ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত।
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةٍ لاَ أَكُفُّ شَعَرًا وَلاَ ثَوْبًا
.قال الحافظ ابن حجر رحمه الله في "الفتح" : " وَالْكَفْت هُوَ الضَّمّ وَهُوَ بِمَعْنَى الْكَفّ" .
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি সাত অঙ্গে সিজদা্ করতে, সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করতে এবং কাপড় টেনে না ধরতে নির্দেশিত হয়েছি। (সহীহ বোখারী-৮১৬, সহীহ মুসলিম-৪৯০)
এই হাদীসের আলোকের সাধারণ অবস্থায় হাতাকে টেনে উপরের দিকে তুলে নামায পড়াকে মাকরুহ বলা হয়। তাছাড়া সালাফে সালেহীদের সাধারণ মা'মুল ছিল যে, তারা পরিপূর্ণ কাপড় পরিধান করেই নামায পড়তেন। নেককার লোকদের পোষাককে আল্লাহ অত্যান্ত পছন্দ করে থাকেন। সুতরাং শার্ট পরিধান করা কারো মজবুরি হয়, সে যেন লম্বা হাত সম্ভলিত শার্ট বা টি শার্ট পরিধান করে নেয়। হাফ শার্ট পরিহিত অবস্থায় যদি কারো নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে সে নামাযকে পরিত্যাগ করবে না।বরং নামায পড়ে নেবে।তখন নামাযকে পরিত্যাগ করা জায়েয হবে না।
(৩) কুরআনের আয়াতের যে সমস্ত নকশা বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে, তা মূলত অক্ষরের মান হিসেবে লিখিত। আরবী অক্ষরের প্রত্যেকেটির মান রয়েছে। সেই মান হিসেবে একটি আয়াতে যতটি অক্ষর রয়েছে, সবগুলোকে একত্রিত করে হিসেব করে যত হয়, এই যোগফলকে একটি আয়াত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আপনি যে যাদুর কথা উল্লেখ করেছেন, সেই হিসেবে হিসাব করার নিয়ম কোথাও থাকতে পারে। তবে আমাদের বুজুর্গানে কেরাম তথা দেওবন্দের আলেমগণ অক্ষরের মান হিসেবেই তারা এরকম নকশা আকিয়ে থাকেন।
(৪) সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
চুলের বিধি-বিধান সম্ভলিত উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে,বিনা প্রয়োজনে চুল মুন্ডানো উত্তম না চুলকে অবশিষ্ট রাখা উত্তম। তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে-
মুল্লা আলী কারী রাহ এর দুই বক্তব্যর একটি হল,বিনা প্রয়োজনে এমনিতেও চুল রাখার চেয়ে চুল মুন্ডানো উত্তম। আমাদের সালাফদেরকে সময়ে সময় চুল মুন্ডাতে দেখেছি। তারা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সর্বদাই চুল কে মুন্ডাতেন। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত হলো বাবড়ি চুল রাখার মত চুল মুন্ডানোও সুন্নত। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-
https://www.ifatwa.info/1212
(৫)
টুপি পড়া সুন্নাত। টুপি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরেছেন, সাহাবায়ে কেরাম পরেছেন, তাবেয়ীন তাবে-তাবেয়ীন পরেছেন এবং পরবর্তীতে সব যুগেই মুসলিমগণ তা পরিধান করেছেন। টুপি, পাগড়ীর মতোই একটি ইসলামী লেবাস। হাদীসে, আছারে ও ইতিহাসের কিতাবে এ বিষয়ে বহু তথ্য আছে এবং অনেক আলিম-মনীষীর বক্তব্যও আছে। নিম্নে এ সম্পর্কে কিছু দলীল পেশ করা হল।
ইবনুল জাওযী রাহ বলেনঃ
ﻭﻻ ﻳﺨﻔﻰ ﻋﻠﻰ ﻋﺎﻗﻞ ﺃﻥ ﻛﺸﻒ ﺍﻟﺮﺃﺱ ﻣﺴﺘﻘﺒﺢ ﻭﻓﻴﻪ ﺇﺳﻘﺎﻁ ﻣﺮﻭﺀﺓ ﻭﺗﺮﻙ ﺃﺩﺏ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻳﻘﻊ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﺎﺳﻚ ﺗﻌﺒﺪﺍ ﻟﻠﻪ
অর্থাৎ- এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে, মাথা খোলা রাখা একটি নিন্দনীয় ও তিরস্কারপূর্ণ বিষয়,এবং এতে ভদ্রতা ও আদাব লঙ্গিত হয়,তবে হজ্বে ইবাদত হিসেবে ও নিজেকে আল্লাহর সামনে তুচ্ছার্থে মাথা খোলা রাখা হয়।(তালবিসে ইবলিস,২৯৬)
মাথা খোলা রাখা মাকরুহ। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া,১০/১৫৬)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
টুপি ছাড়া নামায পড়া মাকরুহে তানযিহি। মাকরুহ এজন্য খালি মাথাকে মানুষ নিন্দনীয় মনে করে।