ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)”যারা আত্মহত্যা করে তাদের রুহ দুনিয়াতেই থেকে যায়” এটা একটা ভুল কথা।
(২) আত্মহত্যাকারীর জানাযার নামায উলামা সমাজ সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জন্য না পড়া উচিৎ, যাতেকরে আত্মহত্যার প্রতি লোকজন সর্বদা নিরোৎসাহিত থাকে।
(৩)যারা আত্মহত্যা করে তাদের হায়াত সেই পর্যন্তই ছিলো। অসময়ে মৃত্যু বলতে কিছু নাই।
(৪)
আত্মহত্যাকারী চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে না। বরং সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا بَعِيدًا
নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে সুদূর ভ্রান্তিতে পতিত হয়। {সূরা নিসা-১১৬}
(৫)তা আল্লাহই ভালো জানেন।
(৬) কবরে দেখা করা যায় না। হ্যা যাদের রুহ ইল্লিয়্যিনে যাবে, তারা সবুজ পাখির ন্যায় তথায় ঘুরাঘুরি করবে, এবং একজন অন্যজনের বাড়িতে বেড়াতে যাবে।
(৭)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِذَا حُضِرَ الْمُؤْمِنُ أَتَتْ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ بِحَرِيرَةٍ بَيْضَاءَ فَيَقُولُونَ: اخْرُجِي رَاضِيَةً مَرْضِيًّا عَنْكِ إِلَى رَوْحِ اللَّهِ وَرَيْحَانٍ وَرَبٍّ غَيْرِ غَضْبَانَ فَتَخْرُجُ كَأَطْيَبِ رِيحِ الْمِسْكِ حَتَّى إِنَّهُ لَيُنَاوِلُهُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا حَتَّى يَأْتُوا بِهِ أَبْوَابَ السَّمَاءِ فَيَقُولُونَ: مَا أَطْيَبَ هَذِهِ الرِّيحَ الَّتِي جَاءَتْكُمْ مِنَ الْأَرْضِ فَيَأْتُونَ بِهِ أَرْوَاحَ الْمُؤْمِنِينَ فَلَهُمْ أَشَدُّ فَرَحًا بِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ بِغَائِبِهِ يَقْدُمُ عَلَيْهِ فَيَسْأَلُونَهُ: مَاذَا فَعَلَ فُلَانٌ مَاذَا فَعَلَ فُلَانٌ؟ فَيَقُولُونَ: دَعُوهُ فَإِنَّهُ كَانَ فِي غَمِّ الدُّنْيَا. فَيَقُولُ: قَدْ مَاتَ أَمَا أَتَاكُمْ؟ فَيَقُولُونَ: قَدْ ذُهِبَ بِهِ إِلَى أُمِّهِ الْهَاوِيَةِ. وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا احْتُضِرَ أَتَتْهُ مَلَائِكَةُ الْعَذَابِ بِمِسْحٍ فَيَقُولُونَ: أَخْرِجِي ساخطة مسخوطا عَلَيْكِ إِلَى عَذَابِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ. فَتَخْرُجُ كأنتن ريح جيفة حَتَّى يأْتونَ بِهِ بَابِ الْأَرْضِ فَيَقُولُونَ: مَا أَنْتَنَ هَذِهِ الرِّيحَ حَتَّى يَأْتُونَ بِهِ أَرْوَاحَ الْكُفَّارِ . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَالنَّسَائِيّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন মু’মিনের মৃত্যুর সময় উপস্থিত হয়, মালায়িকাহ্ (ফেরেশতাগণ) সাদা রেশমী কাপড় নিয়ে আসেন এবং রূহকে বলেন, তুমি আল্লাহ তা‘আলার ওপর সন্তুষ্ট, আল্লাহও তোমার ওপর সন্তুষ্ট এ অবস্থায় দেহ হতে বেরিয়ে এসো এবং আল্লাহ তা‘আলার করুণা, উত্তম রিযক্ব (রিজিক/রিযিক) ও পরওয়ারদিগারের দিকে চলো। তিনি তোমার ওপর রাগান্বিত নন। বস্ত্ততঃ মিসকের খুশবুর মতো রূহ দেহ হতে বেরিয়ে আসে। মালাকগণ সম্মানের সাথে তাকে হাতে হাতে নিয়ে চলে। এমনকি আসমানের দরজা পর্যন্ত নিয়ে আসে। ওখানে মালাকগণ পরস্পর বলাবলি করেন, কি পবিত্র খুশবু জমিনের দিক হতে আসছে! তারপর তাকে মু’মিনদের রূহের কাছে (ইল্লীয়্যিনে) আনা হয়। ওই রূহগুলো এ রূহটিকে দেখে এভাবে খুশী হয়ে যায়, যেভাবে তোমাদের কেউ (সফর হতে ফিরে এলে তোমরা) এ সময় খুশী হও। তারপর সব রূহ এ রূহটিকে জিজ্ঞেস করে অমুক কি করে? অমুক কি করে? তারা নিজেরা আবার বলাবলি করে, এখন এ রূহকে ছেড়ে দাও (অর্থাৎ কিছু জিজ্ঞেস করো না।) এখন যে দুনিয়ার শোকতাপে আছে। তারপর একটু স্বস্তির পরে (সে নিজেই বলে) অমুক ব্যক্তি যার সম্বন্ধে তোমরা জিজ্ঞেস করেছিলে, সে মরে গেছে। সে কি তোমাদের কাছে আসেনি? রূহগুলো বলে, তাকে তো তার (উপযুক্ত স্থান) হাবিয়্যাহ্ জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। (ঠিক এভাবে কোন কাফিরের মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে আসলে তার কাছে ‘আযাবের মালাক (ফেরেশতা) শক্ত চটের বিছানা নিয়ে আসেন। আর তার রূহকে বলেন, হে রূহ! আল্লাহর ‘আযাবের দিকে বেরিয়ে এসো। এ অবস্থায় যে, তুমি আল্লাহর ওপর অসন্তুষ্ট ছিলে, তিনিও তোমার প্রতি অসন্তুষ্ট। তারপর রূহ তার (কাফির ব্যক্তির) দেহ থেকে পচা লাশের দুর্গন্ধ নিয়ে বেরিয়ে আসবে। মালায়িকাহ্ (ফেরেশতারা) একে জমিনের দরজার দিকে নিয়ে যাবে। সেখানে মালায়িকাহ্ বলবে, কত খারাপ এ দুর্গন্ধ! তারপর এ রূহটিকে কাফিরদের রূহের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। (নাসায়ী-১৮৩৩)