ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ইসলামী শরীয়তে ই‘তিকাফ ৩ প্রকার।
(ক) ওয়াজিব ই‘তিকাফ : ওলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে ওয়াজিব ই‘তিকাফ হলো মানতের ই‘তিকাফ। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَلۡيُوفُواْ نُذُورَهُمۡ ... ٢٩ ﴾ [الحج: ٢٩]
অর্থাৎ ‘‘তারা যেন তাদের মানৎ পূর্ণ করে।’’ (সূরা হাজ্জ : ২৯)
(খ) সুন্নাত ই‘তিকাফ : রমযানের শেষ ১০ দিনের ই‘তিকাফ। সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যেমন :
كَانَ رَسُوْلُ اللهِ -صلى الله عليه وسلم- يَعْتَكِفُ الْعَشْرِ الأَوَاخِرِ مِنْ رَمَضَانَ
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানে শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন।’ (বুখারী : ২০২৫; মুসলিম : ১১৭২)
(গ) মুস্তাহাব ই‘তিকাফ : উল্লেখিত দু’প্রকার ব্যতীত বাকী সব মুস্তাহাব ইতেকাফ।
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
«وَيَنْقَسِمُ إلَى وَاجِبٍ، وَهُوَ الْمَنْذُورُ تَنْجِيزًا أَوْ تَعْلِيقًا، وَإِلَى سُنَّةٍ مُؤَكَّدَةٍ، وَهُوَ فِي الْعَشْرِ الْأَخِيرِ مِنْ رَمَضَانَ، وَإِلَى مُسْتَحَبٍّ، وَهُوَ مَا سِوَاهُمَا هَكَذَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ.» - «الفتاوى الهندية» (1/ 211)
ইতিকাফ তিন প্রকার যথা- (১) ওয়াজিব ইতিকাফ, যা নযর বা মান্নতের জন্য কারো উপর ওয়াজিব হয়েছে। (২) সুন্নতে মুআক্কাদা ইতিকাফ, তা হল রমজানের শেষ দশ দিনের ইতিকাফ।(৯) মুস্তাহব ইতিকাফ, এছাড়া সকল ইতিকাফকে মুস্তাহব ইতিকাফ বলা হয়।
ইতিকাফ হলো দুনিয়াবি সকল প্রকার বাজে চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে মসজিদে অবস্থান করা।
ইতিকাফ তিন প্রকার।যথা :
১. ওয়াজিব,
২. সুন্নাত,
৩. মুস্তাহাব।
ইতিকাফের হুকুম সুন্নাতে মুয়াক্কাদা এবং তাঁর উদ্দেশ্য হলো দুনিয়াবি সকল প্রকার ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হওয়া এবং লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করা।
ইতিকাফের শর্ত ২ টি। যথা
ক. নিয়ত করা।
খ. মসজিদে অবস্থান করা।
ইতিকাফের শর্ত পূরণের জন্য আবশ্যকীয় হলো,
ক. মুসলমান হওয়া
খ. জ্ঞান থাকা
গ. বড় নাপাকী থেকে পবিত্র থাকা, গোসল ফরয হলে গোসল করে নেয়া।
ঘ. মসজিদে ই‘তিকাফ করা।
ইতিকাফ যে সকল কারণে ভঙ্গ হয়ে যায় তা হলো :
১. স্বেচ্ছায় বিনা প্রয়োজনে মাসজিদ থেকে বের হলে।
২. কোন শিরক বা কুফরী কাজ করলে।
৩. পাগল বা বেঁহুশ হয়ে গেলে।
৪. নারীদের হায়েয-নিফাস শুরু হয়ে গেলে।
৫. স্ত্রীসহবাস বা যে কোন প্রকার যৌনসম্ভোগ করলে।
ইতিকাফ শুরু করতে হবে রমজানের শেষ দশকে। কারন নবী কারীম (সাঃ) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন। (বুখারী ২০২০, মুসলিম ২৬৭০)
নবী কারীম (সাঃ) প্রতি রমজানেই দশদিন ইতিকাফ করেছেন কিন্তু জীবনের শেষ রমজানে তিনি ই‘তিকাফ করেছিলেন ২০ দিন। (বুখারী ২০৪৪)