আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
346 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
১/ আমি দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। আমার বাবা কাচামালের ব্যবসা করে। উনার নিজের কোনো পুঁজি নেই। অন্যের থেকে ধার করে কাঁচামাল আনে।যখন নিরুপায় হয়ে যায় তখন সুদের উপর টাকা এনে ব্যবসা করে।উনার আয়ে আমাদের পরিবারের খাবারের খরচ চলে। এক্ষেত্রে উনার আয়ে আনা খাবার কি আমাদের জন্য হারাম হবে?আমি টিউশন করি। টিউশন থেকে যে টাকা পাই আমাদের ঘর ভাড়া  দেই।আমি মাঝে মাঝে আব্বার কাছ থেকে ৩০/৫০/১০০ টাকা নেই   হাত খরচের জন্য।যখন আমার কাছে টাকা না থাকে।আব্বার কাছ থেকে এই টাকাটা নেওয়া কি আমার জন্য হারাম হবে?উনাকে সুদে টাকা আনতে নিষেধ করলে উনি বলে উপায় নাই তাইতো আনি গুনাহ হইলে কি করবো?এই অবস্থায় আমি কি করতে পারি?
২/আমার এক আপু হয় পরিচিত উনার বয়স প্রায় ২৮ বছর।কিন্তু এখনো বিয়ে হয়নি।উনার অনেক জায়গা থেকেই বিয়ের প্রস্তাব আসে, অনেক ক্ষেত্রে এমন হয় যে ছেলে উনার জন্য অনেক পাগল কিন্তু সব ঠিকঠাক হওয়ার পর ও বিয়ে হয় না।ভেঙে যায়।কখনো কখনো উনিও অনিচ্ছাকৃত বিয়ে ভেঙে দেয়।উনার কয়েকজন বান্ধবী নাকি কাকে সব কিছু খুলে বলার পর সে বলছে উনার বিয়ে না হওয়ার জন্য তাবিজ করা হয়েছে।আসলেই কি তাবিজ করা যায়?আর যদি তাবিজ বিষয়টি সত্যি হয় এটা থেকে মুক্তির উপায় কি?

৩/ আজকাল অনেকেই দেখা যায় রং ফর্সাকারী ক্রীম মেখে ফর্সা হয়।আবার অনেকে ঔষধ খেয়ে মোটা হয়।এগুলোকি জায়েজ?এতে গুনাহ হবে না?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রথমেই লোন সংক্রান্ত শরীয়তের মাসয়ালা আমরা জেনে নেইঃ
 
সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান উভয়ই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ। তাই এ ভিত্তিতে লোন নেওয়া,তা দিয়ে ব্যবসা করা,অন্যকে এ থেকে লোন দেওয়া জায়েজ নয়। হারাম। 

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন  

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

হাদীস শরীফে এসেছে  
عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)
,

★ব্যাংক লোন হারাম।কিন্তু ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে আসার পর সেই লোনকে পরিশোধ করার পর উক্ত লোন দিয়ে যা খরিদ বা তৈরী করা হয়েছিলো,সেটা হালালই থাকছে।যদিও লোন গ্রহণ করা হারাম ও অবৈধ ছিলো।

ব্যাংক লোন সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুন 
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবার জন্য করনীয় হলো কাঁচামালের বড় ব্যবসা না করে ছোট খাটো ব্যবসা করতে।
যাতে আপাতত সূদী লোন না নিতে হয়।
,
উনি সূদী লোন নিয়ে ব্যবসা করার পর লোন যখন শোধ করবে,তখন তো সেই ব্যবসা,ব্যবসার লভ্যাংশ সবই হালাল থাকবে,তাই তার আনা খাবার,তার থেকে নেওয়া টাকা সবই তখন হালাল হবে।
,
তবে এটি যদি  চক্রবৃদ্ধি সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়,যাহা কিস্তিতে শোধ করতে হয়,তাহলে এটি শোধ করতে তো অনেক দিন লাগবে,তাই এহেন ছুরতে আপনি সতর্কতামূলক আপনারা বাবার কাছ থেকে হাত খরচ নিবেননা,নিলেও সেটি শোধের চেষ্টা করবেন। 
,
একটি কাজ করতে পারেন,আপনার টিউশনির টাকা দিয়ে খাবার খরচ চালাবেন,আর আপনার বাবার ইনকাম দিয়ে বাসা ভাড়া চালাবেন।
এটি বেশি ভালো হয়।
,
যদি আপনার টিউশনির টাকা দিয়ে সকলের খাবার খরচ না হয়,তাহলে আপাতত আপনার খাবার সেখান থেকে চালাবেন।

(০২) 
আসলেই যদি বিষয়টি এমন হয়,যদি তার পরিবারের বা তার প্রতিবেশীদের মধ্যে কেহ তার শত্রু হয়,তাহলে হয়তোবা এহেন কাজ করতে পারে।
,  
এহেন সময়ে অভিজ্ঞ দ্বীনদার রুকইয়া কারী/কবিরাজের স্বরনাপন্ন  হলে তাবিজ করা হয়েছে কিনা বুঝা যাবে।

এ তাবিজ,যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে। এর পদ্ধতি হচ্ছে- যাদুতে আক্রান্ত রোগীর উপর অথবা কোন একটি পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং রোগীর জন্য দোয়া করবে। 

বিশেষতঃ যে দুআটি রাসূলুল্লাহ ﷺ  থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
اللَّهُمَّ ربَّ النَّاسِ، أَذْهِب الْبَأسَ، واشْفِ، أَنْتَ الشَّافي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفاءً لاَ يُغَادِرُ سقَماً
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
,
আকীদা বিশুদ্ধ রেখ  বিশেষজ্ঞ রুকইয়াহ কারীর স্বরনাপন্ন হতে পারে।
 
(০৩)
রং ফর্সাকারী ক্রীম মেখে ফর্সা হওয়ার ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হলো যদি অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে এতে ত্বকের কোনো ক্ষতি না হয়,তাহলে স্বামীকে সন্তুষ্ট করার নিয়তে তাহার ব্যবহার জায়েজ আছে। 

আরো জানুনঃ

আর ঔষধ খেয়ে মোটা হওয়ার ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান হলো যদি অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে এতে শরীরের কোনো ক্ষতি না হয়,তাহলে তাহার খাওয়া জায়েজ আছে। 

বিস্তারিত জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...