আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
297 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (61 points)
১) মুসলিম হওয়ার জন্য শাহাদাহ পাঠের পূর্বে গোসল করা অবস্থায় যদি মৃত্যু হয়, তবে সে কি মুসলিম হিসেবে বিবেচিত হবে?

২) কেউ যদি ব্যক্তিগত পড়ালেখা ও গবেষণার মাধ্যমে ইসলামের সত্যতা বুঝতে পারে এবং নিজে নিজে শাহাদাহ পাঠ করে, তাহলে তা নিয়মসিদ্ধ হবে? নাকি কারো মুখে মুখে শাহাদাহ পাঠ করা আবশ্যক?

৩) যার কাছে ইসলামের কোনো দাওয়াত পৌঁছায়নি (যেমন জঙ্গলের অধিবাসী), সে যদি নিজ আকল দ্বারা স্রষ্টার উপর ঈমান আনে, তবে তার ঈমান কি গ্রহণযোগ্য হবে?

1 Answer

0 votes
by (567,120 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,  আমরা
https://ifatwa.info/18506/ ফতোয়াতে উল্লেখ করেছি যে ইসলাম গ্রহণের আগে গোসল করাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে।
ফরজ নয়।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ خَيْلاً قِبَلَ نَجْدٍ فَجَاءَتْ بِرَجُلٍ مِنْ بَنِي حَنِيفَةَ يُقَالُ لَهُ ثُمَامَةُ بْنُ أُثَالٍ فَرَبَطُوهُ بِسَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ فَخَرَجَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ فَقَالَ أَطْلِقُوا ثُمَامَةَ فَانْطَلَقَ إِلَى نَخْلٍ قَرِيبٍ مِنَ الْمَسْجِدِ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ.

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন অশ্বারোহী মুজাহিদকে নজদের দিকে পাঠালেন। তারা বানূ হানীফা গোত্রের সুমামাহ ইবনু উসাল নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে এসে তাকে মসজিদের খুঁটির সাথে বেঁধে রাখলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকট গেলেন এবং বললেনঃ সুমামাকে ছেড়ে দাও। (ছাড়া পেয়ে) তিনি মসজিদে নাবাবীর নিকট এক খেজুর বাগানে গিয়ে সেখানে গোসল করলেন, অতঃপর মসজিদে প্রবেশ করে বললেনঃ ‘‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।’’ (বুখারী শরীফ ৪৬২.৪৬৯, ২৪২২, ২৪২৩, ৪৩৭২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৮)
,
সুতরাং কেহ যদি এই গোসল করা অবস্থায় মারা যায়,শাহাদাহ মৌখিক ভাবে পাঠ না করে,তাহলে সে দুনিয়ার হুকুমে মুসলিম নয়।
,
তবে মহান আল্লাহ তায়ালা তার ব্যাপারে ফায়সালা করবেন।   
,
(০২)
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার জন্য বিশেষ কোন ব্যক্তির কাছে কর্মপ্রক্রিয়া নেই। কিংবা বিশেষ ব্যক্তিবর্গের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। বরং ইসলাম গ্রহণ করা খুবই সহজ। 
কোনো সাক্ষীর প্রয়োজন নেই।
কোন মানুষ নিজে নিজেই সেটা করতে পারে; এমনকি সে যদি একেবারে নিঃসঙ্গ হয়, কিংবা মরুভূমিতে থাকে কিংবা কোন বদ্ধ কামরায় থাকে সেখানেও সে নিজে ইসলাম গ্রহণ করতে পারে। 

গোটা প্রক্রিয়াটা হচ্ছে- সুন্দর দুটি বাক্য উচ্চারণ করা; যে বাক্যদ্বয়ের মধ্যে পরিপূর্ণ ইসলামের মর্ম নিহিত রয়েছে। যাতে অন্তর্ভুক্ত আছে- মানুষের পক্ষ থেকে আল্লাহর দাসত্বের স্বীকৃতি, আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ, আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে স্বীকার করে নেয়া, নিজের ওপর আল্লাহকে যা ইচ্ছা হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেয়া। যাতে রয়েছে- মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও তাঁর নবী (বার্তাবাহক); তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে যা কিছু অহী হিসেবে নিয়ে এসেছেন সেসব অনুসরণ করা আবশ্যকীয়, তাঁর আনুগত্য হচ্ছে- আল্লাহরই আনুগত্য। 

যে ব্যক্তি পরিপূর্ণ একীন ও বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্যবাণীদ্বয় উচ্চারণ করবে সে ইসলামে প্রবেশ করবে এবং মুসলমানদের একজন হিসেবে গণ্য হবে। মুসলমানদের প্রাপ্য যে যে অধিকার রয়েছে তার জন্যেও সেসব অধিকার সাব্যস্ত হবে এবং মুসলমানদের ওপর যে যে দায়িত্ব রয়েছে তার ওপর সেসব দায়িত্ব বর্তাবে। ইসলাম গ্রহণের পর পরই সে ব্যক্তি আল্লাহ তার ওপর যেসব আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্পণ করেছেন সেগুলো পালন করা শুরু করবে। যেমন- যথাসময়ে নামায আদায় করা, রমযান মাসে রোজা  পালন করা ইত্যাদি।

মুসলিম হতে হলে গোসল করে নিবে (এটি মুস্তাহাব)  এবং বলবে “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই; আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ আল্লাহর বান্দা ও রাসূল (বার্তাবাহক)।”
.

★★সুতরাং কেউ যদি ব্যক্তিগত পড়ালেখা ও গবেষণার মাধ্যমে ইসলামের সত্যতা বুঝতে পারে এবং নিজে নিজে শাহাদাহ পাঠ করে, তাহলে তা নিয়মসিদ্ধ হবে।

কারো মুখে মুখে শাহাদাহ পাঠ করা আবশ্যক নয়।

আরো জানুনঃ 
,
(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে   তিনি যদি আল্লাহর উপর ঈমান আনেন,কুফরকে হারাম মনে করেন,তার ঈমান গ্রহনযোগ্য হবে।

إن العقل قد یستقل في إدراک بعض أحکامہ تعالیٰ، فأوجب الإیمان وحرّم الکفر وکل ما لا یلیق بجنابہ تعالیٰ حتی علی الصّبيّ العاقل وروي عن أبي حنیفة: لا عذر لأحد في الجھل بخالقہ لما یری من الدلائل․ (مسلم الثبوت: ۱۶)
সারমর্মঃ
নিশ্চয়ই জ্ঞ্যান মহান আল্লাহর কিছু আহকাম বুঝতে পারে,সুতরাং তার উপরেও ঈমান ওয়াজিব,কুফরকে হারাম মনে ওয়াজিব।
স্রষ্টা সম্পর্কে  জিহালত (না জানা) এখানে ওযর হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...