আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (58 points)
আমি একজন সুস্থ স্বাভাবিক উপার্জনক্ষম সন্তান। আমি এক বছর ধরে বেকার। আমি একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাশা আল্লাহ ভাল।


আমার বাবা নেই। মা আছেন কেবল। বাবার পেনশনের টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে সেখান থেকে আমরা চলি। তাছাড়া ৫ রুমের নিজস্ব বাসা আছে যা কিনা ইসমাইলি সম্পত্তি। আর্থাৎ দাদার বাসায় থাকি। আমার বাবার নামে দলিল করা নেই। সঞ্চয়পত্রের পাশাপাশি সেই বাসার ২টি রুম ভাড়া দিয়ে চলি।


এমতাবস্থায়, আমি এক বছর ধরে হালাল উপার্জনের চেস্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। ইন্টড়ভিউ দিয়েছি,মানুষের কাছে চাক্রির জন্য বলেছি কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণ সহ নানা কারণে আমার জব হচ্ছেনা।


সঞ্চয়পত্র আমার মায়ের নামে করা। আমার নামে করা হয়নাই।৷ অর্থাৎ আমার বাবা আমাকে কিছু লিখে দিয়ে যান নাই। আমার মাকে লিখে দিয়েছেন সব। আমি কেবল নমিনি।


এমতাবস্থায়, আমার প্রশ্নঃ


১. আমার ভরণপোষণ কি আমার মার জন্য ওয়াজিব?
২.  কলহের জোরে বা অন্য যেকোন কারণে বা কারণ ছাড়াই তিনি বা আমার চাচারা কি আমাকে দাদার বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারেন?  আর যদি বের করেও দেন তবে কি আমার উপর তা জুলুম হবে আর তাদের গুনাহ হবে?

৩. যদি আমার ভরণপোষণ দেয়া না হয় তবে কি আমার মা গুনাহগার হবেন এবং আমার উপর কি তা জুলুম হবে?

1 Answer

0 votes
by (589,680 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3712 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইবনে আবেদীন শামী রাহ  নাফক্বাহ বিষয়ে তাত্ত্বিক আলোচনা করতে যেয়ে উক্ত বিষয়ের জটিলতা ও কঠিনত্ব সম্পর্কে আলোকপাত করে বলেনঃ-
وَاعْلَمْ أَنَّ مَسَائِلَ هَذَا الْبَابِ، مِمَّا تَحَيَّرَ فِيهَا أُولُو الْأَلْبَابِ، لِمَا يُتَوَهَّمُ فِيهَا مِنْ الِاضْطِرَابِ، وَكَثِيرًا مَا رَأَيْت مَنْ ضَلَّ فِيهَا عَنْ الصَّوَابِ، حَيْثُ لَمْ يَذْكُرُوا لَهَا ضَابِطًا نَافِعًا وَلَا أَصْلًا جَامِعًا
জ্ঞাতব্যঃ নাফক্বাহ বিষয়টা অত্যান্ত জটিল।এ বিষয়ে অনেক জ্ঞানীজন ও পন্ডিত মহাশয়বৃন্দ দিক হারাম হয়ে হয়রান-পেরাশান হয়েছেন।কেননা এতে অনেক তীক্ষ্ণতা ও অস্পষ্টতা  বিদ্যমান রয়েছে।অনেককে দেখেছি তারা সঠিক রাস্তা থেকে অনেক দূরে সরে গেছেন।তারা উক্ত বিষয়ের  পরিপূরণ সঠিক কোনো মূলনীতি উপস্থাপন করতে পারেননি।
(রদ্দুল মুহতার৩/৬২৩)

সর্বক্রেত্রে প্রযোয্য না হলেও মোটের উপর বলা যায় যে,যারা মৃতব্যক্তির রক্ত সম্পর্কে অতি নিকটবর্তী হওয়ার ধরুণ ওয়ারিস হওয়ার যোগ্যতা রাখেন, তারাই ধারাবাহিক ভাবে খোরপোষের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ধারাবাহিক সিরিয়াল কি? এসম্পর্কে বলা যায়,
প্রথমে অধস্তন ছেলে-মেয়ে তারপর পিতা এর পর ছেলের ছেলে এভাবে.............।
আপনি কারো ব্যপারে জানতে হলে বর্তমানে উনার কে কে জীবিত আছে? বললে উত্তর তাকে চিন্থত করে দেয়া যাবে।

ধারাবাহিক সিরিয়াল কি?
এ সম্পর্কে 
ইবনে আবেদীন শামী রাহ মোটামোটি একটি মূলনীতি মূলক সারসংক্ষেপ উনার আলোচানায় ফুটিয়ে তুলেছেন।
নিম্নে তা প্রদত্ত করছি।
প্রকাশ থাকে যে,সন্তানাদিদের মধ্য থেকে খোরপোষের দ্বায়ভার গ্রহণের মত যোগ্যব্যক্তি হয়তো একজন হবে অথবা অনেক হবে।
যদি একজন থাকে, তাহলে যাহির কথা যে তার উপর নিশ্চিতরূপে খোরপোষের দ্বায়ভার চলে আসবে।
দ্বিতীয়তঃহয়তো শুধুমাত্র ফুরু' (একজন মানুষের ছেলে-মেয়ে,নাতী-নাতনি সহ  সমস্ত  সন্তানাদি) হবে অথবা ফুরু' এর সাথে  হাওয়াশি থাকবে।
( হাওয়াশিঃযে উক্ত ব্যক্তির না উর্দস্তন পুরুষদের মধ্য থেকে না অধস্তন পুরুষদের মধ্য থেকে, তবে উভয়ের মধ্যে রক্তের আত্মীয়তা রয়েছে)অথবা ফুরু' ও উসূল ( উর্দস্তন পুরুষ)থাকবে।অধবা ফুরু', উসূল,ওহাওয়াশি সবাই বিদ্যমান থাকবে।অথবা শুধমাত্র  উসূল বিদ্যমান থাকবে,বা উসূল ও হাওয়াশি বিদ্যমান থাকবে।এই হচ্ছে সর্বমোট ছয় প্রকার 


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন
(১) আপনি যদি বালিগ হন,তাহলে আপনার ভরণপোষণ আপনি নিজেই করবেন।আপনার মার উপর আপনার ভরণপোষণ ওয়াজিব নয়।

(২)
আপনার চাচারা আপনাকে আপনার দাদার অংশ থেকে মাহরুম করতে পারবেন না,যদি আপনার বাবার পূর্বে আপনার দাদার মৃত্যু হয়।আর আপনার বাবার মৃত্যু যদি আপনার দাদার মৃত্যুর পূর্বে হয়ে থাকে,তাহলে আপনি দাদার সম্পত্তি থেকে আইনত কিছুই পাবেন না।

(৩)
আপনি নিজে চাকুরী করে জীবন পরিচালনা করবেন।আপনার মায়ের উপর আপনার ভরণপোষণ ওয়াজিব নয়।আপনার মা যদি আপনাকে ভরণপোষণ না দেন,তাহলে আপনার মা গোনাহগার হবেন না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...