বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে একহাজার বার সূরা ফাতিহা পড়া এবং কোন হালাল উদ্দেশ্য মাথায় রেখে একচল্লিশ বার সূরা ইয়াসিন পড়ার কোন বিধান কুরআন হাদীসে নেই।
তবে এটাকে সুন্নত মনে করা,জরুরি মনে করা, কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি মনে করে তাহা পড়া বিদআত। নতুবা এমনিতে পড়তে কোন সমস্যা নেই।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ
‘(দ্বীনের নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’
পূর্ণ হাদীসটি হলোঃ
রাসুল সাঃ বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
আরেক হাদীসে আছে-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدّ .
‘যে আমাদের এই বিষয়ে (অর্থাৎ দ্বীন ও শরীয়তে) এমন কিছু উদ্ভাবন করবে, যা তার অংশ নয়, তা প্রত্যাখাত।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৭১৮; সহীহ বুখারী, হাদীস ২৬৯৭
,
★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতি কুরআন হাদীসে বর্ণিত পদ্ধতি নয়।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ "
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ " .
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عُثْمَانَ، حَدَّثَنَا بَقِيَّةُ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ عَائِشَةَ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَدْعُو فِي صَلَاتِهِ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ " . فَقَالَ لَهُ قَائِلٌ مَا أَكْثَرَ مَا تَسْتَعِيذُ مِنَ الْمَغْرَمِ فَقَالَ " إِنَّ الرَّجُلَ إِذَا غَرِمَ حَدَّثَ فَكَذَبَ وَوَعَدَ فَأَخْلَفَ " - صحيح
উরওয়াহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) তাঁকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সলাতে এ দু‘আ পড়তেনঃ
‘‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিন ‘আযাবিল ক্ববরি ওয়া আ‘উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাসীহিদ দাজ্জাল ওয়া আ‘উযুবিকা মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাত। আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘উযুবিকা মিনাল মা’সামি ওয়াল মাগরাম।’’
তখন এক ব্যক্তি বললো, মাগরাব (ঋণ) হতে অধিক পরিমাণে আশ্রয় প্রার্থনার কারণ কি? জবাবে তিনি বললেন, কোন ব্যক্তি ঋণগ্রস্ত হলে কথা বলার সময় মিথ্যা বলে এবং ওয়াদাহ্ করলে তা ভঙ্গ করে।
বুখারী (অধ্যায় : ইক্বামাত, অনুঃ সালামের পূর্বে দু‘আ, হাঃ ৮৩২), মুসলিম (অধ্যায় : মাসাজিদ, অনুঃ সলাতে কোন বস্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করবে)আবু দাউদ ৮৮০।
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، أَخْبَرَنَا الْمُعْتَمِرُ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ: كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَالْهَرَمِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ " . - صحيح : ق
আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ‘‘হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট অক্ষমতা, অলসতা, ভীরুতা, কৃপনতা ও বার্ধক্য হতে আশ্রয় চাই, আশ্রয় চাই কবরের শাস্তি হতে এবং আশ্রয় চাই জীবন ও মরণের বিপদাপদ হতে।’’
বুখারী (অধ্যায় : দা‘ওয়াত, অনুঃ কাপুরুষতা ও অলসতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করা, হাঃ ৬৩৬৯), মুসলিম (অধ্যায় : যিকর ও দু‘আ, অনুঃ কাপুরুষতা, অলসতা ও অন্যান্য বিষয় থেকে আশ্রয় চাওয়া) আবু দাউদ ১৫৪১)
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ أَبُو النَّضْرِ الدِّمَشْقِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شُعَيْبٍ، قَالَ: أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ الْفِلَسْطِينِيُّ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ حَسَّانَ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ مُسْلِمٍ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِيهِ مُسْلِمِ بْنِ الْحَارِثِ التَّمِيمِيِّ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، أَنَّهُ أَسَرَّ إِلَيْهِ فَقَالَ: إِذَا انْصَرَفْتَ مِنْ صَلَاةِ الْمَغْرِبِ فَقُلْ: اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ سَبْعَ مَرَّاتٍ، فَإِنَّكَ إِذَا قُلْتَ ذَلِكَ ثُمَّ مِتَّ فِي لَيْلَتِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا، وَإِذَا صَلَّيْتَ الصُّبْحَ فَقُلْ كَذَلِكَ، فَإِنَّكَ إِنْ مِتَّ فِي يَوْمِكَ كُتِبَ لَكَ جِوَارٌ مِنْهَا أَخْبَرَنِي أَبُو سَعِيدٍ، عَنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ قَالَ: أَسَرَّهَا إِلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَنَحْنُ نَخُصُّ بِهَا إِخْوَانَنَا
আল-হারিস ইবনু মুসলিম আত্-তামীমী থেকে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে চুপে চুপে বলেন, যখন তুমি মাগরিবের সালাত থেকে অবসর হয়ে সাতবার বলবেঃ (আল্লাহুম্মা আযিরনী মিনান্-নার) ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করো। তুমি তা বলার পর ঐ রাতে মারা গেলে তোমার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে। আর যখন তুমি ফাজরের সালাত শেষ করবে তখনও অনুরূপ বলবে, অতঃপর তুমি যদি ঐ দিন মারা যাও তাহলে তোমার জন্য জাহান্নাম থেকে মুক্তি লেখা হবে। মুহাম্মাদ ইবনু শু‘আইব (রহঃ) বলেন, আবূ সাঈদ (রহঃ) আমাকে আল-হারিস (রাঃ) সূত্রে জানিয়েছেন, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তা চুপে চুপে বলেছেন, যাতে আমি আমার ভাইদের নিকট তা বিশেষভঅবে প্রচার করি।
(আবু দাউদ ৫০৭৯.আহমাদ, ইবনু হিব্বান।)