আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
456 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (44 points)
অনেক সময় মসজিদে তাবলীগের লোক এসে ৩ দিনের জন্য নেওয়ার জন্য অনেক জোরাজুরি করে নাম লিখার জন্য বলে।মানুষ কে দাওয়াত জন্য বলে বেশি বেশি।এখন কথা হলো আমি মোটামুটি দ্বীন প্যাক্টিস করছি আলহামদুলিল্লাহ। এখন কি আমার তাবলীগে গিয়েই মানুষ কে দাওয়াত দেওয়া জরুরি??আমি যদি দাওয়াত না দিয়ে নিজে পরিপূর্ণ দ্বীনদার হওয়ার চেষ্টা করি এতে কি আমার কোনো গুণাহ হবে??

২-- এছাড়া তাবলীগে ফাযায়েল আমল,ফাযায়েল সাদাকাত থেকে আলোচনা হয় অনেক আলেম থেকে শুনছে অনেক গুলো হাদীসে এখানে সমস্যা আছে।তাছাড়া হাদীস গুলোতে কোনো রেফারেন্স ও দেয়া নাই।তাই কনফিউশন হয়ে যাই।তাই তাবলীগ এসব জিনিস ভাল লাগে না বলে তেমন যাওয়া ও হয় না।।

এসব কারণে তাবলীগ থেকে দূর থাকি।কিন্তু কোন বিদ্বেষ নেই তাদের প্রতি।এমন করা কি ঠিক?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)https://www.ifatwa.info/703 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ সমস্ত মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া। তথা কিছুসংখ্যক মুসলমান আদায় করে নিলে সবার উপর থেকে আদায় হয়ে যায়।তবে ব্যক্তিগত ভাবে সবাইকে নিজ নিজ অন্তর পবিত্র রাখা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজ অন্তরকে হেফাজতে রাখা ফরযে আইন। (আহকামুল কুরাআন-জাসসাস;২/৩১৫,ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া-২/৪৩৮)

পরিবারের সদস্য ব্যতিত অন্য কাউকে দ্বীনের দাওয়াত না দিলে আখেরাতে জবাব দিতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, 

শরীয়ত যাকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অভিভাবক নিযুক্ত করেছ, তার উপর ওয়াজিব অধীনস্থ সবাইকে দ্বীনের দিকে নিয়ে আসা।এর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা।নিজ অধীনস্থ ব্যতীত অন্য সবাইকে দাওয়াত দেয়া ফরযে কেফায়া।মুসলমানদের যে কোনো একজনকে আদায় করতে হবে।কেউ একজন আদায় করে নিলে সমস্ত মুসলমানের উপর থেকে দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। নতুবা সবাইকে এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।তথা সবাই গোনাহগার হবে।যে বা যারা এই মহান দায়িত্ব আদায় করবে তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত রহমত আর অশেষ বিনিমেয়ের ভান্ডার।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাওয়াত ও তাবলীগে গিয়ে ফরযে কেফায়ার দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়া অত্যান্ত সওয়াবের কাজ। দাওয়াত ও তাবলীগে যাওয়া ফরযে আইন নয়। সুতরাং প্রয়োজনে না যাওয়ার রুখসত রয়েছে। তবে নিজ আত্মশুদ্ধির জন্য হয়তো দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে সময় লাগানো বা কোনো নেককার লোকের সুহবতে কিছু সময় কাটানো অত্যান্ত জরুরী। 

https://www.ifatwa.info/1037 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
আল্লাহ তা'আলা কুরআনে কারীমে ঘোষনা দেন-
ﻭَﺫَﺭُﻭﺍْ ﻇَﺎﻫِﺮَ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺑَﺎﻃِﻨَﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻜْﺴِﺒُﻮﻥَ ﺍﻹِﺛْﻢَ ﺳَﻴُﺠْﺰَﻭْﻥَ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﻘْﺘَﺮِﻓُﻮﻥَ
তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ কর। নিশ্চয় যারা গোনাহ করেছে, তারা অতিসত্বর তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাবে।(সূরা আন'আম-১২০)………………..
মোটকথাঃ 
শিক্ষাগ্রহণ-ই তাসাউফ বা সুফীবাদের মূল হাকিকত।মুরিদ করা বা হওয়া মূল উদ্দেশ্য নয়,বরং সংশোধন করা বা হওয়াই মূল উদ্দেশ্য।মুরিদ হওয়াকে প্রাতিষ্টানিক ভর্তির সাথে তুলনা করা যেতে পারে।কেউ প্রাতিষ্টানিক ভর্তির মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করে।আবার কেউবা প্রাতিষ্ঠানিক ভর্তি ছাড়াই জ্ঞানার্জন করতে সক্ষম হয়।বিস্তারিত জানতে দেখুন-(আহসানুল ফাতাওয়া-১/৫৪৬)

তাসাউফ বা সুফীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তথা বুজুর্গানে কেরামগণ সাধারণত কুরআন-হাদীসের আলোকেই লোকদেরকে শিক্ষা প্রদান করে গেছেন।তবে এর মধ্যেও কারো কাছ থেকে কিছু অতিরঞ্জন শোনা যায়।সেজন্য এটাই বলা যায় যে,কুরআন-হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো মতবাদ বা পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য হবে না। (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাওয়াত ও তাবলীগে সময় লাগানো ফরয নয়, সুতরাং না গেলে গোনাহ হবে না। হ্যা, তাবলীগে সময় লাগানো অত্যান্ত জরুরী। 

(২)https://www.ifatwa.info/459 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফযিলত বিষয়ে যঈফ হাদীসের উপরও আ'মল করা যায়,যেমন বর্ণিত রয়েছে,
ইমাম আহমাদ সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন-
ﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﺷﺪﺩﻧﺎ ﻭﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﻀﺎﺋﻞ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ ﺗﺴﺎﻫﻠﻨﺎ
অর্থঃ যখন আমরা হালাল – হারামে রেওয়ায়েত করি (সনদে খুব) কড়াকড়ি করি। আর যখন ফযীলাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেওয়ায়েত করি শিথিলতা করি।(হাফেয সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/২৯৮)

মোল্লা আলী কারী (রহঃ) বলেন,
যঈফ হাদীস ফাযায়েলে আমালে গ্রহণযোগ্য  (আলমাউজূআত, মোল্যা কারী, পৃঃ ৭৩)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ফাযাইলে আ’মল এবং ফাযাইলে সাদাকাত কিতাবে বর্ণিত হাদীস দ্বারা শরীয়তের কোনো বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। বিধায় এ যঈফ হাদীস দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 265 views
...