ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
মুসাল্লির সামন দিয়ে কারো অতিক্রম করার সম্ভাবনা থাকলে ইমাম এবং মুনফারিদেরর(একাকী নামায আদায়কারী) জন্য সামনে সুতরা রেখে নামায পড়া মুস্তাহাব।
হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﺳَﻌِﻴﺪٍ ﺍﻟْﺨُﺪْﺭِﻱِّ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺇِﺫَﺍ ﺻَﻠَّﻰ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ، ﻓَﻠْﻴُﺼَﻞِّ ﺇِﻟَﻰ ﺳُﺘْﺮَﺓٍ ﻭَﻟْﻴَﺪْﻥُ ﻣِﻨْﻬَﺎ )
যখন তোমাদের মধ্য থেকে কেউ নামায পড়বে তখন সে যেন সামনে সুতরা রেখে নামায পড়ে এবং সুতরার নিকটবর্তী থাকে।
সুনানে আবু-দাউদ-৫৯৮
চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ
"আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় (২৪/১৭৭)" রয়েছে,
ﻳﺴﻦ ﻟﻠﻤﺼﻠﻲ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻓﺬﺍ ( ﻣﻨﻔﺮﺩﺍ ) ، ﺃﻭ ﺇﻣﺎﻣﺎ ﺃﻥ ﻳﺘﺨﺬ ﺃﻣﺎﻣﻪ ﺳﺘﺮﺓ ﺗﻤﻨﻊ ﺍﻟﻤﺮﻭﺭ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻪ , ﻭﺗﻤﻜﻨﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﺨﺸﻮﻉ ﻓﻲ ﺃﻓﻌﺎﻝ ﺍﻟﺼﻼﺓ ؛ ﻭﺫﻟﻚ ﻟﻤﺎ ﻭﺭﺩ ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﺳﻌﻴﺪ ﺍﻟﺨﺪﺭﻱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﺇﺫﺍ ﺻﻠﻰ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻓﻠﻴﺼﻞ ﺇﻟﻰ ﺳﺘﺮﺓ , ﻭﻟﻴﺪﻥ ﻣﻨﻬﺎ , ﻭﻻ ﻳﺪﻉ ﺃﺣﺪﺍ ﻳﻤﺮ ﺑﻴﻦ ﻳﺪﻳﻪ ) ، ﻭﻟﻘﻮﻟﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﻟﻴﺴﺘﺘﺮ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻓﻲ ﺻﻼﺗﻪ ﻭﻟﻮ ﺑﺴﻬﻢ ) .
ﺃﻣﺎ ﺍﻟﻤﺄﻣﻮﻡ ﻓﻼ ﻳﺴﺘﺤﺐ ﻟﻪ ﺍﺗﺨﺎﺫ ﺍﻟﺴﺘﺮﺓ ﺍﺗﻔﺎﻗﺎ ; ﻷﻥ ﺳﺘﺮﺓ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺳﺘﺮﺓ ﻟﻤﻦ ﺧﻠﻔﻪ , ﺃﻭ ﻷﻥ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺳﺘﺮﺓ ﻟﻪ " ﺍﻧﺘﻬﻰ
ইমাম বা মুনফারিদের জন্য সমানে সুতরা রেখে নামায পড়া সুনা্নত(সুন্নাত মানে সুন্নাতে যায়েদা যার অর্থ মুস্তাহাব)।যাতে করে সুতরা মুসাল্লির সামনে অতিক্রম করা থেকে বাধা প্রদাণ করে।এবং যাতে করে মুসাল্লির নামাযে খুশু-খুজু তৈরী হয়।কেননা হযরত আবু-সাঈদ খুদরী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,
'যখন তোমাদের মধ্য থেকে কেউ নামায পড়ে সে যেন সুতরা সামনে রেখে নামায পড়ে এবং সুতরার নিকটবর্তী থাকে।যাতেকরে তার সামন দিয়ে অতিক্রম করার সুযোগ কেউ না পায়।এবং রাসূলুল্লাহ আরো বলেন,তোমাদের মধ্যে যারা নামায পড়বে তারা যেন সামনে সুতরা রাখে,চায় তীর দ্বারাই হোক না কেন।
মা'মুমের(ইমাম ব্যতীত অন্যান্য মুসাল্লি)জন্য সামনে সুতরা রাখার প্রয়োজন নেই।কেননা ইমামের সুতরা মা'মুমের জন্য যথেষ্ট।অর্থাৎ ইমাম পরবর্তী মা'মুমদের জন্য সুতরা হিসেবে যথেষ্ট।
আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় (২৪/১৭৭)
মারাক্বিল ফালাহ তে বর্ণিত রয়েছে-
إذا ظن مروره يستحب له أن يغرز سترةتكون طول ذراع فصاعدا في غلظ الإصبع والسنة أن يقرب منها,
যখন মুসাল্লি তার সামন দিয়ে মানুষ অতিক্রমের ধারণা করবে তখন তার জন্য মুস্তাহাব হল,সামনে একটি সুতরা রাখা।অর্থাৎ এক আঙ্গুল পরিমাণ প্রশস্ত এবং এক গজ পরিমাণ লম্বা একটি লাঠি, ইত্যাদি মাঠিতে ধাবিয়ে খাড়া করে রাখা মুসাল্লির জন্য মুস্তাহাব।সুন্নত হলো সুতরাকে নিকটবর্তী করে রাখা।
মারাক্বিল ফালাহ শরহে নুরুল ইযাহ-১/১৩৪
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
ولو مر مار في موضع سجوده لا تفسد وإن أثم وتكلموا في الموضع الذي يكره المرور فيه والأصح أنه موضع صلاته من قدمه إلى موضع سجوده. كذا في التبيين.
যদি কোনো অতিক্রমকারী মুসাল্লির সেজদার স্থান দিয়ে অতিক্রম করে তাহলে মুসাল্লির নামায ফাসিদ হবে না।যদিও অতিক্রমকারী গোনাহগার হবে।
মুসাল্লির সামনে কতটুকু দূর পর্যন্ত অতিক্রম করা মাকরুহ।সে সম্পর্কে মতবিরোধ থাকলেও বিশুদ্ধ মাযহাব হলো, মুসাল্লির পা থেকে নিয়ে সেজদার স্থান পর্যন্ত জায়গা দিয়ে অতিক্রম করা মাকরুহ।(এটা বড় মসজিদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যে মসজিদে চল্লিশজনের বেশী মুসাল্লির ধারণক্ষমতা রয়েছে।অন্যথায় ছোট মসজিদের সর্বত্রই মাকরুহ হবে)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১০৪
والجمع بين الإشارة والتسبيح يكره والإشارة بالرأس أو العين أو غيرهما كذا في الكافي.
(কেউ মুসাল্লির সামন দিয়ে অতিক্রম করলে মুসাল্লি তাকে ইশারা বা তাসবীহের মাধ্যমে সতর্ক করবেন।)
তবে ইশারা এবং তাসবীহ উভয়কে একত্র করা মাকরুহ।ঠিক তেমনিভাবে মাথা দ্বারা ইশারা করা,চক্ষু দ্বারা ইশারা করা,অথবা অন্যান্য অঙ্গ দ্বারা ইশারা করা মাকরুহ।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৪০ বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 536
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মসজিদের ৪০ জনের কম সংকুলান হলে উক্ত মসজিদের কোনো নামাযির সামন দিয়ে যাওয়া যাবে না। আর ৪০ এর অধিক সংকুলান হলে দুই সফ সামন দিয়ে যাতায়ত করা যাবে।
(২) কুরআন হাদীসে সে সব নিষেধ এসেছে, তা থেকে বেচে থাকতে হবে। সবগুলা গোনাহ এক জায়াগায় একত্রিত করা সম্ভব না। আপনি আল-কাবাইর কিতাব সংগ্রহ করে নিবেন।
পরবর্তী উত্তর গুলো কিছুক্ষণ পর বলব,.....