আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
318 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (23 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
1) মুহতারাম, আপনাদের হুরমত সম্পর্কিত ফতোয়াগুলো পড়ে,  আমি ৫টি শর্তের মধ্যে  ১নং  শর্তটা নিজের ভাষায় আপনার কাছে  বুঝতে  চাচ্ছি।
৫টি শর্তের ১নং শর্ত আমার ভাষায়ঃ

 হুরমতের হবে তখনই,যখন সহবাসের কামভাব থাকবে।
কিন্তু
যাকে স্পর্ষ করা হয়েছে তার প্রতি  যদি সহবাসের  কামভাব/আকাঙ্খা   না থাকে অর্থাৎ যাকে স্পর্শ  করা হয়েছে তার সাথে সহবাস করবো এমন ইচ্ছা যদি না থাকে তাহলে স্পর্শ  অথবা দৃষ্টি  দ্বারা  হুরমত হবে না।

★এবং যদি সহবাসের  কামভাব নিয়ে স্পর্ষ করেও থাকে কিন্তু দুইজনের লজ্জাস্থানের মধ্যে  যদি  শরীরের গরম অনুভূত না হয় এমন  মোটা কাপড়ের ব্যবধান থাকে তাহলেও হুরমত প্রমাণিত হবে না।

আমার বুঝাটা কি ঠিক আছে???

2)  ফতোয়াগুলোতে হুরমতের শর্তগুলোতে যে স্পর্শের কথা বলা হয় সে স্পর্শ  বলতে কি লজ্জাস্থান স্পর্শ করা বোঝায়???

নাকি শরীরের যে কোন অঙ্গ- প্রতঙ্গই স্পর্শ করা বোঝায়???

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


আমরা পূর্বের কিছু ফতোয়াতে উল্লেখ করেছি যে,    
হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

বিস্তারিত জানুনঃ 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
স্পর্শ করা বা অথবা লজ্জাস্থানের ভিতরের অংশের দিকে দৃষ্টি করার দ্বারা হুরমত ঐ সময়েই সাব্যস্ত হবে,যখন উপরে উল্লেখিত পদ্ধতির উত্তেজনা উভয়ের কাহারো মধ্যে আসে।
,
এমন উত্তেজনা না আসলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা। 
,

★প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে যে  এবং যদি সহবাসের  কামভাব নিয়ে স্পর্ষ করেও থাকে কিন্তু দুইজনের লজ্জাস্থানের মধ্যে  যদি  শরীরের গরম অনুভূত না হয় এমন  মোটা কাপড়ের ব্যবধান থাকে তাহলেও হুরমত প্রমাণিত হবে না।

আপনার বুঝটা পুরোপুরি  ঠিক নয়।
কামভাব নিয়ে শরীরের যেখানেই স্পর্শ করুক,মোটা কাপড়ের আবরন থাকলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।    

(০২)
শরীরের যে কোন অঙ্গ- প্রতঙ্গই স্পর্শ করা বুঝায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম। 
সম্মানিত  মুফতি সাহেব, 
বিনীতভাবে  আবারও জানতে চাই,

উত্তেজনটা  যাকে স্পর্শ  করা হচ্ছে তার প্রতি থাকতে হবে তাই না???
স্পর্শ  করে আছে একজনকে কিন্তুু তার প্রতি তার কোন সহবাসের কামভাব  নেই,তার উত্তেজনটা স্পর্শ  করা অবস্থায় ও অন্য কারনে,হয়তো কোন খারাপ কিছু  দেখা অথবা চিন্তা করার জন্য উত্তেজনাটা যাকে স্পর্শ করা হয়েছে তাকে স্পর্শ  করার পরও রয়ে গেছে অথবা বেড়েছে কিন্তু তার প্রতি কোন কামভাব  নাই,এতে তো হুরমত  হবে না,তাই না?


এই ফতোয়ার এই অংশটা কি এটাই বুঝাচ্ছে না?


উক্ত নারীর সাথে সহবাসের কামভাব নিয়ে স্পর্শ করতে হবে।
 لما في ردالمحتار،ج:٣-ص:٣٣ (نسخة شاملة) ويشترط وقوع الشهوة عليها لا على غيرها لما في الفيض لو نظر إلى فرج بنته بلا شهوة فتمنى جارية مثلها فوقعت له الشهوة على البنت تثبت الحرمة، وإن وقعت على من تمناها فلا 
অর্থাৎ- যাকে স্পর্শ করা হচ্ছে,তাকে নিয়ে কামভাব থাকতে হবে।কেননা বর্ণিত রয়েছে,কেউ যদি তার মেয়ের লজ্জাস্থানের দিকে কামভাব ছাড়া দৃষ্টি দেয়,এবং কল্পনায় অন্য কোনো নারীকে সে সঙ্গী হিসেবে চায়,কিন্তু তৎক্ষণাৎ তার মেয়ের দিকে তার কামভাব জাগ্রত হয়ে যায়,তাহলে তখন হুরমতে মুসাহারা সাব্যস্ত হয়ে যাবে(তথা তার বিবি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে)তবে যদি তার কামভাব কল্পিত সে নারীর উপরই থাকে তাহলে হুরমতে মুসাহারাহ সাব্যস্ত হবে না।ফাতাওয়ায়ে শামী-৩/৩৩(শামেলা) খালি গায়ে স্পর্শ হতে হবে বা এমন পাতলা কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ হতে হবে যে, কাপড় থাকার পরও শরীরের স্পন্দন অনুভূত হয়।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...