আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
297 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমি গতকাল একটি আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছি আলহামদুলিল্লাহ। আমি যে এলাকায় বসবাস করি সেখানে জনৈক ব্যক্তি একটি মুরগ জবাহ করার উদ্দেশ্যে যখন হাতে ধরে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন হঠাৎ সেই মুরগের স্বাভাবিক ডাক অনেকটা পরিবর্তিত হয়ে আল্লাহ..আল্লাহ..আল্লাহ জিকিরের মত শোনা যেতে থাকে। এই বিষয় টি তিনি মোবাইলে ধারণ করেন এবং আমার মা- যিনি তার চাকরির কাজে সেই লোকের বাড়ির কাছে গেলে, ঐ ব্যক্তি উৎসুক হয়ে নিজেই ভিডিও টি শেয়ার করেন। ভিডিওটি দেখে আমরা সবাই হতবাক হয়ে গেছি, তবে শরীয়ার দৃষ্টিতে বিষয় টি কিভাবে দেখা হয় তা জানার আগ্রহ তৈরি হয় বিধায় iFatwa এর স্মরনাপন্য হলাম। শরীয়ার দৃষ্টিতে ঘটনাটি মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা নিদর্শন হওয়ার গ্রহনযোগ্যতা কতটুকু নাকি ব্যাপারটা কেবলই কাকতালী এ বিষয়ে শরীয়াতের দৃষ্টিকোন পর্যালোচনা করবেন আশা করি।

আপনার সুবিধার্থে ভিডিওর লিংক টি আমি নিচে শেয়ার করছি।

https://www.dropbox.com/s/khe5rm8jlusmluk/inshot_20210527_211142996.mp4?dl=0

উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। আসসালামু আলাইকুম।

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


সুরা বনি ঈসরাইলের ৪৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

تُسَبِّحُ لَہُ السَّمٰوٰتُ السَّبۡعُ وَ الۡاَرۡضُ وَ مَنۡ فِیۡہِنَّ ؕ وَ اِنۡ مِّنۡ شَیۡءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمۡدِہٖ وَ لٰکِنۡ لَّا تَفۡقَہُوۡنَ تَسۡبِیۡحَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ کَانَ حَلِیۡمًا غَفُوۡرًا ﴿۴۴﴾ 

 ‘সাত আকাশ, পৃথিবী ও এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে, সব কিছুই তাঁর (আল্লাহর) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই, যা তাঁর প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তোমরা তাদের পবিত্রতা ও মহিমাকীর্তন বুঝতে পারো না। অবশ্যই তিনি সহিষ্ণু, ক্ষমাশীল।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৪৪)

সুরা নূর এর ৪১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ یُسَبِّحُ لَہٗ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ الطَّیۡرُ صٰٓفّٰتٍ ؕ کُلٌّ قَدۡ عَلِمَ صَلَاتَہٗ وَ تَسۡبِیۡحَہٗ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۴۱﴾ 

আপনি কি দেখেন না যে, আসমানসমূহ ও যমীনে যারা আছে তারা এবং সারবদ্ধভাবে উড্ডীয়মান পাখীরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তার ইবাদাতের ও পবিত্রতা-মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি। আর তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।

ব্যাখ্যাঃ
আয়াতের শুরুতে বলা হয়েছে যে, নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী প্রত্যেক সৃষ্টবস্তু আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণায় মশগুল। এই পবিত্রতা ঘোষণার অর্থ কোন কোন মুফাসসিরের মতে এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা পৃথিবীর প্রত্যেক বস্তু আসমান, যমীন, চন্দ্ৰ-সূৰ্য, গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, উপাদান চতুষ্টয় অগ্নি, পানি, মাটি, বাতাস সবাইকে বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন, সে সর্বক্ষণ সে কাজে ব্যাপৃত আছে। এর চুল পরিমাণও বিরোধিতা করে না। এই আনুগত্যকেই তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা বলা হয়েছে।

কোন কোন তাফসীরবিদ বলেনঃ এটা অবান্তর নয় যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে এতটুকু বোধশক্তি ও চেতনা নিহিত রেখেছেন, যদ্বারা সে তার স্রষ্টা ও প্রভুর পরিচয় জানতে পারে এবং এটাও অবাস্তব নয় যে, তাদেরকে বিশেষ প্রকার বাকশক্তি দান করা হয়েছে ও বিশেষ প্রকার তাসবীহ এবং ইবাদাত শেখানো হয়েছে; যাতে তারা মশগুল থাকে। (كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهُ) এই শেষ বাক্যে এ বিষয়বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আল্লাহ তা'আলার তাসবীহ ও সালাতে সমগ্র সৃষ্টজগতই ব্যাপৃত আছে, কিন্তু প্রত্যেকের সালাত ও তাসবীহর পদ্ধতি ও আকার বিভিন্নরূপ। ফিরিশতাদের পদ্ধতি ভিন্ন, মানুষের পদ্ধতি ভিন্ন এবং উদ্ভিদরা অন্য পদ্ধতিতে সালাত ও তাসবীহ আদায় করে। জড় পদার্থের পদ্ধতিও ভিন্নরূপ। [দেখুনঃ তাবারী, কুরতুবী, সা’দী, ফাতহুল কাদীর]

সুরা আল আম্বিয়ার ৭৯ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

وَّ سَخَّرۡنَا مَعَ دَاوٗدَ الۡجِبَالَ یُسَبِّحۡنَ وَ الطَّیۡرَ ؕ وَ کُنَّا فٰعِلِیۡنَ ﴿۷۹﴾ 
‘আর আমি পর্বতমালা ও পাখিদের দাউদের অধীন করে দিয়েছিলাম, তারা দাউদের সঙ্গে আমার তাসবিহ পাঠ করত। আর এসব আমিই করছিলাম।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৭৯)

★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
এসব বর্ণনা থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায় যে গোটা পৃথিবী মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে।
সুতরাং মুরগীও এরই অন্তর্ভুক্ত , তাই তার থেকে যিকিরের স্পষ্ট আওয়াজ আসা অসম্ভব কিছু নয়।
এটি মহান আল্লাহ তায়ালার কুদরত।
,
তবে আমাদের দেশে এহেন ঘটনার প্রেক্ষিতে যেহেতু শিরক বিদ'আত কাজ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে,তাই উক্ত মুরগীকে দ্রুত জবাই করে খাওয়া উচিত।
যাতে  শিরক বিদ'আত কাজ কর্মের সুযোগ সৃষ্টি না হয়।
,


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম শায়খ। মাশা-আল্লাহ.. জাযাকাল্লাহ.. তাবারাকাল্লাহ.. অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার রেফারেন্স সংবলিত উত্তরের জন্য। আশা করছি, শেয়ারকৃত লিংক থেকে আপনি ভিডিওটি দেখেছেন। এ সম্পর্কে আমার আরেকটি সম্পূরক প্রশ্ন ছিল - আসলে আমি এই দৃশ্যটি দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে সোশাল মিডিয়ায় ভিডিওটি শেয়ার করেছিলাম, এবং সাথে সুরা বনী-ঈসরাইলের ৪৪ নং আয়াত, এবং সুরা আর-রহমানের ১৩ নং আয়াতের মাধ্যমে বিষয়টিকে আল্লাহ তা’য়ালার নিদর্শন হিসেবে উল্লেখ পূর্বক কিছু কথা লিখেছিলাম যাতে করে সেটা অবিশ্বাসীদের জন্য একটা দাওয়াতের মাধ্যম হয়। তবে অনেকেই উক্ত ঘটনায় আল্লাহ সুবহানু তা’য়ালার কুদরাতের উপলব্ধি না করে বরং এটা মুরগের স্বাভাবিক আচরণ হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন।
অতঃপর শরীয়াতের দৃষ্টিতে বিষয়টির ব্যাখ্যা জানার উদ্দেশ্যে এই প্লাটফর্ম এ এসেছি।

শায়খ,  
এমতাবস্থায় আমার কি করা উচিৎ? আমার কি ভিডিওটি সোশাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে ফেলা উচিৎ? 

সোশাল মিডিয়ার উক্ত পোস্ট -

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...