আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
373 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
closed by
ক) বর্তমানে অনেক রাষ্ট্রকেই কাফের রাষ্ট্রকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করেছে। এইটা কোন সীমা অতিক্রম করলে 'আল বারা' হবে না?
খ) ব্যক্তিগত জীবনে কাফেরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করার সীমা কতটুকু?
গ) কাফেরদের মত নাম রাখা হারাম বা কবীরাহ গুনাহ। তো আমার বাবা মা যদি এইটা না জেনে অন্য ধর্মের মত নাম রাখে। তখন আমার করণীয় কি?
যেমনঃ আমার নাম মুহাম্মদ হান্নান মাহমুদ তন্ময়। তন্ময় হিন্দুদের নাম।
এতে কি আমার বা আম্মা আব্বার গুনাহ হবে?
ঘ) পোশাক পরিচ্ছদ ও কথা বার্তায় কাফেরদের সাদৃশ্য গ্রহণ এর সীমা কতটুকু? যাও কিনা হারাম বা কবীরাহ গুনাহ
ঙ) কাফেরদের দেশে পড়াশোনা করতে যাওয়া কি গুনাহ?
চ) কাফেরদের সাথে লেনদেন এর বিধান কি?
ছ) এক দিকে আল ওয়ালার হকদার,  অন্যদিকে আল বারার হকদার। এরা কারা? ও এদের সাথে করণীয় কি?

জ) সালাতে প্রথম ও তৃতীয় রাকাতে একটু বসা দ্বিতীয় সিজদাহ্ এর পরে। হানাফিতে মাযহাব মতেও কি এইটা সুন্নাহ?
closed

1 Answer

+1 vote
by (589,380 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(ক) মুসলমাসদের স্বার্থকে অটুট রেখে কাফিরদের সাথে যেকোনো চুক্তি করা যাবে। শর্ত হল,ইসলাম ও মুসলমান এবং দেশের কোনো প্রকার ক্ষতি হতে পারবে না। আপনার প্রশ্নের যদি ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে,তাহলে আপনি কমেন্টে উল্লেখ করতে পারেন।

অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ককে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاء مِن دُوْنِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللّهِ فِي شَيْءٍ إِلاَّ أَن تَتَّقُواْ مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللّهِ الْمَصِيرُ
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।(সূরা আলে ইমরান-২৮)

কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়, তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।


(গ)না জেনে কাফিরদের মত কোনো নাম মুসলমান পিতা মাতা রাখলে তাদের গোনাহ হবে না। তবে জানা পর বদলানোর সুযোগ থাকা সত্তেও না বদলানো উচিৎ হবে না।হ্যা,অমুসলিমদের দেবতা বা তাদের ধর্মীয় নিদর্শন সূচক কোনো শব্দ হলে,এবং তা বহাল রাখলে অবশ্যই মাতাপিতার গোনাহ হবে।আর ধর্মীয় নিদর্শন সূচন না হলে গোনাহ হবে না।তবে বহাল রাখাও উচিৎ হবে।নামের আছরে সন্তানের ভবিষ্যত জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।

(ঘ) https://www.ifatwa.info/11420 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
হাদীস শরীফে এসেছে.....
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ( ﺍﻟﻠﺒﺎﺱ / 3512 ) ﻗﺎﻝ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ : ﺣﺴﻦ ﺻﺤﻴﺢ . ﺑﺮﻗﻢ ( 3401
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ বলেন যে ব্যক্তি অন্য গোত্রে (অমুসলিম)-র অনুসরণ করবে সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।
(আবু-দাউদ-৩৫১২)ইমদাদুল ফাতাওয়া,৪/২৬৬।

সাদৃশ্য গ্রহণ তিন কযেক ভাবে হতে পারে।
(১)ফিতরী তথা জন্মগত বিষয়ে সাদৃশ্য গ্রহণ। এটা হারাম হবে না।
(২)পদ্ধতির অনুসরণ।যেমন তারা যেভাবে খাবার গ্রহণ করে বা হাটাচলা করে,তাদের এগুলোর অনুসরণ।এগুলো হারাম হবে তখন,যদি পূর্ব থেকেই মুসলমানদের আলাদা কোনো পদ্ধতি থাকে।
(৩)কাফিরদের ধর্মীয় বিষয়ের অনুসরণ। এটা সর্বাবস্থায় হারাম।(ইমদাদুল আহকাম-১/২৮৫)


ঙ) https://www.ifatwa.info/4582 নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
আবু দাঊদ শরীফে হযরত সামুরা ইব্ন জুনদুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :
ﻣﻦ ﺟﺎﻣﻊ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﺳﻜﻦ ﻣﻌﻪ، ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺜﻠﻪ –
“যে ব্যক্তি অমুলিমদের সাথে চলাফেরা করবে এবং তাদের সাথে বসবাস করবে, সেও তাদের অনুরূপ হবে”। (আবু দাঊদ, কিতাবুদ্দাহায়া)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাইবোন!
কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও শিক্ষা অর্জনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারলে, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে শিক্ষার সুযোগ পায়,তাহলে দু’টি শর্তে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং সেখান থেকে শিক্ষার্জন করা জায়েয হবে।যথাঃ- 
(এক)সেখানে আমলী জিন্দিগী তথা, ইসলামী বিধি-বিধান পরিপালনে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে হবে। 
(দুই)সেখানকার প্রচলিত অশ্লীলতা, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।

সুতরাং
প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জরুরী যে,তারা প্রথমে নিজ দেশ বা কোনো ইসলামী দেশে লেখাপড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টাপ্রচেষ্টা করবে।
নারী-পুরুষ সবার জন্য একই শর্ত।তবে নারীদের জন্য পৃথক কিছু বিষয় লক্ষ্যণীয়। তারা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে না।এবং অনিরাপদ স্থানে একাকী বসবাস করতে পারবে না।
বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/3447

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি দেশে বা কোনো মুসলিম পরিবেশে পড়াশোনার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।যদি মুসলিম দেশ সমূহে আপনি স্কলারশিপ না পান,বা মান-সম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা না হয়,তাহলে আপনি ইস্তেগফারের সাথে দ্বীন পালনের পূর্ণ ব্যত্যয় নিয়ে আপনি অমুসলিম দেশে যেতে পারবেন । আপনার কোনো গোনাহ হবে না। 

(চ) কাফিরদের সাথে লেনদেন করা যাবে।এতে কোনো বিধিনিষেধ নাই।

(ছ) কোনো বিষয়ে আপনি আল-ওয়ালা এবং আল-বারা এর হকদারের কথা বলছেন? প্রশ্নটাকে একটু বিস্তারিত কমেন্টে বললে আমাদের জন্য জবাব দিতে সুবিধা হবে?

(জ) না, এটা সুন্নত নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (22 points)
উস্তাদ ঘ এর উত্তর এ ফিতরি সাদৃশ্য মানে কি? উদাহরণ দিলে ভালো হয়। জাযাকাল্লাহ খাইরান  
by (22 points)
ছ এ উস্তাদ, মানুষ তিন রকম।
এক, আল ওয়ালার মানুষ 
দুই, আল বারার, 
তিন, দুইটা একসাথে।  তিন নম্বর কারা? 
by (22 points)
আরিফ উস্তাদ বলেছেন, ফিতরি মানে দৈনিক চাহিদাতে কাফেরদের অনুকরণ।  যেমন নতুন হালাল খাবার কাফেররা খেলে তা নিজেও খেতে পারবো। 

আর আল ওয়ালা আর বারা এর তৃতীয় নাম্বারে ওরা হলো মুমিন ফাসেক। মুমিন তাই আল বারা(তাদের ঈমানের সাথে) ,  ফাসেক তাই আল ওয়ালা(তাদের কাজ থেকে)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...