললেন,এটা তার ডানা।রাসূলুল্লাহ সাঃ আবার জিজ্ঞেস করলেন,গোড়ার কি পাখা থাকে?আয়েশা রাযি প্রতিউত্তরে বললেন, আপনি কি শুনেননি যে, হযরত সুলাইমান আঃ এর একটি দুই ডানা বিশিষ্ট গোড়া ছিলো?
আয়েশা রাযি বলেন,তৎক্ষণাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ এমনকরে হাসলেন যে,উনার সামনের সাড়ির দাতগুলো দেখা গেলো।
সুনানে আবু-দাউদ;৪৯৩২মিরকাত-৩২৬৫
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহী গ্রন্থ
আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহতুল কোয়েতিয়্যাহ নামক কিতাবে এ বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।নিম্নে আলোচনার সেই চুম্বকাংশকে তুলে ধরছি-
سَابِعًا: صِنَاعَةُ لُعَبِ الْبَنَاتِ:
اسْتَثْنَى أَكْثَرُ الْعُلَمَاءِ مِنْ تَحْرِيمِ التَّصْوِيرِ وَصِنَاعَةِ التَّمَاثِيل صِنَاعَةَ لُعَبِ الْبَنَاتِ. وَهُوَ مَذْهَبُ الْمَالِكِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ وَالْحَنَابِلَةِ. وَقَدْ نَقَل الْقَاضِي عِيَاضٌ جَوَازَهُ عَنْ أَكْثَرِ الْعُلَمَاءِ، وَتَابَعَهُ النَّوَوِيُّ فِي شَرْحِ مُسْلِمٍ، فَقَال: يُسْتَثْنَى مِنْ مَنْعِ تَصْوِيرِ مَا لَهُ ظِلٌّ، وَمِنِ اتِّخَاذِهِ لُعَبَ الْبَنَاتِ، لِمَا وَرَدَ مِنَ الرُّخْصَةِ فِي ذَلِكَ
শিশুদের খেলনার পুতুলের বিধান।
অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরাম ফটো-ভাস্কর্যের হারাম বিধানের মধ্যে শিশুদের খেলনা পুতুল কে শামিল করেন না।এটা মালিকী, শা'ফেয়ী এবং হাম্ববলী মাযহাবের সিদ্ধান্ত।
কাযী ইয়ায রাহ. অধিকাংশ উলামায়ে কেরাম থেকে এর বৈধতা উদ্ধৃতি দিয়েছেন।এবং ইমাম নববী রাহ.ও উনার অনুসরণ করে বৈধ বলেছেন।
তিনি 'আল-মিনহাজ' নামক কিতাবে উল্লেখ করেন,
ছায়াযুক্ত ফটো-ভাস্ককর্য উক্ত হারামের আওতাধীন হবে না,কেননা নাবালিকাদের খেলনার পুতুলে রুখসত(শীতিলতা) রয়েছে।
★আপনার ৩ মাস বয়সী বাচ্চাকে পুতুল সদৃশ খেলনা দিতে পারবেন।
তবে সতর্কতা অবলম্বন মূলক তাকেও দিবেননা।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত গেম পুরোপুরি নাজায়েজ, এই ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করে হলেও ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন।