আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,117 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by
edited
আসসালামুআলাইকুম। আমি একজন দ্বীনি জীবনসঙ্গী  চাই। কিন্তু আমার ফ্যামিলির ধারণা এমন কোনো ছেলে যে শিক্ষিত, মেধাবী আবার দ্বীনদার এমন ছেলে আজকালকার দিনে পাওয়া যাবেনা। তারা আমাকে প্রচুর চাপ দিচ্ছে যেন আমি এমন কোনো ছেলে কে বিয়ে করি যে হালকা দ্বীন পালন করে আর ভালো দুনিয়া দার। আমি বলি ছেলে পাঁচ ওয়াক্ত সালাহ আদায় করে কিনা, কোরআন সহিহভাবে পড়তে জানে কিনা, ছেলের সুন্নতি দাড়ি আছে কিনা এসব খোঁজ নাও। কিন্তু তারা আমার এসব কথা শুনে আমাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে, আমাকে পাগল বলে, আমাকে (অশিক্ষিত) হুজুরদের বিয়ে করতে বলে, মসজিদের মুয়াজ্জিনকে বিয়ে করতে বলে(যদিও এসব কাজ কখনোই খারাপ না কিন্তু তারা তাচ্ছিল্লতার সাথে বলে)। বিয়ের কথা চললে আমি তাদের বলি শুধু ছেলে এবং ছেলের মহিলা আত্মীয়রা যেন আমাকে দেখে, এই কথা শুনে তারা বলে ,” তুমি কতবড় কি হয়ে গেছ “। হাত পা ধরা বাকি রেখে আমার পক্ষে যেভাবে সম্ভব তাদের বুঝিয়েছি, কোন কাজ আদৌ হচ্ছে কিনা জানিনা। এত অপমান তাচ্ছিল্লতার পর এখন আবার আমার বড়ভাই বলে তোমার বর আমরা খুঁজতে পারবোনা, তুমিই খুঁজে নিয়ে আস।মাঝে মাঝে মা বাবাও এভাবেই বলে, আমরা তোমার বিয়ে দিতে পারবোনা, তুমিই  পাত্র খোঁজ। নিজেকে খুব অসহায়, হতাশ আর দুনিয়ার সবচেয়ে বিপদগ্রস্থ মানুষ মনে হচ্ছে।আল্লাহর  কাছে এ বিপদ থেকে পরিত্রাণ চাই। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি কি করতে পারি কিছুই বুঝতে পারছিনা। আমার কি করা উচিত এখন….

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)


ﺑﺴْﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮّﺣْﻤﻦ ﺍﻟﺮّﺣﻴْﻢ

ﺣﺎﻣﺪﺍ ﻭ ﻣﺼﻠﻴﺎ ﻭﻣﺴﻠﻤﺎ

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ

আপনি পবিত্র ! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে আপনি আমাদিগকে যা শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, হেকমতওয়ালা।(২/৩২)

সমাধানঃ-
হাদীস শরীফে এসেছে,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন-
لا طاعة في معصية إنما الطاعة في المعروف
গোনাহের কাজে কারো বশ্যতা স্বীকার করা যাবে না।(শরীয়ত যাদের বিধিনিষেধ মেনে চলার আদেশ দিয়েছে তাদের) আদেশ শুধুমাত্র বৈধ ও নেকীর কাজে মানা যাবে।(সহীহ বুখারী-৭২৫৭)সহীহ মুসলিম-১৮৪০

অন্য এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে,
لَا طَاعَةَ لِمَخْلُوقٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ
আল্লাহর অবাধ্যতায় কারো বিধিনিষেধ কে মান্য করা যাবে না।(মুসনাদে আহমাদ-১০৯৮)

চার মাযহাবের গ্রহণযোগ্য ফেকহী গ্রন্থ 'আল-মা'সুআতুল ফেকহীয়্যায়(২৮/৩২৭)' বর্ণিত রয়েছে,
"طاعة المخلوقين - ممّن تجب طاعتهم – كالوالدين ، والزّوج ، وولاة الأمر : فإنّ وجوب طاعتهم مقيّد بأن لا يكون في معصية ، إذ لا طاعة لمخلوق في معصية الخالق" انتهى
শরীয়ত কর্তৃক যাদের বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।যেমনঃ মাতাপিতা,স্বামী,এবং রাষ্ট্রীয় প্রধান বা তাদের আদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গ।তাদের বিধিনিষেধ আমলে নেয়া তখনই ওয়াজিব যখন তা শরীয়ত বিরোধী হবে না।কেননা 'সৃষ্টিকর্তার নাফরমানীতে কোনো সৃষ্টজীবের অনুসরণ করা যায় না'(মর্মে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে)হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী
তুমি দ্বীনদারীকে অগ্রাধিকার দাও।{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)
(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)

সম্মাণিত দ্বীনী বোন!
আপনি যে অবস্থানে অটল অবিচল রয়েছেন।আপনি যথাযথ-ই আছেন।আপনি আপনার ফ্যমিলি র সদস্যবৃন্দকে বুঝাতে থাকুন এবং আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন।বলা তো যায় না কখন আপনার দু'আ আল্লাহর কাছে কবুল হয়ে যাবে।দ্বীনদার জীবনসঙ্গী-ই জীবনের অনেক বড় পাওয়া।নিজে নিজে পাত্র দেখে বিয়ে করাটা যদিও জায়েয।তবে তা অদ্য কোনো মুসলিমার জন্য সমুচিত হবে না।এক্ষেত্রে লজ্জার বিষয়টাও বিবেচ্য।হ্যা তারা যেরকম পাত্রর কথা বলছেন,সেরকম পাত্রকে বিয়ে করাটাও আবার নাজায়েয হবে না।কেননা শুধুমাত্র ঈমান এবং আক্বিদা-বিশ্বাস বিশুদ্ধ থাকলেই তার সাথে বিয়েশাদী করা যায়।যদিও তা উত্তমতার খেলাফ।হেকমত এবং নরম ভাষায় তাদের বুঝাতে থাকুন।

আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﺍﺩْﻉُ ﺇِﻟِﻰ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺭَﺑِّﻚَ ﺑِﺎﻟْﺤِﻜْﻤَﺔِ ﻭَﺍﻟْﻤَﻮْﻋِﻈَﺔِ ﺍﻟْﺤَﺴَﻨَﺔِ ﻭَﺟَﺎﺩِﻟْﻬُﻢ ﺑِﺎﻟَّﺘِﻲ ﻫِﻲَ ﺃَﺣْﺴَﻦُ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﻤَﻦ ﺿَﻞَّ ﻋَﻦ ﺳَﺒِﻴﻠِﻪِ ﻭَﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻬْﺘَﺪِﻳﻦَ
আপন পালনকর্তার পথের প্রতি আহবান করুন হেকমত তথা জ্ঞানের কথা বুঝিয়ে ও নরমভাবে উপদেশ শুনিয়ে, এবং তাদের সাথে বিতর্ক করুন পছন্দ যুক্ত পন্থায়। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বিশেষ ভাবে জ্ঞাত রয়েছেন, যে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে এবং তিনিই ভাল জানেন তাদেরকে, যারা সঠিক পথে আছে।
(সূরা নাহল-১২৫)

আপনার বা আপনার পরিচিত কারো যদি কোনো দ্বীনদার পাত্র সম্পর্কে জানা থাকে তবে সেই পাত্রকে আপনার ফ্যামিলির নিকট পাঠান।এবং কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে দু'আ করতে থাকুন।আল্লাহ অবশ্যই শুনবেন।

আল্লাহ তা'আলা বলেন
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺑُّﻜُﻢُ ﺍﺩْﻋُﻮﻧِﻲ ﺃَﺳْﺘَﺠِﺐْ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳَﺴْﺘَﻜْﺒِﺮُﻭﻥَ ﻋَﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩَﺗِﻲ ﺳَﻴَﺪْﺧُﻠُﻮﻥَ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﺩَﺍﺧِﺮِﻳﻦَ
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে।
 (সূরা আল-মু'মিন-৬০)

নিতান্তই আপনি যদি চেষ্টা করে বিফল হয়ে যান তাহলে পাচঁ ওয়াক্ত নামায পড়ে এবং দাড়ী রয়েছে তবে আলেম নয়,এমন কারো কথা বললে মেনে নিতে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
জাযাকাল্লাহ খইরান, আল্লাহু  আপনার জন্য সহজ করে দিন।

প্রশ্নকারী, আপনার মতো চিন্তা-চেতনার মুমিনা বান্দিকে জিবন সঙ্গী হিসাবে পাওয়া টা সৌভাগ্যের ব্যাপার। 
 
by (589,140 points)
জাযাকুমুল্লাহ
by
বারাকআল্লাহু হ্যাইয়া।

by
আসসালামু আলাইকুম।আপনার বর্তমান অবস্থা জানতে মন চায়।আশাকরি আপনার বিশ্বাস আগের চেয়ে অনেক দৃঢ় হয়েগেছে।আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবার মনের নেক আশা পূর্ণ করুন

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...