ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আয়কর হচ্ছেঃ শর্তসাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে সরকার কর্তৃক জনসাধারণের উপর কিছু মাল নির্ধারণ করা।
করের উদ্দেশ্য ও ব্যায় খাতঃ
জনসেবা,মানব উন্নয়ন,প্রতিরক্ষা ভিত্তি মজবুত করণ।যেমনঃ- শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন,শত্রুর হামলা থেকে দেশকে বাচাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ,জন নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সহ আরো এমন সব পদক্ষেপ গ্রহণ যেগুলাতে বর্তমান ও ভবিষ্যত জনকল্যাণ নিহিত রয়েছে।
আয়কর নির্ধারণীঃ
আয়কর নির্ধারক হবেন সরকার বা সরকারের নির্দেশপ্রাপ্ত ব্যাক্তিবর্গ।তবে জনসাধারণের উপর সহনীয় কর নির্ধারণ তাদের উপর ওয়াজিব।
আয়করের বিধান।
আয়কর নির্ধারিত হয়ে গেলে জনসাধারণের উপর সেই কর প্রদাণ করা ওয়াজিব। সামর্থ থাকা সত্বেও কর প্রদাণ না করা,বা কোনো হিলা/বাহানা বের করে কর প্রদাণ থেকে বিরত থাকা হারাম ও কবিরা গুনাহ।
আয়করের বিধান আমরা শরীয়তের নিম্নোক্ত উৎসসমূহ ও প্রমাণাদি থেকে এভাবে বুঝতে পারি,যেমনঃ আল্লাহ তা'আলা সরকার প্রধানের বৈধ বিধি-নিষেধের আনুগত্য সম্পর্কে বলেন-
{يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الأمْرِ مِنْكُمْ}
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা সরকার/বিচারক তাদের।(সূরা নিসা-৫৯০
কর প্রদাণের মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে সহায়তা করা নিম্নোক্ত আয়াতের ব্যাপকতায় শামিল রয়েছে।
{وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَى وَلا تَعَاوَنُوا عَلَى الإثْمِ وَالْعُدْوَانِ}
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য করো। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না।(সূরা মায়েদা-০২)
সরকারকে সাহায্য করা বা সাহায্য করার মনোবাঞ্ছানা থাকা- পূর্ববর্তী উম্মতদের মধ্যেও বিদ্যমান ছিলো।যেমনঃসুপ্রসিদ্ধ বাদশা 'যুলকারনাইন'কে তার প্রজারা বলেছিল......
সেই কথোপকথন সূরা ক্বাহাফ এ সবিস্তারে বর্ণিত রয়েছে।
আল্লাহর তা'আলার বাণী থেকেই সেই কথোপকথন শুনুন......
প্রজারা যুলকারনাইনকে বলেছিল.......
حَتَّى إِذَا بَلَغَ بَيْنَ السَّدَّيْنِ وَجَدَ مِن دُونِهِمَا قَوْمًا لَّا يَكَادُونَ يَفْقَهُونَ قَوْلًا★قَالُوا يَا ذَا الْقَرْنَيْنِ إِنَّ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ فَهَلْ نَجْعَلُ لَكَ خَرْجًا عَلَى أَن تَجْعَلَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ سَدًّا★قَالَ مَا مَكَّنِّي فِيهِ رَبِّي خَيْرٌ فَأَعِينُونِي بِقُوَّةٍ أَجْعَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُمْ رَدْمًا★
তরজমাঃ- অবশেষে যখন তিনি দুই পর্বত প্রচীরের মধ্যস্থলে পৌছলেন, তখন তিনি সেখানে এক জাতিকে পেলেন, যারা তাঁর কথা একেবারেই বুঝতে পারছিল না।
তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার জন্যে কিছু "কর'' ধার্য করব এই শর্তে যে, আপনি আমাদের ও তাদের মধ্যে একটি প্রাচীর নির্মাণ করে দেবেন।তিনি বললেনঃ আমার পালনকর্তা আমাকে যে সামর্থ দিয়েছেন, তাই যথেষ্ট। অতএব, তোমরা আমাকে শ্রম দিয়ে সাহায্য কর। আমি তোমাদের ও তাদের মধ্যে একটি সুদৃঢ় প্রাচীর নির্মাণ করে দেব।(সূরা ক্বাহাফ;৯৩-৯৫)
"বাদশা তাদের মনোবাঞ্ছা কে অবৈধ আখ্যা দেননি।বরং তিনি বললেন,আপাতত তোমাদের থেকে সম্পদ নেয়ার কোনো প্রয়োজন আমার নেই।আল্লাহ আমাকে যে সম্পদ দিয়েছেন, তাই আমার জন্য যথেষ্ট। তবে এখন আমার শ্রমিকের প্রয়োজন রয়েছে,তাই তোমরা শ্রমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হও।
উল্লেখ্য যে,
যুলকারনাইন ছিলেন একজন ন্যায়পরায়ণ বাদশা।যাকে আল্লাহ তা'আলা অনেক অনেক ক্ষমতা দিয়েছিলেন।
উপরোক্ত আয়াতে خرجاً শব্দ দ্বারা প্রতিরক্ষা খরছ হিসেবে সরকারী খাযানায় মাল প্রদাণের কথা ই প্রজারা ব্যক্ত করেছে।
ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন,
عن ابن عباس : أجرا عظيما ، يعني أنهم أرادوا أن يجمعوا له من بينهم مالا يعطونه إياه ، حتى يجعل بينهم وبينهم سدا
আয়াতে خرجاً দ্বারা উদ্দেশ্য হলঃ বড় প্রতিদান। তথা তারা যুলকারনাইন কে উপহার দেয়ার জন্য পরস্পর মাল জমা করার ইচ্ছা পোষন করেছিল।যাতে করে যুলকারনাইন তাদের জন্য ইয়াজুজ-মাজুজ থেকে প্রতিরক্ষা বাধ নির্মাণ করে দেন।
জানাকথা যে,
পূর্ববর্তী শরীয়তের কোনো আলোচনা নিষেধাজ্ঞা ব্যতীত শরীয়তের কোথাও আলোচিত হলে সেটা আমাদের জন্যও পালনীয় বিধান।
(৩) প্রচলিত ভিসা আমান হিসেবে বিবেচিত হবে
(৪) ঈসা (আ.) এর সময়ে পৃথিবীর শতভাগ জায়গা খিলাফাহর অধিভুক্ত হবে।