আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
378 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (5 points)
আমরা জানি যে ফিলিস্তিন , গাজা , উইঘুর ইত্যাদি জায়গায় আমাদের মুসলিম ভাই - বোনেরা নির্যাতিত হচ্ছে । সে ক্ষেত্রে কি আমরা সেখানকার জালিমদের জন্য বদ দুআ করতে পারবো?
সাধারণত কোন কোন ক্ষেত্রে এবং কারা কারা বদ দুআ করতে পারবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 



হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে:

سَالِمٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ الرُّكُوْعِ فِي الرَّكْعَةِ الْآخِرَةِ مِنَ الْفَجْرِ يَقُوْلُ : اللهُمَّ الْعَنْ فُلَانًا وَفُلَانًا وَفُلَانًا بَعْدَ مَا يَقُوْلُ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَيْسَ لَكَ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ} إِلَى قَوْلِهِ {فَإِنَّهُمْ ظَالِمُوْنَ} رَوَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ رَاشِدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.

সালিম (রহ.) থেকে বর্ণিত, তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছেন যে, তিনি ফজরের সলাতের শেষ রাকআতে রুকু থেকে মাথা তুলে ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ্ (আল্লাহ তাঁর প্রশংসাকারীর প্রশংসা শোনেন। হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা)’, ‘রব্বানা ওয়ালাকাল হামদ’ বলার পর এটা বলতেনঃ হে আল্লাহ! অমুক, অমুক এবং অমুককে লানত করুন। তখন আল্লাহ এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ لَيْسَ لَكَ مِنَ الأَمْرِ شَيْءٌ ….. فَإِنَّهُمْ ظَالِمُونَ “তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন, এ বিষয়ে তোমার করণীয় কিছুই নেই। কারণ তারা জালিম।”(সূরা আলু ‘ইমরান ৩/১২৮)

[সহিহ বুখারী, অধ্যায়: তাফসীর, অনুচ্ছেদ: আল্লাহর বাণীঃ এই বিষয়ে আপনার করণীয় কিছুই নেই।]

আরো জানুনঃ 

★★শরীয়তের বিধান মতে কাহারো জন্য বিনা কারনে বদ দুয়া করা জায়েজ নেই।
অবশ্য শরীয়ত কিছু ছুরতে বদ দুয়া করার অনুমতি প্রদান করেছে।

সুতরাং মাজলুমের জন্য জালেমের বিরুদ্ধে বদ দুয়া করা জায়েজ আছে।
তবে এই ছুরতেও জালেমকে মাফ করে দেওয়া উত্তম।
এক্ষেত্রে জালেম যদি মুসলমান হয়,তাহলে তার বিরুদ্ধে বদ দুয়ার ক্ষেত্রে ইনছাফ বজায় রাখা জরুরি । 
যতটুকু জুলুম করেছে,সেই পরিমান বদ দুয়া করা যাবে।
,
তবে জালেম যদি কাফের হয়,তাহলে তার বিরুদ্ধে যেভাবেই চায়,সেভাবেই বদ দুয়া করা জায়েজ আছে।
কোনো সমস্যা নেই।
,
ঐ ভাবে কাফেরদের বিরুদ্ধে,জালেম শাসকের বিরুদ্ধে,কোনো বদ আকীদার লোকের বিরুদ্ধে বদ দুয়া করা জায়েজ আছে।

মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা নিসার ১৪৮ নং আয়াতে ইরশাদ করেনঃ 

لَا یُحِبُّ اللّٰہُ الۡجَہۡرَ بِالسُّوۡٓءِ مِنَ الۡقَوۡلِ اِلَّا مَنۡ ظُلِمَ ؕ وَ کَانَ اللّٰہُ سَمِیۡعًا عَلِیۡمًا ﴿۱۴۸﴾ 

মন্দ কথার প্রচারণা আল্লাহ পছন্দ করেন না; তবে যার উপর যুলুম করা হয়েছে। আর আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।

এ আয়াতে দুনিয়া হতে জোর-যুলুমের অবসান ঘটানোর এক অপূর্ব বিধান পেশ করা হয়েছে। যার মধ্যে একদিকে ইনসাফ ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা ও অপরাধ দমনের জন্য মযলুমকে অত্যাচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তাকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আধিকার দিয়েছে। অন্যদিকে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে আবার যুলুম ও বাড়াবাড়ি করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অন্য আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, “যদি তোমরা প্রতিশোধ নিতে চাও, তবে তোমাদের উপর যে পরিমাণ যুলুম করা হয়েছে, তোমরা ঠিক ততটুকুই প্রতিশোধ নিতে পার [সূরা আন-নাহ্ল: ১২৬] 

সাথে সাথে এ কথাও বলে দেয়া হয়েছে যে, প্রতিশোধ গ্রহণ করার ক্ষমতা ও অধিকার থাকা সত্বেও যদি তোমরা ধৈর্য ধারণ কর এবং ক্ষমা করে দাও, তবে নিঃসন্দেহে তা তোমাদের জন্য অতি উত্তম। মোটকথাঃ আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, মযলুম ব্যক্তি যদি অত্যাচারীর অন্যায়-অত্যাচারের কাহিনী লোকদের কাছে প্রকাশ করে বা আদালতে অভিযোগ করে, তবে তা হারাম গীবতের আওতায় পড়বে না। কারণ যালিম নিজেই মযলুমকে অভিযোগ উত্থাপন করতে সুযোগ করে দিয়েছে, বরং বাধ্য করেছে।

وفي أحكام القرآن للجصاص:
قوله عز وجل: {لايحب الله الجهر بالسوء من القول إلا من ظلم} قال ابن عباس وقتادة إلا أن يدعو على ظالمه."
(3/ 280)ط:دار إحياء التراث العربي  بيروت)
সারমর্মঃ  
ইবনে আব্বাস রাঃ কাতাদাহ রাঃ বলেন তবে জালেমের বিরুদ্ধে দোয়া করা যাবে। 


وفي الموسوعة الفقهية الكويتية:
"قال اللّٰه تعالى : {لَا يُحِبُّ اللّٰهُ الْجَهْرَ بِالسُّوَءِ مِنَ الْقَوْلِ إِلاَّ مَن ظُلِمَ}. قال القرطبيّ : الّذي يقتضيه ظاهر الآية أنّ للمظلوم أن ينتصر من ظالمه ، ولكن مع اقتصاد إن كان الظّالم مؤمناً ، كما قال الحسن ، وإن كان كافراً فأرسل لسانك وادع بما شئت من الهلكة وبكلّ دعاء ، كما فعل النّبيّ صلى الله عليه وسلم حيث قال : « اللّٰهمّ اشدد وطأتك على مضر . اللّٰهمّ اجعلها عليهم سنين كسني يوسف » .وقال : « اللّٰهمّ عليك بفلان وفلان سمّاهم .وإن كان مجاهراً بالظّلم دعا عليه جهراً ، ولم يكن له عرض محترم ، ولا بدن محترم ، ولا مال محترم . وقد روى أبو داود عن « عائشة قال : سرق لها شيء فجعلت تدعو عليه ، فقال النّبيّ صلى الله عليه وسلم : لا تسبّخي عنه » أي لا تخفّفي عنه العقوبة بدعائك عليه .قال النّوويّ : اعلم أن هذا الباب واسع جدًّا ، وقد تظاهر على جوازه نصوص الكتاب والسّنّة، وأفعال سلف الأمّة وخلفها ، وقد أخبر اللّٰه سبحانه وتعالى في مواضع كثيرة معلومة من القرآن عن الأنبياء صلوات اللّٰه وسلامه عليهم بدعائهم على الكفّار .وعن عليّ - رضي الله عنه - أنّ النّبيّ صلى الله عليه وسلم قال يوم الأحزاب : « ملأ اللّٰه قبورهم وبيوتهم ناراً كما حبسونا وشغلونا عن الصّلاة الوسطى »."
(21/ 276ط:وزارة الأوقاف الشؤن الإسلامية)
সারমর্মঃ 
ইমাম কুরতুবি রহঃ বলেন জালেম যদি কাফের হয়,তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ইচ্ছামত বদ দুয়া করা যাবে।
তাদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের দোয়াও করা যাবে।
যেরকম রাসুলুল্লাহ দোয়া করতেনঃ
 « اللّٰهمّ اشدد وطأتك على مضر . اللّٰهمّ اجعلها عليهم سنين كسني يوسف » 
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,    
প্রশ্নে উল্লেখিত জালেমদের বিরুদ্ধে আমরা বদ দোয়া করতে পারবে।
জালেম সেই কুফফারদের বিরুদ্ধে ধ্বংসের দোয়াও করা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...