ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
একজনের উপর অন্যজনের নাফক্বাহ/খোরপোষ ওয়াজিব হওয়ার সবব বা কারণ সর্বমোট তিনটি।
(১)বৈবাহিক সম্পর্ক
(২)আত্মীয়তার সম্পর্ক
(৩)মিলকিয়্যাত(গোলাম-মালিক)এর সম্পর্ক।
উপরোক্ত তিন প্রকারের মধ্যে প্রশ্নে বর্ণিত ভাই ভাই বিষয়টা দ্বিতীয় প্রকার তথা আত্মীয়তার সম্পর্কের আওতাধীন।
দ্বিতীয় প্রকারে পিতা-মাতা ছাড়াও আরও অনেকের জন্য নাফক্বাহ ওয়াজিব হয়।
এ বিষয়ে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে,
وَالنَّفَقَةُ لِكُلِّ ذِي رَحِمٍ مَحْرَمٍ إذَا كَانَ صَغِيرًا فَقِيرًا، أَوْ كَانَتْ امْرَأَةً بَالِغَةً فَقِيرَةً، أَوْ كَانَ ذَكَرًا فَقِيرًا زَمِنًا، أَوْ أَعْمَى وَيَجِبُ ذَلِكَ عَلَى قَدْرِ الْمِيرَاثِ وَيُجْبَرُ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ وَتُعْتَبَرُ أَهْلِيَّةُ الْإِرْثِ لَا حَقِيقَتُهُ كَذَا فِي النُّقَايَةِ.
প্রত্যেক আত্মীয়র জন্য নিকটত্বের ধারাবাহিতায় নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে,যদি তারা নাবালিগ ও ফকির হয়।অথবা ফকির বালিগা মহিলা হয়।অথবা বার্ধক্য বা রোগগ্রস্ত উপার্জনে অক্ষম(ফকির)অথবা অন্ধ হয়।এবং তা মিরাসের ভিত্তিতে ওয়াজিব হবে।অর্থ্যাৎ উক্ত ধনী ব্যক্তিকে তাদের উপর তাদের কাছ থেকে তার জন্য প্রাপ্য মিরাস অনুযায়ী নাফক্বাহ দিতে তাকে বাধ্য করা হবে।এক্ষেত্রে ওরাসতের আহল হওয়াই যতেষ্ট বাস্তবে ওয়ারিছ হওয়া শর্ত নয়।নুক্বায়া কিতাবে এভাবেই বর্ণিত রয়েছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৫৬৬)
প্রাপ্তবয়স্কা মহিলা গরিব/ফকির হলে কার উপর তার নাফক্বাহ ওয়াজিব?
এমন প্রশ্নের জবাবে বলা যায়,
প্রথমে তার পিতার উপর তারপর স্বামীর উপর তারপর সন্তানের উপর।এদের মধ্যে যদি কেউ জীবিত না থাকে অথবা নাফক্বাহ দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে, তাহলে ওরাসতে নিকটত্বের ভিত্তিতে নিকটাত্মীয় উপর উক্ত মহিলার নাফক্বাহ ওয়াজিব হবে।
وَتَجِبُ نَفَقَةُ الْإِنَاثِ الْكِبَارِ مِنْ ذَوِي الْأَرْحَامِ، وَإِنْ كُنَّ صَحِيحَاتِ الْبَدَنِ إذَا كَانَ بِهِنَّ حَاجَةٌ إلَى النَّفَقَةِ كَذَا فِي الذَّخِيرَةِ
প্রাপ্তবয়স্কা মহিলার নাফক্বাহ ওরাসতে নিকটত্বের ভিত্তিতে নিকটাত্মীয় উপর ওয়াজিব হবে,যখন তার নাফক্বাহর প্রয়োজন হবে।।যদিও সে শারিরিকভাবে সুস্থ থাকে না কেন।
রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত আছে....
وَ) تَجِبُ أَيْضًا (لِكُلِّ ذِي رَحِمٍ مَحْرَمٍ صَغِيرٍ أَوْ أُنْثَى) مُطْلَقًا (وَلَوْ) كَانَتْ الْأُنْثَى (بَالِغَةً) صَحِيحَةً
وفي ردالمحتار تحت قوله )مطلقا(
وَالْمُرَادُ بِالصَّحِيحَةِ، الْقَادِرَةُ عَلَى الْكَسْبِ، لَكِنْ لَوْ كَانَتْ مُكْتَسِبَةً بِالْفِعْلِ كَالْقَابِلَةِ وَالْمُغَسِّلَةِ لَا نَفَقَةَ لَهَا كَمَا مَرَّ (
ভাবার্থঃউপার্জনে সক্ষম,সুস্থ, পূর্ণবয়স্ক মহিলার খোরপোষ পিতা-স্বামী-সন্তান না থাকা অবস্থায় নিকটাত্মীয়র উপর ওয়াজিব।কিন্ত যদি মহিলা শরীয়ত সমর্থিত কোনো কাজে প্রথম থেকেই নিয়োজিত থাকে, তাহলে তার নাফক্বাহ অন্যর উপর ওয়াজিব হবেনা।(রদ্দুল মুহতারা-৩/৬২৭)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদি কোনো ভাই শতচেষ্টা করার পরও নিজ ফ্যমিলিকে চালাতে ব্যর্থ হয়, অন্যদিকে তার ভাই বিত্তবান থাকে, তাহলে বিত্তবান ভাইয়ের উপর তার অসামর্থ্যবান ভাইকে লালন পালন করা ওয়াজিব। এমতাবস্থায় জায়গা জমি খরিদ আপাতত ভাইকে জীবন পরিচালনা করার একটা ব্যবস্থা করে দেওয়া তার উপর ওয়াজিব।