ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কুরআন-হাদীসে বর্ণিত সিলাহ-রেহমি তথা উত্তম ব্যবহারের আশা কার কাছ থেকে করা হবে।অন্যকথায় বললে বলা যায় যে, কার কাছ থেকে সিলাহ রেহমি তথা আত্মীয়তার সম্পর্কের উঞ্চতাকে অনুভূত করা হবে?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম থেকে দু'টি বর্ণনা পাওয়া যায়।যথাঃ-
لِلْعُلَمَاءِ فِي الرَّحِمِ الَّتِي يُطْلَبُ وَصْلُهَا رَأْيَانِ
الأَْوَّل: أَنَّ الصِّلَةَ خَاصَّةٌ بِالرَّحِمِ الْمَحْرَمِ دُونَ غَيْرِهِ، وَهُوَ قَوْلٌ لِلْحَنَفِيَّةِ، وَغَيْرُ الْمَشْهُورِ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ، وَهُوَ قَوْل أَبِي الْخَطَّابِ مِنَ الْحَنَابِلَةِ (١) ،. قَالُوا: لأَِنَّهَا لَوْ وَجَبَتْ لِجَمِيعِ الأَْقَارِبِ لَوَجَبَ صِلَةُ جَمِيعِ بَنِي آدَمَ، وَذَلِكَ مُتَعَذِّرٌ، فَلَمْ يَكُنْ بُدٌّ مِنْ ضَبْطِ ذَلِكَ بِقَرَابَةٍ تَجِبُ صِلَتُهَا وَإِكْرَامُهَا وَيَحْرُمُ قَطْعُهَا، وَتِلْكَ قَرَابَةُ الرَّحِمِ الْمَحْرَمِ.
وَقَدْ قَال رَسُول اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لاَ تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ عَلَى عَمَّتِهَا وَلاَ عَلَى خَالَتِهَا وَلاَ عَلَى بِنْتِ أَخِيهَا وَأُخْتِهَا، فَإِنَّكُمْ إِذَا فَعَلْتُمْ ذَلِكَ قَطَعْتُمْ أَرْحَامَكُمْ. (٢)
(ক)কুরআন হাদীসে বর্ণিত সিলাহ রেহমি দ্বারা মাহরাম আত্মীয় উদ্দেশ্য।অন্য কেউ উদ্দেশ্য নয়।এটা হানাফি মাযহাবের একটি সিদ্ধান্ত।মালিকি মাযহাব থেকে অপ্রসিদ্ধ একটি উক্তি।এবং আবুল খাত্তাব হাম্বলী রাহ থেকেও এমন একটি অভিমত পাওয়া যায়। তাদের বক্তব্যর সারমর্ম হলো,যদি মাহরাম আত্মীয় ছাড়া অন্যদের ব্যাপারেও সিলাহ রেহমি সিদ্ধান্ত দেয়া হয়,তাহলে সমস্ত মানবজাতি এর মধ্যে ঢুকে যাবে।আর এটা অসম্ভব একটা বিষয়।সুতরাং সীমিত পরিসরে এমন একটা আত্মীয়তার সম্পর্ককে উল্লেখ করা যেতে পারে,যে সম্পর্ক-কে অটুট রাখা, এবং বিচ্ছিন্ন না করার নির্দেশ প্রদাণ করা হবে।আর এটাকে মাহরাম আত্মীয় হিসেবেই নির্ধারণ করা হবে।রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,মহিলাকে তার ফুফুর সাথে একত্র করে বিয়ে করা যাবে না।এবং তার খালার সাথেও বিয়ে করা যাবে না।এবং তার ভাই বা বোনের মেয়ের সাথেও বিয়ে করা যাবে না।যদি তোমরা এমনটা করো তাহলে তোমরা আত্মীয়তার সম্পর্ককে বিচ্ছিন্ন কারী হিসেবে গণ্য হবে।
الثَّانِي: أَنَّ الصِّلَةَ تُطْلَبُ لِكُل قَرِيبٍ، مَحْرَمًا كَانَ أَوْ غَيْرَهُ، وَهُوَ قَوْلٌ لِلْحَنَفِيَّةِ، وَالْمَشْهُورُ عِنْدَ الْمَالِكِيَّةِ، وَهُوَ نَصُّ أَحْمَدَ، وَهُوَ مَا يُفْهَمُ مِنْ إِطْلاَقِ الشَّافِعِيَّةِ، فَلَمْ يُخَصِّصْهَا أَحَدٌ مِنْهُمْ بِالرَّحِمِ الْمَحْرَمِ (٣) .
(খ)মাহরাম গায়রে মাহরাম সবার বেলায় সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।এটা হানাফি মাযহাবের একটি সিদ্ধান্ত।মালিকী মাযহাবের মাশহুর সিদ্ধান্ত।এবং ইমাম আহমদ রাহ এর থেকেও এরকম একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।শাফেয়ী মাযহাবে আমভাবে মাহরাম গায়রে মাহরাম উভয়ের ব্যাপারে পাওয়া যায়।(৩/৮৩)
সিলাহ রেহমির স্থর
دَرَجَاتُ الصِّلَةِ:
ذَهَبَ فُقَهَاءُ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ إِلَى أَنَّ دَرَجَاتِ الصِّلَةِ تَتَفَاوَتُ بِالنِّسْبَةِ لِلأَْقَارِبِ، فَهِيَ فِي الْوَالِدَيْنِ أَشَدُّ مِنَ الْمَحَارِمِ، وَفِيهِمْ أَشَدُّ مِنْ غَيْرِهِمْ . وَلَيْسَ الْمُرَادُ بِالصِّلَةِ أَنْ تَصِلَهُمْ إِنْ وَصَلُوكَ؛ لأَِنَّ هَذَا مُكَافَأَةٌ، بَل أَنْ تَصِلَهُمْ وَإِنْ قَطَعُوكَ . فَقَدْ رَوَى الْبُخَارِيُّ وَغَيْرُهُ لَيْسَ الْوَاصِل بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنَّ الْوَاصِل الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا
হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম,এবং শাফেয়ী ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন,সিলাহ রেহমি আত্মীয়তার স্থরভেদে প্রযোজ্য হবে।মাহরামের তুলনায় মাতা-পিতার জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।আর গায়রে মাহরামের তুলনায় মাহরামের জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।সিলাহ রেহমির অর্থ এটা নয় যে,কেউ আপনার সাথে ভালো ও উত্তম ব্যবহার করল,আর বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন।কেননা এটার নাম তখন সিলাহ রেহমি না হয়ে মুকাফা'।বরং আত্মীয় কেউ আপনার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ককে ছিন্ন করার পরও আপনি তার দিকে উত্তম ব্যবহার নিয়ে অগ্রসর হবেন এটাই হলো মূলত সিলাহ রেহমি।যেমন সহীহ বুখারী সহ বিভিন্ন রেওয়াতে এসেছে,সিলাহ রেহমি এটা নয় যে,আত্মীয় কারো ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন,বরং সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পরও তার সাথে ভালো ব্যবহার করার নামই হলো সিলাহ রেহমি।(৩/৮৪)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যদিও সিলাহ রেহমির অনেক ফযিলত ও বিধি-বিধান রয়েছে, তবে প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত ভাই বা মামার সাথে যোগাযোগ রক্ষার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
(২)
রাসূল সাঃ কোনো কাজের প্রতি এমন মনোভাব সৃষ্টি হওয়া ঈমানের জন্য ক্ষতিকর।
(৩) জ্বী পেয়ে যাবেন।