ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ সমস্ত মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া। তথা কিছুসংখ্যক মুসলমান আদায় করে নিলে সবার উপর থেকে আদায় হয়ে যায়।তবে ব্যক্তিগত ভাবে সবাইকে নিজ নিজ অন্তর পবিত্র রাখা ও শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজ অন্তরকে হেফাজতে রাখা ফরযে আইন। (আহকামুল কুরাআন-জাসসাস;২/৩১৫,ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া-২/৪৩৮)
পরিবারের সদস্য ব্যতিত অন্য কাউকে দ্বীনের দাওয়াত না দিলে আখেরাতে জবাব দিতে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে বলা যায়,
শরীয়ত যাকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অভিভাবক নিযুক্ত করেছ, তার উপর ওয়াজিব অধীনস্থ সবাইকে দ্বীনের দিকে নিয়ে আসা।এর জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা।নিজ অধীনস্থ ব্যতীত অন্য সবাইকে দাওয়াত দেয়া ফরযে কেফায়া।মুসলমানদের যে কোনো একজনকে আদায় করতে হবে।কেউ একজন আদায় করে নিলে সমস্ত মুসলমানের উপর থেকে দায়িত্ব আদায় হয়ে যাবে। নতুবা সবাইকে এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে।তথা সবাই গোনাহগার হবে।যে বা যারা এই মহান দায়িত্ব আদায় করবে তাদের জন্য রয়েছে অফুরন্ত রহমত আর অশেষ বিনিমেয়ের ভান্ডার।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাওয়াত ও তাবলীগে গিয়ে ফরযে কেফায়ার দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়া অত্যান্ত সওয়াবের কাজ। দাওয়াত ও তাবলীগে যাওয়া ফরযে আইন নয়। সুতরাং প্রয়োজনে না যাওয়ার রুখসত রয়েছে। তবে নিজ আত্মশুদ্ধির জন্য হয়তো দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে সময় লাগানো বা কোনো নেককার লোকের সুহবতে কিছু সময় কাটানো অত্যান্ত জরুরী।
আল্লাহ তা'আলা কুরআনে কারীমে ঘোষনা দেন-
ﻭَﺫَﺭُﻭﺍْ ﻇَﺎﻫِﺮَ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻭَﺑَﺎﻃِﻨَﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﻜْﺴِﺒُﻮﻥَ ﺍﻹِﺛْﻢَ ﺳَﻴُﺠْﺰَﻭْﻥَ ﺑِﻤَﺎ ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﻳَﻘْﺘَﺮِﻓُﻮﻥَ
তোমরা প্রকাশ্য ও প্রচ্ছন্ন গোনাহ পরিত্যাগ কর। নিশ্চয় যারা গোনাহ করেছে, তারা অতিসত্বর তাদের কৃতকর্মের শাস্তি পাবে।(সূরা আন'আম-১২০)………………..
মোটকথাঃ
শিক্ষাগ্রহণ-ই তাসাউফ বা সুফীবাদের মূল হাকিকত।মুরিদ করা বা হওয়া মূল উদ্দেশ্য নয়,বরং সংশোধন করা বা হওয়াই মূল উদ্দেশ্য।মুরিদ হওয়াকে প্রাতিষ্টানিক ভর্তির সাথে তুলনা করা যেতে পারে।কেউ প্রাতিষ্টানিক ভর্তির মাধ্যমে জ্ঞানার্জন করে।আবার কেউবা প্রাতিষ্ঠানিক ভর্তি ছাড়াই জ্ঞানার্জন করতে সক্ষম হয়।বিস্তারিত জানতে দেখুন-(আহসানুল ফাতাওয়া-১/৫৪৬)
তাসাউফ বা সুফীবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তথা বুজুর্গানে কেরামগণ সাধারণত কুরআন-হাদীসের আলোকেই লোকদেরকে শিক্ষা প্রদান করে গেছেন।তবে এর মধ্যেও কারো কাছ থেকে কিছু অতিরঞ্জন শোনা যায়।সেজন্য এটাই বলা যায় যে,কুরআন-হাদীসের সাথে সাংঘর্ষিক কোনো মতবাদ বা পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য হবে না। (শেষ)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
দাওয়াত ও তাবলীগে সময় লাগানো ফরয নয়, সুতরাং না গেলে গোনাহ হবে না। হ্যা, তাবলীগে সময় লাগানো অত্যান্ত জরুরী।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
ফযিলত বিষয়ে যঈফ হাদীসের উপরও আ'মল করা যায়,যেমন বর্ণিত রয়েছে,
ইমাম আহমাদ সহ অন্যান্য মুহাদ্দিসীনে কেরাম বলেন-
ﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻼﻝ ﻭﺍﻟﺤﺮﺍﻡ ﺷﺪﺩﻧﺎ ﻭﺇﺫﺍ ﺭﻭﻳﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﻔﻀﺎﺋﻞ ﻭﻧﺤﻮﻫﺎ ﺗﺴﺎﻫﻠﻨﺎ
অর্থঃ যখন আমরা হালাল – হারামে রেওয়ায়েত করি (সনদে খুব) কড়াকড়ি করি। আর যখন ফযীলাত ইত্যাদির ক্ষেত্রে রেওয়ায়েত করি শিথিলতা করি।(হাফেয সুয়ূতী, তাদরীবুর রাবী ১/২৯৮)
মোল্লা আলী কারী (রহঃ) বলেন,
যঈফ হাদীস ফাযায়েলে আমালে গ্রহণযোগ্য (আলমাউজূআত, মোল্যা কারী, পৃঃ ৭৩)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ফাযাইলে আ’মল এবং ফাযাইলে সাদাকাত কিতাবে বর্ণিত হাদীস দ্বারা শরীয়তের কোনো বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। বিধায় এ যঈফ হাদীস দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না।