উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(১.২) শরীয়তের বিধান হলো মুখে স্পষ্ট শব্দে কোন কিছু না বললে, এর দ্বারা কোন শরয়ী বিধান প্রযোজ্য হবে না। প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে আপনি মনে মনে বিভিন্ন জিনিস ভাবতেছিলেন, আর কসম করতেছিলেন। মুখে কসম উচ্চারণ করেননি। শুধু মনে এরকম চিন্তা আসছিল কসম আমি এরকম করবো বা কসম আমি এরকম করবো না।সুতরাং আপনি যেহেতু মুখে কসম উচ্চারন করেননি,বরং শুধু মনে মনে ভেবেছিলেন,তাই আপনার কসম হয়নি।
যেহেতু আপনার কসমই হয়নি,তাই কাফফারা দেওয়াও ওয়াজিব হবেনা।
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ: قَالَ: «إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ، فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ، وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً، فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً»
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনলার শানে বলতেছিলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পূণ্য ও পাপ লিপিবদ্ধ করেন। তারপর এর ব্যাখ্যা করেন, সুতরাং কোন ব্যক্তি যদি ভাল পূণ্যময় কাজের ইচ্ছে সংকল্প করে, কিন্তু কাজটি করতে না পারে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী লিপিবদ্ধ করেন।আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদন করে ফেলে, তাহলে তাকে দশ থেকে সাতশত পরিমাণ বা এর চেয়ে বেশি নেকী বৃদ্ধি করে লিপিবদ্ধ করেন। আর যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজের সংকল্প করে, কিন্তু পাপ কাজটি না করে, তাহলেও আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী দান করেন। আর যদি সংকল্প করা কাজটি সম্পাদিত করে ফেলে, তাহলে তার জন্য একটি গোনাহ লিখা হয়। [বুখারী, হাদীস নং-৬৪৯১]
.
.
(০৩) শরীয়তের বিধান হলো কেহ যদি অজু বা নামাজের ভিতরে মানসিক দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকে,ওয়াসওয়াসায় পড়ে। যেমন অজুর মধ্যে কুলি করার পর মনে করে যে সে কুলি করেনি,সেজদাহ করার পর মনে করে যে আমার সেজদাহ সঠিক ভাবে আদায় হলো কিনা! আবার আদায় করি। রুকু করার পর মনে যে আমার রুকু সঠিক ভাবে আদায় হলো কিনা! আবার আদায় করি।তাহলে সে ঐ দিকে আর ভ্রুক্ষেপ করবেনা।,নতুন করে আবার কুলিও করবেনা,সেজদাও করবেনা,রুকুও করবেনা,বরং এই অবস্থাতেই অজু, নামাজ পুরা করে নিবে।,এটা সম্পূর্ণভাবে শয়তানী ওয়াসওয়াসা। তাই মন থেকে এমন ভাব দ্রুত দুর করে দিতে হবে।
তার জন্য উচিত,সেই দিকে কোনোভাবেই ভ্রুক্ষেপ না করা,কেননা এটা শয়তানী ওয়াসওয়াসা। হাদিস শরিফে এটা থেকে বাঁচার নির্দেশ এসেছে।
(নাজমুল ফাতওয়া ২/১৭)
, সুতরাং আপনার জন্য করনীয় হলো,মন থেকে এমন দুশ্চিন্তা একদম ঝেড়ে ফেলে নিশ্চিন্তে নামাজ আদায় করা।কোনো রুকুন সম্পর্কে এমন মনে হলে তা কোনো ভাবেই পুনরায় আদায় না করা।
,এই ভাবে নামাজ আদায় করলে নামাজ পুনরায় আদায় করা আবশ্যকীয় হয়ে যায়,অনেকক্ষেত্রে নামাজ আদায়ই হয়না।
হাদিস শরিফে এসেছেঃ فاذا بلغ ذلک فلیستعذ باللّٰہ و لینتہ‘‘ عن أبي ھریرۃ ص ، صحیح بخاری ، حدیث نمبر : ۳۲۷۶ ، باب صفۃ ابلیس و جنودہ ، کتاب بدء الخلق ، نیز دیکھئے : صحیح مسلم ، حدیث نمبر : ۱۳۴ ، کتاب الایمان ۔
যদি এমন পর্যায়ে পৌছে,তখন আল্লাহর কাছে পানাহ চাইবে,দ্রুত ত্যাগ করবে।’
إن النبي ا نھی أن یبول الرجل في مستحمہ ، وقال : ان عامۃ الوسواس منہ ، عن عبد اللہ بن مغفل ص (الجامع الترمذی ، حدیث نمبر : ۲۱ ، باب ما جاء في کراھیۃ البول في المغتسل ، کتاب الطھارۃ )
রাসুল সাঃ যেখানে পানি জমা হয়,সেখানে পেশাব করতে নিষেধ করেছেন।(যাতে করে ওয়াসওয়াসা পয়দা না হয়।)
.
তাই শয়তানী এই ওয়াসওয়াসা অন্তর থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।
۔لاحول ولاقوۃ الا باللہ العلی العظیمবেশি বেশি পড়বেন। দ্রুত ডাক্তার দেখান।
.
হ্যাঁ এই সন্দেহ যদি তার প্রথমবারের মতো হয়,তাহলে সর্বশেষ অঙ্গ ধৌত করবে,নামাজের ভিতর হলে সর্বশেষ রুকন আদায় করবে। অর্থাৎ মাথা মাসেহ করার সময় সন্দেহ হলে হাত ধুয়ে নিবে,সেজদার সময় সন্দেহ হলে রুকু আদায় করে নিবে।,
আর যদি বরাবরই তার এমনটি হয়,তাহলে সেদিকে আর ভ্রুক্ষেপ করা যাবেনা।
.
والله أعلم بالصواب
.উত্তর লিখনে
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ IOM