আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
253 views
in পবিত্রতা (Purity) by (101 points)
আসসালামুআলাইকুম,

১)পানি নাপাক হওয়ার শর্তসমূহ কি?

২)নাপাক কাপড় সাবান দিয়ে ঘষে বা ডিটারজেন্ট এ কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখার পর তা তুলে নিয়ে কাছা হয় এবং তারপর পরিষ্কার পানিতে দু'বার ধোয়া হয় কিন্তু দ্বিতীয়বার ধোয়ার পর চেপে পানি না ফেলে তৃতীয় বার ধোয়ার পর তা চেপে ফেলা হয়।এমতাবস্থায় কাপড় কি পাক হয়ে যাবে?

৩) অদৃশ্যমান নাপাকি দূর করার জন্য তিন বার ধৌত করা কি বাধ্যতামূলক নাকি একবার বালতিতে ডুবিয়ে তা চিপে ফেলা যথেষ্ট? কারন,একবার ধোয়ার পর তো নাপাকির কোনো চিহ্ন বা আছার দেখা যায় না।

৪) পবিত্রতা বিস্তারিত আহকাম মাসায়েল জানার জন্য কোন বই আছে কি?

জাযাকাল্লাহ

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
প্রবাহমান পানিতে নাপাকি পড়লে সে পানি পবিত্র,তাহা দ্বারা অজু বৈধ, যদি তাতে নাজাসাতের কোন আলামত দেখা না যায়। কেননা, পানির প্রবাহের কারণে তা স্থির থাকে না। আর আলামত হল স্বাদ, গন্ধ বা বর্ণ। 

প্রবহমান ঐ পানিকে বলা হয় যা পুনঃ পুনঃ ব্যবহার আসে না। কেউ কেউ বলেন, যা ‘খড়কুটা’ ভাসিয়ে নেয়। এক পার্শ্ব নাড়া দিলে অপর পার্শ্বের পানি তরংগায়িত হয় না, এমন বড় পুকুরের এক পার্শ্বে নাপাকি পড়লে অপর পার্শ্বে অজু করা বৈধ। কেননা এটাই স্বাভাবিক যে, অপর পার্শ্বে নাপাকি পৌছবে না। কারণ, ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে তরঙ্গের প্রভাব নাপাকি এর প্রভাবের চেয়ে বেশী।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
 
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم أَنَتَوَضَّأُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ وَهِيَ بِئْرٌ يُطْرَحُ فِيهَا الْحِيَضُ وَلَحْمُ الْكِلَابِ وَالنَّتْنُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " الْمَاءُ طَهُورٌ لَا يُنَجِّسُهُ شَىْءٌ " . - صحيح 

আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একদিন) জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি ‘‘বুযা-‘আহ্’’ কূপের পানি দিয়ে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতে পারি? কেননা এ কূপটিতে হায়যের নেঁকড়া, মরা কুকুর ও বিভিন্ন ধরনের দুর্গন্ধময় আবর্জনা ফেলা হয়। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পানি পবিত্র। কোন জিনিসই সেটাকে নাপাক করতে পারে না।
(আহমাদ ২১০১, আবূ দাঊদ ৬৬, তিরমিযী ৬৬, নাসায়ী ৩২৬, ইরওয়া ১৪।)

★যদি প্রবাহমান পানি না হয়,বেশি পানি না হয়,তাহলে অল্প নাপাকি পড়লেই সেই পানি নাপাক হয়ে যাবে।
,

যদি স্রোতের পানিতে নাপাকি পতিত হয় এবং পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদে কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে তা দিয়ে পবিত্রতা হাসিল করা জায়েজ। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/১৬-১৭)

বড় পুকুর যার একদিকে পানি নাড়া দিলে অন্যদিকে নড়ে না—এ ধরনের পুকুরের একদিকে নাপাকি পড়লে অন্যদিক দিয়ে পবিত্রতা হাসিল করা জায়েজ। (হিদায়া : ১/৩৬)

যে জীবের দেহে প্রবহমান রক্ত থাকে না, যেমন—মাছি, মশা, ভোমর, বিচ্ছু ইত্যাদি। তা পানিতে পড়ে মরে গেলে, অথবা মরে পড়ে গেলে পানি অপবিত্র হয় না। এ পানি দিয়ে অজু ও গোসল জায়েজ। (হিদায়া : ১/৩৭)
,
(০২)
কাপড় পবিত্র করার মূলনীতি হলোঃ

শরীয়তের বিধান হলো চাদর কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।  (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة

অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করত্র হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু ২য় বার কাপড় চেপে ফেলা হয়নি,তাই সেটি পাক হবেনা।
চিপে আরেকবার ধুয়ে নিতে হবে।
,   

(০৩)
তিনবার ধোয়া আর প্রত্যেকবার নিংড়ানো বাধ্যতামূলক। 
তবে সরাসরি টেপের নিচে বা পানির স্রোতের সামনে সেটি ধোয়া হয়,তাহলে তিনবার ধোয়া বাধ্যতামূলক নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ 
   
(০৪)
মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন সাহেব দাঃবাঃ এর লিখিত 
আহকামে জিন্দেগী,ফিকহুন নীসা পড়তে পারেন। 
মাওলানা মনসুরুল হক সাহেব দাঃবাঃ এর লিখিত ইসলামী জিন্দেগী পড়তে পারেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 308 views
...