আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
525 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (61 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১) কুরআন গায়রে মাখলুক। এখানে কুরআনের কোন জিনিসটা (শব্দচয়ন অসঙ্গতিপূর্ণ হলে দুঃখিত) গায়রে মাখলুক?

২) কুরআনের আয়াত ও হাদিসে কুদসীর শব্দগুলো সরাসরি আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে এসেছে। প্রশ্ন হলো, কুরআনের ভাষ্য ও হাদিসে কুদসীর ভাষ্যের মধ্যে পার্থক্য কী?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম।
এটি মাখলুক নয়।
গায়রে মাখলুক।

কুরআন আল্লাহর কালাম বা বাণী। তা আল্লাহর সৃষ্টি জগতের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং এটি তার যাত বা স্বত্বার এক অবিচ্ছেদ্য সিফত (বৈশিষ্ট্য)। সিফত বা গুণ-বৈশিষ্ট্য কখনো যাত বা স্বত্বা থেকে আলাদা হয় না। 

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ নিশ্চয় এটা সম্মানিত কুরআন, যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে”। ( সুরা ওয়াকিয়াঃ৭৭-৭৮ )।

আল্লাহ আরও বলেন, ” আপনার প্রতি আপনার পালনকর্তার যে, কিতাব প্রত্যাদিষ্ট করা হয়েছে, তা পাঠ করুন। তাঁর বাক্য পরিবর্তন করার কেউ নাই। তাঁকে ব্যতীত আপনি কখনই কোন আশ্রয় স্থল পাবেন না। ( সুরা কাহাফ-২৭)

তিনি আরও বলেন: “আর মুশরিকদের কেউ যদি তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে, তবে তাকে আশ্রয় দেবে, যাতে সে আল্লাহর কালাম শুনতে পায়।” ( সুরা তাওবাঃ ০৬) ।

وإن القرآن کلام اللہ، منہ بدا بلا کیفیة
 قولاً وأنزلہ علی رسولہ وحیاً وصدقہ الموٴمنون علی ذلک حقاً وأیقنوا أنہ کلام اللہ تعالی بالحقیقة لیس بمخلوق ککلام البریة (العقیدة الطحاویة، ص: ۱۲)،

সারমর্মঃ  কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম    


 والقرآن کلام اللہ تعالی غیر مخلوق (العقائد النسفیة مع شرحھا للتفتازاني، ص: ۴۶) 
সারমর্মঃ  
কুরআন আল্লাহ তায়ালার কালাম। মাখলুক নয়।

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রা. বলেন,
والقرآن كلام الله، ليس بمخلوق، فمن زعم أن القرآن مخلوق فهو جهمي كافر ومن زعم أن القرآن كلام الله عز وجل ووقف ولم يقل مخلوق ولا غير مخلوق: فهو أخبث من الأول،

“কুরআন আল্লাহ কালাম (বাণী); মাখলুক বা সৃষ্ট নয়। যে ব্যক্তি মনে করে যে, কুরআন আল্লাহর মাখলুক (সৃষ্ট) সে জাহমী-কাফির। আর যে ব্যক্তি কুরআন আল্লাহর কালাম বলে চুপ থাকে- মাখলুক না কি মাখলুক নয় সে ব্যাপারে কোন মন্তব্য করে না-সে ১ম ব্যক্তির থেকেও নিকৃষ্ট।

 ইমাম ইবনে আব্দুল ইয আল হানাফি (তাহাবীয়া গ্রন্থের ভাষ্যকার), বলেন:
فأهل السنة كلهم من أهل المذاهب الأربعة وغيرهم من السلف والخلف متفقون على أن كلام الله غير مخلوق

“চার মাযহাব সহ পূর্বসূরি ও পরবর্তী মনিষীদের সকলেই একমত যে, আল্লাহর কালাম মাখলুক নয়।
,
(০২)
হাদিসে কুদসি বলা হয়ঃ
যে হাদীসের মূল কথা সরাসরি আল্লাহ তাআ’লার পক্ষ থেকে এসেছে, সেই হাদীসকেই‘হাদীসে ক্বুদসী’ বলা হয়।

 আল্লাহ তাআ’লার যেই কথাগুলো কুরানুল কারীমের ‘আয়াত’ হিসেবে নাযিল করা হয়নি বরং, আল্লাহ তাআ’লা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কে স্বপ্নের মাধ্যমে অথবা তাঁর অন্তরে ‘ইলহাম’ করে পাঠিয়েছেন, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম সেই কথাগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে নিজ ভাষায় তাঁর উম্মতকে জানিয়ে দিয়েছেন, সেইগুলোকে হাদীসে ক্বুদসী বলা হয়।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,    

হাদীসে ক্বুদসীর কথাগুলো আল্লাহর, কিন্তু তার ভাষা বা বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে। অপরদিকে, ক্বুরানুল কারীমের আয়াতগুলোর কথা এবং ভাষা – সমস্তটাই স্বয়ং আল্লাহ তাআ’লার।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...