বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভূমিকা
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে।(সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)
হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃযে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন।(সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে।(মিশকাত-৩০৭৪)
ইসলামি শরীয়তে সম্পদ বন্টনে যুক্তি বিদ্যার কোনো স্থান নেই, বরং কে কত পাবে? এবং কে কখন বঞ্চিত হবে, তার সম্পূর্ণটাই আল্লাহ এবং উনার রাসূল ঠিক করে দিয়ে গেছেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
يُوصِيكُمُ اللَّهُ فِي أَوْلَادِكُمْ ۖ لِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۚ فَإِن كُنَّ نِسَاءً فَوْقَ اثْنَتَيْنِ فَلَهُنَّ ثُلُثَا مَا تَرَكَ ۖ وَإِن كَانَتْ وَاحِدَةً فَلَهَا النِّصْفُ ۚ وَلِأَبَوَيْهِ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ مِمَّا تَرَكَ إِن كَانَ لَهُ وَلَدٌ ۚ فَإِن لَّمْ يَكُن لَّهُ وَلَدٌ وَوَرِثَهُ أَبَوَاهُ فَلِأُمِّهِ الثُّلُثُ ۚ فَإِن كَانَ لَهُ إِخْوَةٌ فَلِأُمِّهِ السُّدُسُ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِي بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ لَا تَدْرُونَ أَيُّهُمْ أَقْرَبُ لَكُمْ نَفْعًا ۚ فَرِيضَةً مِّنَ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا
আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে আদেশ করেনঃ একজন পুরুষের অংশ দু?জন নারীর অংশের সমান। অতঃপর যদি শুধু নারীই হয় দু' এর অধিক, তবে তাদের জন্যে ঐ মালের তিন ভাগের দুই ভাগ যা ত্যাগ করে মরে এবং যদি একজনই হয়, তবে তার জন্যে অর্ধেক। মৃতের পিতা-মাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্যে ত্যাজ্য সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ, যদি মৃতের পুত্র থাকে। যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিস হয়, তবে মাতা পাবে তিন ভাগের এক ভাগ। অতঃপর যদি মৃতের কয়েকজন ভাই থাকে, তবে তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ ওছিয়্যতের পর, যা করে মরেছে কিংবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের পিতা ও পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের জন্যে অধিক উপকারী তোমরা জান না। এটা আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত অংশ নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, রহস্যবিদ।
وَلَكُمْ نِصْفُ مَا تَرَكَ أَزْوَاجُكُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّهُنَّ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَهُنَّ وَلَدٌ فَلَكُمُ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْنَ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصِينَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۚ وَلَهُنَّ الرُّبُعُ مِمَّا تَرَكْتُمْ إِن لَّمْ يَكُن لَّكُمْ وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَ لَكُمْ وَلَدٌ فَلَهُنَّ الثُّمُنُ مِمَّا تَرَكْتُم ۚ مِّن بَعْدِ وَصِيَّةٍ تُوصُونَ بِهَا أَوْ دَيْنٍ ۗ وَإِن كَانَ رَجُلٌ يُورَثُ كَلَالَةً أَوِ امْرَأَةٌ وَلَهُ أَخٌ أَوْ أُخْتٌ فَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِّنْهُمَا السُّدُسُ ۚ فَإِن كَانُوا أَكْثَرَ مِن ذَٰلِكَ فَهُمْ شُرَكَاءُ فِي الثُّلُثِ ۚ مِن بَعْدِ وَصِيَّةٍ يُوصَىٰ بِهَا أَوْ دَيْنٍ غَيْرَ مُضَارٍّ ۚ وَصِيَّةً مِّنَ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ عَلِيمٌ حَلِيمٌ
আর, তোমাদের হবে অর্ধেক সম্পত্তি, যা ছেড়ে যায় তোমাদের স্ত্রীরা যদি তাদের কোন সন্তান না থাকে। যদি তাদের সন্তান থাকে, তবে তোমাদের হবে এক-চতুর্থাংশ ঐ সম্পত্তির, যা তারা ছেড়ে যায়; ওছিয়্যতের পর, যা তারা করে এবং ঋণ পরিশোধের পর। স্ত্রীদের জন্যে এক-চতুর্থাংশ হবে ঐ সম্পত্তির, যা তোমরা ছেড়ে যাও যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে, তবে তাদের জন্যে হবে ঐ সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ, যা তোমরা ছেড়ে যাও ওছিয়্যতের পর, যা তোমরা কর এবং ঋণ পরিশোধের পর। যে পুরুষের, ত্যাজ্য সম্পত্তি, তার যদি পিতা-পুত্র কিংবা স্ত্রী না থাকে এবং এই মৃতের এক ভাই কিংবা এক বোন থাকে, তবে উভয়ের প্রত্যেকে ছয়-ভাগের এক পাবে। আর যদি ততোধিক থাকে, তবে তারা এক তৃতীয়াংশ অংশীদার হবে ওছিয়্যতের পর, যা করা হয় অথবা ঋণের পর এমতাবস্থায় যে, অপরের ক্ষতি না করে। এ বিধান আল্লাহর। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সহনশীল। ( সূরা নিসা-১১-১২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১) দাদা জীবিত থাকাবস্থায় যদি বাবা মারা যান (উল্লেখ্য, দাদার সন্তানাদী বাবা আর দু'জন ফুফ) এক্ষেত্রে নাতী উত্তরাধীকার হবে না। তবে চাচা এবং ফুফুদের উপর নাবালক অবস্থায় উক্ত সন্তানকে লালন পালন করা ওয়াজিব। এবং সাবালক হওয়ার পর তাকে কিছু দিয়ে দেয়া উচিৎ।
(২)
উক্ত মৃত ব্যক্তির ছেলে জীবিত থাকার কারণে মৃত ব্যক্তির ভাই বোন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত থাকবে। স্ত্রী পাবে, ৮ ভাগের এক ভাগ। এবং ছেলে মেয়েরা বাদবাকী সম্পত্তি পেয়ে যাবে। একছেলে দু-জন মেয়ের অংশের সমান পাবে।