আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
227 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (11 points)
১. আপন মামা যদি ভাগ্নির দিকে কুনজর দেয় এবং বাজেভাবে গায়ে হাত দেয় এবং ভাগ্নীর সাথে নোংরা আচরণের মাধ্যমে নিজের কুবাসনা চরিতার্থ করার চেষ্টা করে তবে কি শরীয়াহ মোতাবেক উক্ত লোকের সাথে তার বোনের বহাল সম্পর্ক থাকে??? এক্ষেত্রে পারিবারিক ভাবে তাদের সম্পর্ক বজায় থাকলে ও এসব দেখে মাজলুম মেয়ের কষ্ট হলে হলে করণীয় কি?? মেয়ের মা সব জেনেও তার ভাইয়ের আদর সমাদর জারি রাখলে তার কি করা উচিৎ? সে কি কারো সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে???

২. সীরাতে ইবনে হিশামে ২২৬ পৃষ্ঠায় বনু কুরায়যার অভিযানের এক অংশে রায়হানা বিনতে আমর বিন খুনানা নামক এক মহিলাকে রাসুলুল্লাহ সাঃ নিজের জন্য মনোনীত করেন। এখানে উল্লেখ্য আছে রাসুলুল্লাহ সাঃ তাকে বিয়ে করে পর্দার আড়ালে নেয়ার প্রস্তাব দেন। যদিও আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি যে তিনি(সাঃ) যাকিছু করেছেন আল্লাহর আদেশে করেছেন তবুও বই পড়ার মুহুর্তে এই অংশ পড়ে রাগ হলে অথবা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর উপর কুধারনা আসলে কি ঈমান এর ক্ষতি হবে?? সহজ ভাবে মেনে নিতে কষ্ট হলে কি ঈমান চলে যাবে? উক্ত কাজের পেছনের উদ্দেশ্য,  যুক্তি ও ব্যখ্যা  জানতে চাওয়া কি ঈমানের জন্য ক্ষতিকর?  
আরও একটি প্রশ্নঃ  "রাসুলুল্লাহ সাঃ ফাতিমা রাঃ কে অনেক কষ্ট সত্বেও একজন দাসী দেননি।  সেখানে নিজের জন্য একজন মহিলা নিয়ে তাকে বিয়ে করতে চাওয়ার উদ্দেশ্য কি ছিলো????"
৩. এর আগে সাওম রিলেটেড একটি প্রশ্ন করেছিলাম। দয়া করে উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (707,240 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1517 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
কুরআন-হাদীসে বর্ণিত সিলাহ-রেহমি তথা উত্তম ব্যবহারের আশা কার কাছ থেকে করা হবে।অন্যকথায় বললে বলা যায় যে, কার কাছ থেকে সিলাহ রেহমি তথা আত্মীয়তার সম্পর্কের উঞ্চতাকে অনুভূত করা হবে?

এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম থেকে দু'টি বর্ণনা পাওয়া যায়।যথাঃ- 
لِلْعُلَمَاءِ فِي الرَّحِمِ الَّتِي يُطْلَبُ وَصْلُهَا رَأْيَانِ
الأَْوَّل: أَنَّ الصِّلَةَ خَاصَّةٌ بِالرَّحِمِ الْمَحْرَمِ دُونَ غَيْرِهِ، وَهُوَ قَوْلٌ لِلْحَنَفِيَّةِ، وَغَيْرُ الْمَشْهُورِ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ، وَهُوَ قَوْل أَبِي الْخَطَّابِ مِنَ الْحَنَابِلَةِ (١) ،. قَالُوا: لأَِنَّهَا لَوْ وَجَبَتْ لِجَمِيعِ الأَْقَارِبِ لَوَجَبَ صِلَةُ جَمِيعِ بَنِي آدَمَ، وَذَلِكَ مُتَعَذِّرٌ، فَلَمْ يَكُنْ بُدٌّ مِنْ ضَبْطِ ذَلِكَ بِقَرَابَةٍ تَجِبُ صِلَتُهَا وَإِكْرَامُهَا وَيَحْرُمُ قَطْعُهَا، وَتِلْكَ قَرَابَةُ الرَّحِمِ الْمَحْرَمِ.
وَقَدْ قَال رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ عَلَى عَمَّتِهَا وَلاَ عَلَى خَالَتِهَا وَلاَ عَلَى بِنْتِ أَخِيهَا وَأُخْتِهَا، فَإِنَّكُمْ إِذَا فَعَلْتُمْ ذَلِكَ قَطَعْتُمْ أَرْحَامَكُمْ. (٢)
(ক)কুরআন হাদীসে বর্ণিত সিলাহ রেহমি দ্বারা মাহরাম আত্মীয় উদ্দেশ্য।অন্য কেউ উদ্দেশ্য নয়।এটা হানাফি মাযহাবের একটি সিদ্ধান্ত।মালিকি মাযহাব থেকে অপ্রসিদ্ধ একটি উক্তি।এবং আবুল খাত্তাব হাম্বলী রাহ থেকেও এমন একটি অভিমত পাওয়া যায়। তাদের বক্তব্যর সারমর্ম হলো,যদি মাহরাম আত্মীয় ছাড়া অন্যদের ব্যাপারেও সিলাহ রেহমি সিদ্ধান্ত দেয়া হয়,তাহলে সমস্ত মানবজাতি এর মধ্যে ঢুকে যাবে।আর এটা অসম্ভব একটা বিষয়।সুতরাং সীমিত পরিসরে এমন একটা আত্মীয়তার সম্পর্ককে উল্লেখ করা যেতে পারে,যে সম্পর্ক-কে অটুট রাখা, এবং বিচ্ছিন্ন না করার নির্দেশ প্রদাণ করা হবে।আর এটাকে মাহরাম আত্মীয় হিসেবেই নির্ধারণ করা হবে।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,মহিলাকে তার ফুফুর সাথে একত্র করে বিয়ে করা যাবে না।এবং তার খালার সাথেও বিয়ে করা যাবে না।এবং তার ভাই বা বোনের মেয়ের সাথেও বিয়ে করা যাবে না।যদি তোমরা এমনটা করো তাহলে তোমরা আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন কারী হিসেবে গণ্য হবে।
الثَّانِي: أَنَّ الصِّلَةَ تُطْلَبُ لِكُل قَرِيبٍ، مَحْرَمًا كَانَ أَوْ غَيْرَهُ، وَهُوَ قَوْلٌ لِلْحَنَفِيَّةِ، وَالْمَشْهُورُ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ، وَهُوَ نَصُّ أَحْمَدَ، وَهُوَ مَا يُفْهَمُ مِنْ إِطْلاَقِ الشَّافِعِيَّةِ، فَلَمْ يُخَصِّصْهَا أَحَدٌ مِنْهُمْ بِالرَّحِمِ الْمَحْرَمِ (٣) .
(খ)মাহরাম গায়রে মাহরাম সবার বেলায় সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।এটা হানাফি মাযহাবের একটি সিদ্ধান্ত।মালিকী মাযহাবের মাশহুর সিদ্ধান্ত।এবং ইমাম আহমদ রাহ এর থেকেও এরকম একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।শাফেয়ী মাযহাবে আমভাবে মাহরাম গায়রে মাহরাম উভয়ের ব্যাপারে পাওয়া যায়।(৩/৮৩)

সিলাহ রেহমির স্থর
دَرَجَاتُ الصِّلَةِ:
ذَهَبَ فُقَهَاءُ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ إِلَى أَنَّ دَرَجَاتِ الصِّلَةِ تَتَفَاوَتُ بِالنِّسْبَةِ لِلأَْقَارِبِ، فَهِيَ فِي الْوَالِدَيْنِ أَشَدُّ مِنَ الْمَحَارِمِ، وَفِيهِمْ أَشَدُّ مِنْ غَيْرِهِمْ . وَلَيْسَ الْمُرَادُ بِالصِّلَةِ أَنْ تَصِلَهُمْ إِنْ وَصَلُوكَ؛ لأَِنَّ هَذَا مُكَافَأَةٌ، بَل أَنْ تَصِلَهُمْ وَإِنْ قَطَعُوكَ . فَقَدْ رَوَى الْبُخَارِيُّ وَغَيْرُهُ لَيْسَ الْوَاصِل بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنَّ الْوَاصِل الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا
হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম,এবং শাফেয়ী ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন,সিলাহ রেহমি আত্মীয়তার স্থরভেদে প্রযোজ্য হবে।মাহরামের তুলনায় মাতা-পিতার জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।আর গায়রে মাহরামের তুলনায় মাহরামের জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।সিলাহ রেহমির অর্থ এটা নয় যে,কেউ আপনার সাথে ভালো ও উত্তম ব্যবহার করল,আর বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন।কেননা এটার নাম তখন সিলাহ রেহমি না হয়ে  মুকাফা'।বরং আত্মীয় কেউ আপনার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ককে ছিন্ন করার পরও আপনি তার দিকে উত্তম ব্যবহার নিয়ে অগ্রসর হবেন এটাই হলো মূলত সিলাহ রেহমি।যেমন সহীহ বুখারী সহ বিভিন্ন রেওয়াতে এসেছে,সিলাহ রেহমি এটা নয় যে,আত্মীয় কারো ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন,বরং সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পরও তার সাথে ভালো ব্যবহার করার নামই হলো সিলাহ রেহমি।(৩/৮৪)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদিও সিলাহ রেহমির অনেক ফযিলত ও বিধি-বিধান রয়েছে, তবে প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত ভাই বা মামার সাথে যোগাযোগ রক্ষার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। 

(২)
রাসূল সাঃ কোনো কাজের প্রতি এমন মনোভাব সৃষ্টি হওয়া ঈমানের জন্য ক্ষতিকর।

(৩) জ্বী পেয়ে যাবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (11 points)
শায়খ এখানে আমার প্রশ্ন ছিলো -
১. শরিয়ত মোতাবেক উক্ত লোকের সাথে তার বোনের সম্পর্ক অটোমেটিক্যালি ছিন্ন হয়ে যায় কিনা? 
২. রাসুলুল্লাহ সাঃ ফাতিমা রাঃ কে অনেক কষ্ট থাকা সত্বেও একজন দাসী দেননি সেখানে এই জায়গায় নিজের জন্য দাসী মনোনীত করে তাকে বিয়ে করতে চাওয়ার উদ্দেশ্য কি ছিলো?  (যেহুতু আমরা জানি তিনি ১১টি বিবাহের প্রত্যেকটিই আল্লাহর হুকুমে কোন লক্ষ্য উদ্দেশ্য এবং বিশেষ কারণ নিয়েই করেছেন) 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...