সুরা বনি ঈসরাইলের ৪৪ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
تُسَبِّحُ لَہُ السَّمٰوٰتُ السَّبۡعُ وَ الۡاَرۡضُ وَ مَنۡ فِیۡہِنَّ ؕ وَ اِنۡ مِّنۡ شَیۡءٍ اِلَّا یُسَبِّحُ بِحَمۡدِہٖ وَ لٰکِنۡ لَّا تَفۡقَہُوۡنَ تَسۡبِیۡحَہُمۡ ؕ اِنَّہٗ کَانَ حَلِیۡمًا غَفُوۡرًا ﴿۴۴﴾
‘সাত আকাশ, পৃথিবী ও এগুলোর মধ্যে যা কিছু আছে, সব কিছুই তাঁর (আল্লাহর) পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। আর এমন কিছু নেই, যা তাঁর প্রশংসা, পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে না। কিন্তু তোমরা তাদের পবিত্রতা ও মহিমাকীর্তন বুঝতে পারো না। অবশ্যই তিনি সহিষ্ণু, ক্ষমাশীল।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৪৪)
সুরা নূর এর ৪১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اَلَمۡ تَرَ اَنَّ اللّٰہَ یُسَبِّحُ لَہٗ مَنۡ فِی السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ الطَّیۡرُ صٰٓفّٰتٍ ؕ کُلٌّ قَدۡ عَلِمَ صَلَاتَہٗ وَ تَسۡبِیۡحَہٗ ؕ وَ اللّٰہُ عَلِیۡمٌۢ بِمَا یَفۡعَلُوۡنَ ﴿۴۱﴾
আপনি কি দেখেন না যে, আসমানসমূহ ও যমীনে যারা আছে তারা এবং সারবদ্ধভাবে উড্ডীয়মান পাখীরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তার ইবাদাতের ও পবিত্রতা-মহিমা ঘোষণার পদ্ধতি। আর তারা যা করে সে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত।
ব্যাখ্যাঃ
আয়াতের শুরুতে বলা হয়েছে যে, নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী প্রত্যেক সৃষ্টবস্তু আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণায় মশগুল। এই পবিত্রতা ঘোষণার অর্থ কোন কোন মুফাসসিরের মতে এই যে, আল্লাহ্ তা'আলা পৃথিবীর প্রত্যেক বস্তু আসমান, যমীন, চন্দ্ৰ-সূৰ্য, গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, উপাদান চতুষ্টয় অগ্নি, পানি, মাটি, বাতাস সবাইকে বিশেষ বিশেষ কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন এবং যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করেছেন, সে সর্বক্ষণ সে কাজে ব্যাপৃত আছে। এর চুল পরিমাণও বিরোধিতা করে না। এই আনুগত্যকেই তাদের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা বলা হয়েছে।
কোন কোন তাফসীরবিদ বলেনঃ এটা অবান্তর নয় যে, আল্লাহ্ তা'আলা প্রত্যেক বস্তুর মধ্যে এতটুকু বোধশক্তি ও চেতনা নিহিত রেখেছেন, যদ্বারা সে তার স্রষ্টা ও প্রভুর পরিচয় জানতে পারে এবং এটাও অবাস্তব নয় যে, তাদেরকে বিশেষ প্রকার বাকশক্তি দান করা হয়েছে ও বিশেষ প্রকার তাসবীহ এবং ইবাদাত শেখানো হয়েছে; যাতে তারা মশগুল থাকে। (كُلٌّ قَدْ عَلِمَ صَلَاتَهُ) এই শেষ বাক্যে এ বিষয়বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, আল্লাহ তা'আলার তাসবীহ ও সালাতে সমগ্র সৃষ্টজগতই ব্যাপৃত আছে, কিন্তু প্রত্যেকের সালাত ও তাসবীহর পদ্ধতি ও আকার বিভিন্নরূপ। ফিরিশতাদের পদ্ধতি ভিন্ন, মানুষের পদ্ধতি ভিন্ন এবং উদ্ভিদরা অন্য পদ্ধতিতে সালাত ও তাসবীহ আদায় করে। জড় পদার্থের পদ্ধতিও ভিন্নরূপ। [দেখুনঃ তাবারী, কুরতুবী, সা’দী, ফাতহুল কাদীর]
সুরা আল আম্বিয়ার ৭৯ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَّ سَخَّرۡنَا مَعَ دَاوٗدَ الۡجِبَالَ یُسَبِّحۡنَ وَ الطَّیۡرَ ؕ وَ کُنَّا فٰعِلِیۡنَ ﴿۷۹﴾
‘আর আমি পর্বতমালা ও পাখিদের দাউদের অধীন করে দিয়েছিলাম, তারা দাউদের সঙ্গে আমার তাসবিহ পাঠ করত। আর এসব আমিই করছিলাম।’ (সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৭৯)
★★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
এসব বর্ণনা থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায় যে গোটা পৃথিবী মহান আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করে।
সুতরাং মুরগীও এরই অন্তর্ভুক্ত , তাই তার থেকে যিকিরের স্পষ্ট আওয়াজ আসা অসম্ভব কিছু নয়।
এটি মহান আল্লাহ তায়ালার কুদরত।
,
তবে আমাদের দেশে এহেন ঘটনার প্রেক্ষিতে যেহেতু শিরক বিদ'আত কাজ হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে,তাই উক্ত মুরগীকে দ্রুত জবাই করে খাওয়া উচিত।
যাতে শিরক বিদ'আত কাজ কর্মের সুযোগ সৃষ্টি না হয়।
,