ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(ক) মুসলমাসদের স্বার্থকে অটুট রেখে কাফিরদের সাথে যেকোনো চুক্তি করা যাবে। শর্ত হল,ইসলাম ও মুসলমান এবং দেশের কোনো প্রকার ক্ষতি হতে পারবে না। আপনার প্রশ্নের যদি ভিন্ন উদ্দেশ্য থাকে,তাহলে আপনি কমেন্টে উল্লেখ করতে পারেন।
অমুসলিমের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ককে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
لاَّ يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاء مِن دُوْنِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللّهِ فِي شَيْءٍ إِلاَّ أَن تَتَّقُواْ مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمُ اللّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللّهِ الْمَصِيرُ
মুমিনগন যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কেন কাফেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহর সাথে তাদের কেন সম্পর্ক থাকবে না। তবে যদি তোমরা তাদের পক্ষ থেকে কোন অনিষ্টের আশঙ্কা কর, তবে তাদের সাথে সাবধানতার সাথে থাকবে আল্লাহ তা’আলা তাঁর সম্পর্কে তোমাদের সতর্ক করেছেন। এবং সবাই কে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে।(সূরা আলে ইমরান-২৮)
কোনো অমুসলিমকে ইসলামের দিকে দীক্ষিত করতে,বা কোনো প্রভাবশালী অমুসলিমের ক্ষতি থেকে নিজেকে হেফাজত করতে তার সাথে বাহ্যিক বন্ধুত্ব রাখা যায়, তবে আন্তরিক বন্ধুত্ব স্থাপন কখনো জায়েয হবে না।
(গ)না জেনে কাফিরদের মত কোনো নাম মুসলমান পিতা মাতা রাখলে তাদের গোনাহ হবে না। তবে জানা পর বদলানোর সুযোগ থাকা সত্তেও না বদলানো উচিৎ হবে না।হ্যা,অমুসলিমদের দেবতা বা তাদের ধর্মীয় নিদর্শন সূচক কোনো শব্দ হলে,এবং তা বহাল রাখলে অবশ্যই মাতাপিতার গোনাহ হবে।আর ধর্মীয় নিদর্শন সূচন না হলে গোনাহ হবে না।তবে বহাল রাখাও উচিৎ হবে।নামের আছরে সন্তানের ভবিষ্যত জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
হাদীস শরীফে এসেছে.....
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋُﻤَﺮَ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻣَﻦْ ﺗَﺸَﺒَّﻪَ ﺑِﻘَﻮْﻡٍ ﻓَﻬُﻮَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ ) ﺭﻭﺍﻩ ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ( ﺍﻟﻠﺒﺎﺱ / 3512 ) ﻗﺎﻝ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺃﺑﻲ ﺩﺍﻭﺩ : ﺣﺴﻦ ﺻﺤﻴﺢ . ﺑﺮﻗﻢ ( 3401
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,রাসুলুল্লাহ বলেন যে ব্যক্তি অন্য গোত্রে (অমুসলিম)-র অনুসরণ করবে সে তাদের-ই অন্তর্ভুক্ত হবে।
(আবু-দাউদ-৩৫১২)ইমদাদুল ফাতাওয়া,৪/২৬৬।
সাদৃশ্য গ্রহণ তিন কযেক ভাবে হতে পারে।
(১)ফিতরী তথা জন্মগত বিষয়ে সাদৃশ্য গ্রহণ। এটা হারাম হবে না।
(২)পদ্ধতির অনুসরণ।যেমন তারা যেভাবে খাবার গ্রহণ করে বা হাটাচলা করে,তাদের এগুলোর অনুসরণ।এগুলো হারাম হবে তখন,যদি পূর্ব থেকেই মুসলমানদের আলাদা কোনো পদ্ধতি থাকে।
(৩)কাফিরদের ধর্মীয় বিষয়ের অনুসরণ। এটা সর্বাবস্থায় হারাম।(ইমদাদুল আহকাম-১/২৮৫)
আবু দাঊদ শরীফে হযরত সামুরা ইব্ন জুনদুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :
ﻣﻦ ﺟﺎﻣﻊ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﺳﻜﻦ ﻣﻌﻪ، ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺜﻠﻪ –
“যে ব্যক্তি অমুলিমদের সাথে চলাফেরা করবে এবং তাদের সাথে বসবাস করবে, সেও তাদের অনুরূপ হবে”। (আবু দাঊদ, কিতাবুদ্দাহায়া)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাইবোন!
কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও শিক্ষা অর্জনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারলে, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে শিক্ষার সুযোগ পায়,তাহলে দু’টি শর্তে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং সেখান থেকে শিক্ষার্জন করা জায়েয হবে।যথাঃ-
(এক)সেখানে আমলী জিন্দিগী তথা, ইসলামী বিধি-বিধান পরিপালনে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে হবে।
(দুই)সেখানকার প্রচলিত অশ্লীলতা, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।
সুতরাং
প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জরুরী যে,তারা প্রথমে নিজ দেশ বা কোনো ইসলামী দেশে লেখাপড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টাপ্রচেষ্টা করবে।
নারী-পুরুষ সবার জন্য একই শর্ত।তবে নারীদের জন্য পৃথক কিছু বিষয় লক্ষ্যণীয়। তারা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে না।এবং অনিরাপদ স্থানে একাকী বসবাস করতে পারবে না।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি দেশে বা কোনো মুসলিম পরিবেশে পড়াশোনার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।যদি মুসলিম দেশ সমূহে আপনি স্কলারশিপ না পান,বা মান-সম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা না হয়,তাহলে আপনি ইস্তেগফারের সাথে দ্বীন পালনের পূর্ণ ব্যত্যয় নিয়ে আপনি অমুসলিম দেশে যেতে পারবেন । আপনার কোনো গোনাহ হবে না।
(চ) কাফিরদের সাথে লেনদেন করা যাবে।এতে কোনো বিধিনিষেধ নাই।
(ছ) কোনো বিষয়ে আপনি আল-ওয়ালা এবং আল-বারা এর হকদারের কথা বলছেন? প্রশ্নটাকে একটু বিস্তারিত কমেন্টে বললে আমাদের জন্য জবাব দিতে সুবিধা হবে?
(জ) না, এটা সুন্নত নয়।