আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
324 views
in পবিত্রতা (Purity) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম।
 সম্মানিত মুফতি সাহেব, আপনি দয়া করে আমার সমস্যাটার একটা সমাধান বলে দিয়েন।
আমি এই অবস্থা  থেকে মুক্তি চাই।

 ★আমি হুরমত  সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম  না এরজন্য  কোন সমস্যা ও ছিল না।কিন্তুু  জানার পর আমার খুব সমস্যা হচ্ছে।

আমার ভাব টা এমন আমি না জানার ফলে কোন সমস্যা হয় নি এতবছর, কিন্তুু এখন জানছি দেখে সমস্যা  হয়ে যাবে।
আমি আপনাকে বুঝাইতে পারবো না আমি যে কি অবস্থায় আছি।আগে যেসব হওয়া তো দূরের কথা,এগুলো যে চিন্তাও করা যায় তাও আমার মাথায় আসে নাই।
আর সেই আমি এগুলো জানার পর বাবাকে আর স্পর্শ  করতে পারতেছি  না।
সত্যি, আমি নিজে কিছু চিন্তা  করতে চাই না।
আমার মনে জোড় করে,মনের অজান্তে বাজে চিন্তা আসতে চায়।আমি নিজেই বুঝতে পারি শয়তান আমার সাথে প্রচুর শয়তানি করতেছে।তখন দোয়া পড়েও আমি শান্তি পাচ্ছি না।
বাবার হাতের  স্পর্শ  পেলেই
এখন আমার কেমন জানি লাগে,মনে জোড় করে খারাপ চিন্তা  চলে আসতে চায়,বাবার স্পর্শ  পেলেই মনে হয়, আমার ভিতর খারাপ চিন্তা  চলে আসলো,হুরমত হয়ে গেলো।
আমি খুব অস্বস্তিতে আছি।
আমার এবং আমার বাবার সুন্দর,  পবিত্র  সম্পর্ক আমার কারণে কেমন জানি হয়ে গেছে।
উদাহরণস্বরূপঃ
আমি আমার বাবার চোখের ড্রপ দেওয়ার জন্য  চোখ  যতটুকু স্পর্শ  করতে হয় তাও করতে পারতেছি  না
আমার বাবা আমাকে বলেঃ উদাহরনস্বরূপ "মা,আমাকে টুপিটা পড়াইয়া দেন,মাস্কটা পরাইয়া দেন।"
আমি পারতেছি না,আমার সমস্যা হচ্ছে অথচ যা আগে ছিল নিত্যদিনের স্বাভাবিক  ব্যাপার।

আমি আমার বাবার হাত থেকে ব্যাগটা যে নিবো,তাও স্বাভাবিকভাবে পারতেছি না।
আমার বাবা বয়স্ক মানুষ, তার অনেক পায়ের  হাঁটু ব্যাথা করে,রাতের বেলা ঘুৃমাইতে পারে না।বাবা,আমাকে প্রায়ই বলেঃ "মা আমার হাঁটু টা একটু  টিপে দোয়া পইড়া ফু্ঁ দিয়ে দেন না।আগে আমি স্বচ্ছন্দে কাজটা করতাম,কোন সমস্যাই হতো না।

কিন্তু এখন আর সম্ভব হচ্ছে না,আমার তো স্পর্শ  লাগলেই মনের অনিচ্ছা সত্বে, মনের বিরুদ্ধে  খারাপ  চিন্তা চলে আসতে চায়,অস্বস্থি  লাগে,ভয় লাগে
যা আগে কখনোই হয় নি।


আমি কি আমার বাবার সাথে আর কখনো স্বাভাবিক  সম্পর্ক  ফিরে পাবো না???

মনের খুশিতে বাবাকে সেবা করতে পারবো না???

এমন হলে তো আমার জীবম পরিচালনাই কঠিন হইয়া যাবে।

১)আমি কি করবো????

২)আমার বাবা যদি আর কখনো তার পায়ের হাঁটুটা একটু টিপে দিতে বলে আমি কি আমার বাবার  পায়ের হাঁটুর পরিধেয় বস্ত্রের উপর আরেকটা  কাপড়  রেখে তার উপর টিপে দিবো যাতে মনে কোন  সন্দেহ আসলেও কোন সমস্যা না হয়?????? দয়া করে জানাবেন।


৩)আমার আরও  চিন্তা  হয়,আমার যখন ইনশাআল্লাহ বিয়ে  হবে তখন   যদি ছেলে- মেয়ে হয় তখন আমি তাদের সাথেও স্বাভাবিক  ব্যবহার করতে পারবো কি না।
ভবিষ্যত স্বামী,ছেলে,মেয়েকে নিয়ে এখনই আমার প্রবল দুশ্চিন্তা  হয়,যদি কেউ হুরমতের শর্তে পড়ে  যায়।

আমার  ভবিষ্যত স্বামী  যদি এসব ব্যাপার না জানে,আমার কি বিয়ের পর তাকে এসব বলা উচিত? বললে আমার মতো যদি এমন সমস্যায় পড়ে  যায়,তাহলে???
নাকি আমার কিছুই বলা উচিত  না।
সম্পূর্ণ আল্লাহর  উপর  ভরশা করা উচিত, কারণ  এইসব বললে হিতে বিপরীত  হতে পারে।
আল্লাহ  যদি  একজন সৎচরিত্রবান আমার ভাগ্যে লিখেন তাহলে এমনেও এসব সংগঠিত হবে না,তাই না?
৪) ইসলাম  কি ছেলে- মেয়ে বালেগ হলে তাদের  এ ব্যাপারে জানাতে বলে???
কিন্তু ৯ বছরের  মেয়ে এবং  ১২ বছরের  ছেলে কে এসব বিষয়ে তো মা হয়ে বলাও যাবে না,তারা তো এসব এতো হিসাব- নিকাশ  বুঝবেও না।
অহেতুক  দুশ্চিন্তায় পড়ে যেতে পারে তাই না??সারাক্ষণ এসব নিয়েই পরে ভাববে তাই না?
আমার মতো সমস্যায় যদি পড়ে যায়????

কি করা উচিত , কি করা উচিত  না,আমাকে জানিয়ে  বাধিত করবেন।

1 Answer

0 votes
by (706,240 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।
শর্তগুলো হল,
১–সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

২–স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।
পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
 وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)

৩–স্পর্শ করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার আগে বা শেষে, হাত ছেড়ে দেওয়ার আগে বা পর যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও নিষিদ্ধতার সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

৪–স্পর্শ করার পর উদ্ভূত উত্তেজনা স্থীর হওয়ার পূর্বেই বীর্যপাত না হতে হবে। যদি উত্তেজনা হওয়ার সাথে সাথেই বীর্যপাত হয়ে যায়, তাহলেও নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- هذا إذا لم ينزل فلو أنزل مع مس أو نظر فلا حرمة به بفتى
وفى رد المحتار- قوله : فلا حرمة ) لأنه بالإنزال تبين أنه غير مفض إلى الوطء هداية .
قال في العناية : ومعنى قولهم إنه لا يوجب الحرمة بالإنزال أن الحرمة عند ابتداء المس بشهوة كان حكمها موقوفا إلى أن يتبين بالإنزال ، فإن أنزل لم تثبت ، وإلا ثبت(الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/109

وكذا المقبلات، أو الممسوسات بشهوة لأصوله، أو فروعه (رد المحتار-4/100)
لأن حرمة المصاهرة إذا ثبتت لا تسقط أبدا (رد المحتار-4/109)

৫–মহিলার বয়স ৯ বছর থেকে কম না হতে হবে। আর পুরুষের বয়স ১২ বছর থেকে কম না হতে হবে। {হুরমতে মুসাহারাত-১৯}
উপরোক্ত ৫টি শর্ত পাওয়া গেলে তাহলে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে গেছে।চায় যে স্পর্শ করেছে সে ঘুমন্ত হোক বা সজাগ হোক।তবে স্বপ্নে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরোক্ত শর্তাদি পাওয়া গেলে হুরমতে মুসাহারা প্রমাণিত হবে। নতুবা হুরমতে মুসাহারা প্রমাণিত হবে না। আপনি আপনার বাবার হাটু টিপে দেওয়ার মুহুর্তে কোনো শক্ত কাপড় হাটুর উপর রেখে টিপিয়ে দিবেন। এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়গুলো সামনে রেখে সতর্কতার সাথে চলাফেরা করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...