প্রবাহমান পানিতে নাপাকি পড়লে সে পানি পবিত্র,তাহা দ্বারা অজু বৈধ, যদি তাতে নাজাসাতের কোন আলামত দেখা না যায়। কেননা, পানির প্রবাহের কারণে তা স্থির থাকে না। আর আলামত হল স্বাদ, গন্ধ বা বর্ণ।
প্রবহমান ঐ পানিকে বলা হয় যা পুনঃ পুনঃ ব্যবহার আসে না। কেউ কেউ বলেন, যা ‘খড়কুটা’ ভাসিয়ে নেয়। এক পার্শ্ব নাড়া দিলে অপর পার্শ্বের পানি তরংগায়িত হয় না, এমন বড় পুকুরের এক পার্শ্বে নাপাকি পড়লে অপর পার্শ্বে অজু করা বৈধ। কেননা এটাই স্বাভাবিক যে, অপর পার্শ্বে নাপাকি পৌছবে না। কারণ, ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে তরঙ্গের প্রভাব নাপাকি এর প্রভাবের চেয়ে বেশী।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ، وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ الأَنْبَارِيُّ، قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنِ الْوَلِيدِ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ قِيلَ لِرَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم أَنَتَوَضَّأُ مِنْ بِئْرِ بُضَاعَةَ وَهِيَ بِئْرٌ يُطْرَحُ فِيهَا الْحِيَضُ وَلَحْمُ الْكِلَابِ وَالنَّتْنُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " الْمَاءُ طَهُورٌ لَا يُنَجِّسُهُ شَىْءٌ " . - صحيح
আবূ সা‘ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে একদিন) জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে আল্লাহর রসূল! আমরা কি ‘‘বুযা-‘আহ্’’ কূপের পানি দিয়ে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করতে পারি? কেননা এ কূপটিতে হায়যের নেঁকড়া, মরা কুকুর ও বিভিন্ন ধরনের দুর্গন্ধময় আবর্জনা ফেলা হয়। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পানি পবিত্র। কোন জিনিসই সেটাকে নাপাক করতে পারে না।
(আহমাদ ২১০১, আবূ দাঊদ ৬৬, তিরমিযী ৬৬, নাসায়ী ৩২৬, ইরওয়া ১৪।)
★যদি প্রবাহমান পানি না হয়,বেশি পানি না হয়,তাহলে অল্প নাপাকি পড়লেই সেই পানি নাপাক হয়ে যাবে।
,
যদি স্রোতের পানিতে নাপাকি পতিত হয় এবং পানির রং, ঘ্রাণ বা স্বাদে কোনো পরিবর্তন না আসে, তাহলে তা দিয়ে পবিত্রতা হাসিল করা জায়েজ। (ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/১৬-১৭)
বড় পুকুর যার একদিকে পানি নাড়া দিলে অন্যদিকে নড়ে না—এ ধরনের পুকুরের একদিকে নাপাকি পড়লে অন্যদিক দিয়ে পবিত্রতা হাসিল করা জায়েজ। (হিদায়া : ১/৩৬)
যে জীবের দেহে প্রবহমান রক্ত থাকে না, যেমন—মাছি, মশা, ভোমর, বিচ্ছু ইত্যাদি। তা পানিতে পড়ে মরে গেলে, অথবা মরে পড়ে গেলে পানি অপবিত্র হয় না। এ পানি দিয়ে অজু ও গোসল জায়েজ। (হিদায়া : ১/৩৭)
,
(০২)
কাপড় পবিত্র করার মূলনীতি হলোঃ
শরীয়তের বিধান হলো চাদর কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )
وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة
অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করত্র হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু ২য় বার কাপড় চেপে ফেলা হয়নি,তাই সেটি পাক হবেনা।
চিপে আরেকবার ধুয়ে নিতে হবে।
,
(০৩)
তিনবার ধোয়া আর প্রত্যেকবার নিংড়ানো বাধ্যতামূলক।
তবে সরাসরি টেপের নিচে বা পানির স্রোতের সামনে সেটি ধোয়া হয়,তাহলে তিনবার ধোয়া বাধ্যতামূলক নয়।
(০৪)
মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন সাহেব দাঃবাঃ এর লিখিত
আহকামে জিন্দেগী,ফিকহুন নীসা পড়তে পারেন।
মাওলানা মনসুরুল হক সাহেব দাঃবাঃ এর লিখিত ইসলামী জিন্দেগী পড়তে পারেন।