আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
488 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম

১) হাফ হাটা শার্ট পরে নামাজ পড়া মাকরুহ নাকি ফুল হাটা শার্ট গুটিয়ে কনই বের করে নামাজ পড়া মাকরুহ?

২) তাবিজ জায়েজ হওয়ার শর্ত কি কি ?

৩) শিকড়ের সন্ধানে বই থেকে পেলাম -

অধ্যায়- " জিন জিগত ও সুলাইমান আ. "

"...ইহুদিধর্মের সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে থাকা জ্ঞানের এই(জাদু বিদ্যা) শাখা মুলত 'Qabbalah' নামে পরিচিত।আপনি যদি এই নাম লিখে সার্চ দেন গুগলে তাহলে দেখবেন, এটা একধরনের অতীন্দ্রিয় শাখা (Mystic Branch),যার মুল থিম হচ্ছে সংখ্যাতত্ত্ব যা দিয়ে নানা ধরনের জাদুবিদ্যা চর্চা করা হয়।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই সংখ্যাতত্তের ব্যাপারটা খুব সূক্ষ্মভাবে ইসলাম ধর্মের মাঝেও প্রবেশ করেছে ..."

তাবিজে সুরার নকশা হিসেবে নাম্বার লেখার বিধান কি ? যিনি লিখবেন তার দ্বীনের অবস্থা কি হবে ?

৪) অনেক মাদ্রাসায় ছাত্রদের বলা হয় যে- টাক হয়ে আসতে , এবং এটাকে সুন্নতি চুল বলা হয় । আমার জানামতে বাবরি চুল হল সুন্নতি চুল । তো মাথা নেরা করাকে সুন্নতি কাটিং বলার হুকুম কি ?

৫) টুপি ছাড়া নামাজ পড়া কোন প্রকার মাকরুহ? মাকরুহ হওয়ার কারণ কি ?

1 Answer

0 votes
by (588,600 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১) 
ইবনু ‘আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত।
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ عَمْرٍو عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةٍ لاَ أَكُفُّ شَعَرًا وَلاَ ثَوْبًا
.قال الحافظ ابن حجر رحمه الله في "الفتح" : " وَالْكَفْت هُوَ الضَّمّ وَهُوَ بِمَعْنَى الْكَفّ" .
 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি সাত অঙ্গে সিজদা্ করতে, সালাতের মধ্যে চুল একত্র না করতে এবং কাপড় টেনে না ধরতে নির্দেশিত হয়েছি। (সহীহ বোখারী-৮১৬, সহীহ মুসলিম-৪৯০) 


এই হাদীসের আলোকের সাধারণ অবস্থায় হাতাকে টেনে উপরের দিকে তুলে নামায পড়াকে মাকরুহ বলা হয়। তাছাড়া সালাফে সালেহীদের সাধারণ মা'মুল ছিল যে, তারা পরিপূর্ণ কাপড় পরিধান করেই নামায পড়তেন। নেককার লোকদের পোষাককে আল্লাহ অত্যান্ত পছন্দ করে থাকেন। সুতরাং শার্ট পরিধান করা কারো মজবুরি হয়, সে যেন লম্বা হাত সম্ভলিত শার্ট বা টি শার্ট পরিধান করে নেয়। হাফ শার্ট পরিহিত অবস্থায় যদি কারো নামাযের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে সে নামাযকে পরিত্যাগ করবে না।বরং নামায পড়ে নেবে।তখন নামাযকে পরিত্যাগ করা জায়েয হবে না।


 এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/5745


(২)তাবিজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/226
(৩) কুরআনের আয়াতের যে সমস্ত নকশা বিভিন্ন কিতাবে রয়েছে, তা মূলত অক্ষরের মান হিসেবে লিখিত। আরবী অক্ষরের প্রত্যেকেটির মান রয়েছে। সেই মান হিসেবে একটি আয়াতে যতটি অক্ষর রয়েছে, সবগুলোকে একত্রিত করে হিসেব করে যত হয়, এই যোগফলকে একটি আয়াত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আপনি যে যাদুর কথা উল্লেখ করেছেন, সেই হিসেবে হিসাব করার নিয়ম কোথাও থাকতে পারে। তবে আমাদের বুজুর্গানে কেরাম তথা দেওবন্দের আলেমগণ অক্ষরের মান হিসেবেই তারা এরকম নকশা আকিয়ে থাকেন। 

(৪) সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
চুলের বিধি-বিধান সম্ভলিত উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে,বিনা প্রয়োজনে চুল মুন্ডানো উত্তম না চুলকে অবশিষ্ট রাখা উত্তম। তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে-
মুল্লা আলী কারী রাহ এর দুই বক্তব্যর একটি হল,বিনা প্রয়োজনে এমনিতেও চুল রাখার চেয়ে চুল মুন্ডানো উত্তম। আমাদের সালাফদেরকে সময়ে সময় চুল মুন্ডাতে দেখেছি। তারা প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে সর্বদাই চুল কে মুন্ডাতেন। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত হলো বাবড়ি চুল রাখার মত চুল মুন্ডানোও সুন্নত। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1212

(৫) 
https://www.ifatwa.info/2277 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
টুপি পড়া সুন্নাত। টুপি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরেছেন, সাহাবায়ে কেরাম পরেছেন, তাবেয়ীন তাবে-তাবেয়ীন পরেছেন এবং পরবর্তীতে সব যুগেই মুসলিমগণ তা পরিধান করেছেন। টুপি, পাগড়ীর মতোই একটি ইসলামী লেবাস। হাদীসে, আছারে ও ইতিহাসের কিতাবে এ বিষয়ে বহু তথ্য আছে এবং অনেক আলিম-মনীষীর বক্তব্যও আছে। নিম্নে এ সম্পর্কে কিছু দলীল পেশ করা হল।

ইবনুল জাওযী রাহ বলেনঃ
ﻭﻻ ﻳﺨﻔﻰ ﻋﻠﻰ ﻋﺎﻗﻞ ﺃﻥ ﻛﺸﻒ ﺍﻟﺮﺃﺱ ﻣﺴﺘﻘﺒﺢ ﻭﻓﻴﻪ ﺇﺳﻘﺎﻁ ﻣﺮﻭﺀﺓ ﻭﺗﺮﻙ ﺃﺩﺏ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻳﻘﻊ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻨﺎﺳﻚ ﺗﻌﺒﺪﺍ ﻟﻠﻪ
অর্থাৎ- এটা কোনো গোপন বিষয় নয় যে, মাথা খোলা রাখা একটি নিন্দনীয় ও তিরস্কারপূর্ণ বিষয়,এবং এতে ভদ্রতা ও আদাব লঙ্গিত হয়,তবে হজ্বে ইবাদত হিসেবে ও নিজেকে আল্লাহর সামনে তুচ্ছার্থে মাথা খোলা রাখা হয়।(তালবিসে ইবলিস,২৯৬)

মাথা খোলা রাখা মাকরুহ। (ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া,১০/১৫৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
টুপি ছাড়া নামায পড়া মাকরুহে তানযিহি। মাকরুহ এজন্য খালি মাথাকে মানুষ নিন্দনীয় মনে করে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+3 votes
1 answer 3,599 views
...