আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
210 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
আমি আমার পছন্দে একটি মেয়ে কে এক বসর পূর্বে বিবাহ করি। মেয়েটি বিবাহর আগে তেমন একটা ধার্মিক ছিলো না। আমার পরিবার একটি ধার্মিক পরিবার এবং এ কারণে তারা আমার বিবাহতে রাজি ছিলো না। মেয়েটি আমাকে বিবাহর আগে বলে ছিলো, সে ধার্মিক হতে চায়। আলহমদুলিল্লাহ, সে পর্দা, নামাজ , রোজা এখন করে। কিন্তু, তার বদ অভ্যাস হচ্ছে সে রেগে গেলে অশ্লীল এবং নোংরা ভাষায় গালি গালাজ করে। আমার পরিবার প্রথম থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এই বিবাহ ভাঙার জন্য চেষ্টা করেছে। এ কারণে ও নানা সময়ে আমার পরিবারের লোকজনকে ফেইসবুকে মেসেজ দিয়ে গালিগালাজ করে। এ বিষয়ে আমার সাথে বিভিন্ন সময়ে কথা কাটাকাটি হয়। এ সকল কারণে আমার ফ্যামিলির এক ধরণের প্ররোচনায় আমি তাকে দুইবার তালাক দেই। দ্বিতীয় তালাক দেই গতমাসে। এখন সমস্যা হচ্ছে সে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সে আমাকে অনেক ভালোবাসে, সে চায় আমি তার সাথে সংসার করি। আমি দ্বিতীয় তালাক দিতে চাই নি, আমি তখন জানতাম সে প্রেগন্যান্ট। কিন্তূ আমার পরিবার আমার প্রতি জোরাজুরি করে। আমার ফ্যামিলি কে আমি ওয়াদা করি অমি তার কাছে আর ফিরে যাবো না।
সে নিজের জীবনে অনেক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। কিন্তু তার বদ্মমেজাজি সভাব টা আছে। আমি এই নবাগত সন্তানের কথা চিন্তা করে সংসার টা আবার করতে চাই। কিন্তু আমার পরিবার কিছুতেই চায় না আমি এখানে আগাই। তারা আমাকে নতুন জায়গায় বিবাহ দেওয়ার চিন্তা ভাবনা করতেছে।


এখন শরিয়তের আলোকে আমার কি করা উচিৎ , জানালে আমি ভীষন উপকৃত হব। জাজাকা আল্লাহু খায়রান।

1 Answer

0 votes
by (684,240 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলোঃ এক তালাক বা দুই তালাক দেয়ার পর স্বামীর অধিকার থাকে, স্ত্রীকে ইদ্দত তথা তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে রাজআত করা তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 

কিন্তু যদি তিন হায়েজ অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ নয়। (ফাতওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ-৯/৪৪১,২৪৫)

সুরা বাকারার ২২৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-

الطَّلَاقُ مَرَّتَانِ فَإِمْسَاكٌ بِمَعْرُوفٍ أَوْ تَسْرِيحٌ بِإِحْسَانٍ وَلَا يَحِلُّ لَكُمْ أَنْ تَأْخُذُوا مِمَّا آَتَيْتُمُوهُنَّ شَيْئًا إِلَّا أَنْ يَخَافَا أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا فِيمَا افْتَدَتْ بِهِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَعْتَدُوهَا وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ (229)

"এ তালাক দু'বার, অতঃপর স্ত্রীকে হয় বিধিসম্মতভাবে রাখবে অথবা সদয়ভাবে বিদায় দেবে। আর স্ত্রীকে দেয়া কোন কিছু ফেরৎ নেয়া তোমাদের পক্ষে উচিত নয়। তবে যদি তাদের উভয়ের আশংকা হয় যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরা যদি আশংকা কর যে তারা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তবে (সে অবস্থায়) স্ত্রী কোন কিছুর বিনিময়ে (স্বামী থেকে) নিষ্কৃতি পেতে চাইলে তাতে (স্বামী-স্ত্রীর) কারো কোনো পাপ নেই। এসব আল্লাহর সীমারেখা। কাজেই তা লংঘন কর না। যারা আল্লাহর (নির্দিষ্ট) সীমারেখা লংঘন করে তারাই অত্যাচারী।" (২:২২৯)

সুরা তালাক এর ০৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَ اُولَاتُ الۡاَحۡمَالِ اَجَلُہُنَّ اَنۡ یَّضَعۡنَ حَمۡلَہُنَّ ؕ وَ مَنۡ یَّتَّقِ اللّٰہَ یَجۡعَلۡ لَّہٗ مِنۡ اَمۡرِہٖ یُسۡرًا ﴿۴﴾ 
আর গর্ভবতী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। আর যে আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ্ তার জন্য তার কাজকে সহজ করে দেন।
,
গর্ভবর্তী স্ত্রীদের ইদ্দত সন্তান প্রসব সাব্যস্ত করা হয়েছে, তা যতদিনেই হোক। [ফাতহুল কাদীর]

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দুই তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছে।
এক্ষেত্রে আপনার অধিকার আছে যে, স্ত্রীকে ইদ্দত (এক্ষেত্রে সন্তান প্রসব) হওয়ার আগে রাজআত করা (মৌখিক ভাবে বা স্বামীসুলভ আচরনের মাধ্যমে) তথা স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে ফিরিয়ে আনা। এতে কোন কিছুর প্রয়োজন নেই। 
,
তাই যদি ইদ্দত কাল শেষ না হয়ে থাকে,তাহলে আপনি এক্ষেত্রে স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে। 
,
কিন্তু যদি ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হওয়ার আগে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না আনা হয়, তাহলে স্ত্রীকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে নতুন করে মোহর ধার্য করে বিবাহ করা আবশ্যক। নতুবা স্বামী স্ত্রী হিসেবে উভয়ের বসবাস করা জায়েজ হবেনা।
,
এক/দুই তালাকের পর ফিরিয়ে নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঃ 
,
★আর যদি আপনি সেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেন,তাহলে আপনি অন্য মেয়ে কে বিবাহ করতে পারেন,কোনো সমস্যা নেই।
,
তবে সেই সন্তানের বাবা হিসেবে সন্তানের ভরনপোষণ ইত্যাদি যাবতীয় সবকিছু আপনাকেই দিতে হবে। 
সবকিছুর দায়িত্ব আপনার থাকবে।
,
আরো জানুনঃ 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...