আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
408 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (4 points)
মৃত্যুর আগে বা পরে কি শরীরের কোনো অঙ্গ দান করা যায়?

যেহেতু রক্ত দেয়া যায় সেক্ষেত্রে চুল কি দেয়া যাবে?

অনেকে চুল ডোনেট করে বিভিন্ন ক্যান্সার ফাউন্ডেশনে। আবার অনেকে মৃত্যুর পর কিডনি, চোখ দান করে।
...........

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


পৃথিবীতে মানুষই সবচেয়ে মর্যাদাবান। তারাভরা আকাশ, জোছনা ভরা রাত বিছিয়ে রাখা বিস্তৃত সবুজ ভূমি সব আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালার সব সৃষ্টিই মানুষের কল্যাণে। মানুষের প্রয়োজনে। 

মানবজাতিকে মর্যাদাবান করার জন্য মহান প্রভু মানুষের অবয়ব ও কাঠামোগত সৌন্দর্য, বিবেক-বুদ্ধি ও জ্ঞান-গরিমায় উন্নতি দিয়েছেন। দিয়েছেন ভাব-ভাষা ও শৈলীর শক্তি। আল্লাহতায়ালা বলেন, 
لقد خلقنا الإنسان في احسن تقويم
আমি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তিন ৪)। 

মানুষের মন-মনন, চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানের মর্যাদা প্রদানে কোরআন বলেছে, 
علم الانسان ما لم يعلم
আল্লাহতায়ালা মানুষকে এমন জ্ঞান দান করেছেন যা সে জানত না। (সূরা আলাক ৫)। 

আল্লাহ আরও বলেছেন, 
وعلم الأمم أسماء كلها
আমি আদমকে বস্তুজগতের সব জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি। (সূরা বাকারা ৩৩)।

 সমগ্র সৃষ্টির তুলনায় মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথা কোরআন এভাবে উচ্চারণ করছে, আমি তো মানুষকে মর্যাদা দান করেছি, জলে ও স্থলে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদের উত্তম রিজিক দিয়েছি। সৃষ্টির অনেকের ওপর আমি মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা বনি ইসরাইল ৭০)।

 পৃথিবীর ফুল ফল, বৃক্ষ-তরু-লতা, পাখ-পাখালি সব আয়োজনই মানুষের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে সমগ্র সৃষ্টি নিবেদিত। সেই মানুষের হাড়, মাংস বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যথেচ্ছ ব্যবহার, মানব অঙ্গ বেচাকেনা, আদান-প্রদান, কাটাছেঁড়া করা আদৌ কি মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ? নাকি চিরায়ত ধারায় মর্যাদাবান জাতি মানব সভ্যতার প্রতি অভিশাপ? 

আল্লাহ তায়ালার দেওয়া অংগ প্রতঙ্গের মালিক মানুষ নয়,এগুলো সবই আল্লাহ তায়ালার  প্রদত্ত আমানত।
এই জন্য চোখ বা শরীরের যেকোনো অঙ্গ জীবিত অবস্থায় বা মৃত বরনের পর দান করা শরীয়তে জায়েজ  নেই।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা ১৮/৩৩৭ ঢাবিল,কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/১৯৬)
,

বিস্তারিত জানুনঃ  
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত তথা  মৃত্যুর আগে বা পরে  শরীরের কোনো অঙ্গ দান করা জায়েজ নেই।
চুল ডোনেট করা,কিডনি ডোনেট করা কোনোটাই জায়েজ নেই। 
,
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
রক্ত দান আর চুল দান করার বিধান আলাদা।
  
রক্ত দানের ক্ষেত্রে বিধান হলোঃ
 কেউ যদি রক্ত শূন্যতার কারণে মৃত্যুর মুখে উপনীত হয় অথবা রক্তশূন্যতার কারণে কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়, এ অবস্থায় তাকে রক্ত দান করা এবং তার জন্য গ্রহণ করা ইসলামের দৃষ্টিতে জায়েজ। তবে এর জন্য বিনিময় গ্রহণ করা জায়েজ নয়। (ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১৮/৩২৮, ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ১১/৪৩৭)
,
চুলের ক্ষেত্রে বিধান হলো যদি চুল এমনিতেই পড়ে যায়,বা চিড়ুনি ব্যবহার ইত্যাদির কারনে ঘরে দীর্ঘ দিনের চুল জমা হয়ে যায়,সেক্ষেত্রে সেই চুল বিনিময় ছাড়া কোনো অসুস্থ ব্যাক্তিকে ডোনেট করতে পারবে।
বিনিময় নিতে পারবেনা।
,
তবে এই ডোনেটের জন্য আলাদা ভাবে চুল কাটা,বা অন্য কোনো উপায়ে চুল দেওয়ার অনুমোদন  নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...