আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১.বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে একহাজার বার সূরা ফাতিহা পড়া এবং কোন হালাল উদ্দেশ্য মাথায় রেখে একচল্লিশ বার সূরা ইয়াসিন পড়ার কোন বিধান আমাদের ধর্মে আছে কি? জানালে উপকৃত হবো।
২. মৃত ব্যক্তি যদি ভালো ব্যবহার করে মরে যায়,
মরে যাওয়ার পর তবুও যদি সবাই তার নামে খারাপ কথা বলে তাহলে কি মৃত ব্যক্তির কবরে আজাব হবে?
দয়া করে একটু জানাবেন...

৩.কবর পরবর্তী আখিরাতের পর্যায় গুলো (কিয়ামত,হাশর, মিযান, পুলসিরাত) থেকে আশ্রয় চেয়ে সহীহ্ হাদীস দারা প্রমাণিত কোনো দোয়া আছে কী? গ্রুপ এডমিন সহ কেউ জানলে দিবেন, প্লিজ।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে একহাজার বার সূরা ফাতিহা পড়া এবং কোন হালাল উদ্দেশ্য মাথায় রেখে একচল্লিশ বার সূরা ইয়াসিন পড়ার কোন বিধান কুরআন হাদীসে নেই।
,
তবে সংখ্যা নির্দিষ্ট না করে জরুরি মনে না করে, আমল করা যাবে।

তবে এটাকে সুন্নত মনে করা,জরুরি মনে করা,  কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করে তাহা পড়া বিদআত। নতুবা এমনিতে পড়তে কোন সমস্যা নেই।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ

‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’

পূর্ণ হাদীসটি হলোঃ 
রাসুল সাঃ বলেন-

وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.

আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)

আরেক হাদীসে আছে-

مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .

‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি কুরআন হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি নয়।
তবে সংখ্যা নির্দিষ্ট না করে জরুরি মনে না করে, আমল করা যাবে।
,
(০২)
এতে মৃত ব্যাক্তির কোনো সমস্যা হবেনা।
দুনিয়ার মানুষের কথা বলায় তার কোনো আযাব হবেনা।  
 
(০৩)
এই দোয়া গুলি পাঠ করতে পারেনঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ "

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ " .
ফজর আর মাগরিব নামাজের পর ০৭ বার পাঠ করবেঃ
اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَدْعُو فِي صَلَاتِهِ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ " . فَقَالَ لَهُ قَائِلٌ مَا أَكْثَرَ مَا تَسْتَعِيذُ مِنَ الْمَغْرَمِ فَقَالَ " إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَرِمَ حَدَّثَ فَكَذَبَ وَوَعَدَ فَأَخْلَفَ " - صحيح

উরওয়াহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তাঁকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতে এ দু‘আ পড়তেনঃ

‘‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্ববরি ওয়া আ‘উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জাল ওয়া আ‘উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত। আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিনাল মা’সামি ওয়াল মাগরাম।’’

তখন এক ব্যক্তি বললো, মাগরাব (ঋণ) হতে অধিক পরিমাণে আশ্রয় প্রার্থনার কারণ কি? জবাবে তিনি বললেন, কোন ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হলে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে এবং ওয়াদাহ্ করলে তা ভঙ্গ করে।
বুখারী (অধ্যায় : ইক্বামাত, অনুঃ সালামের পূর্বে দু‘আ, হাঃ ৮৩২), মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতে কোন বস্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করবে)আবু দাউদ ৮৮০।

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، أَخْبَرَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ " . - صحيح : ق 

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপনতা ও বার্ধক্য হতে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি হতে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ হতে।’’
বুখারী (অধ্যায় : দা‘ওয়াত, অনুঃ কাপুরুষতা ও অলসতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা, হাঃ ৬৩৬৯), মুসলিম (অধ্যায় : যিকর ও দু‘আ, অনুঃ কাপুরুষতা, অলসতা ও অন্যান্য বিষয় থেকে আশ্রয় চাওয়া) আবু দাউদ ১৫৪১)

حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَبُو النَّضْرِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ الْفِلَسْطِينِيُّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حَسَّانَ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مُسْلِمٍ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ مُسْلِمِ بْنِ الْحَارِثِ التَّمِيمِيِّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ أَسَرَّ إِلَيْهِ فَقَالَ: إِذَا انْصَرَفْتَ مِنْ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ فَقُلْ: اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ سَبْعَ مَرَّاتٍ، فَإِنَّكَ إِذَا قُلْتَ ذَلِكَ ثُمَّ مِتَّ فِي لَيْلَتِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا، وَإِذَا صَلَّيْتَ الصُّبْحَ فَقُلْ كَذَلِكَ، فَإِنَّكَ إِنْ مِتَّ فِي يَوْمِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ، عَنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ قَالَ: أَسَرَّهَا إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَحْنُ نَخُصُّ بِهَا إِخْوَانَنَا

আল-হারিস ইবনু মুসলিম আত্-তামীমী থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চুপে চুপে বলেন, যখন তুমি মাগরিবের সালাত থেকে অবসর হয়ে সাতবার বলবেঃ (আল্লাহুম্মা আযিরনী মিনান্-নার) ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। তুমি তা বলার পর ঐ রাতে মারা গেলে তোমার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে। আর যখন তুমি ফাজরের সালাত শেষ করবে তখনও অনুরূপ বলবে, অতঃপর তুমি যদি ঐ দিন মারা যাও তাহলে তোমার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে। মুহাম্মাদ ইবনু শু‘আইব (রহঃ) বলেন, আবূ সাঈদ (রহঃ) আমাকে আল-হারিস (রাঃ) সূত্রে জানিয়েছেন, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তা চুপে চুপে বলেছেন, যাতে আমি আমার ভাইদের নিকট তা বিশেষভঅবে প্রচার করি।
(আবু দাউদ ৫০৭৯.আহমাদ, ইবনু হিব্বান।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...