আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
150 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (75 points)
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,


.





হার্ট পরিবর্তন করা জায়েজ, আমরা জানি যে জীবিত মানুষ অথবা মৃত মানুষের কোনো অঙ্গ দান করা নাজায়েজ। (হার্ট পরিবর্তন করতে হলে একজন জীবিত মানুষের হার্ট কেটে রোগীর মধ্যে লাগানো হয়)


..


।।


।।।


।।।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


https://ifatwa.info/66761/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
পৃথিবীতে মানুষই সবচেয়ে মর্যাদাবান। তারাভরা আকাশ, জোছনা ভরা রাত বিছিয়ে রাখা বিস্তৃত সবুজ ভূমি সব আল্লাহতায়ালার সৃষ্টি। আল্লাহতায়ালার সব সৃষ্টিই মানুষের কল্যাণে। মানুষের প্রয়োজনে। 

মানবজাতিকে মর্যাদাবান করার জন্য মহান প্রভু মানুষের অবয়ব ও কাঠামোগত সৌন্দর্য, বিবেক-বুদ্ধি ও জ্ঞান-গরিমায় উন্নতি দিয়েছেন। দিয়েছেন ভাব-ভাষা ও শৈলীর শক্তি। আল্লাহতায়ালা বলেন, 
لقد خلقنا الإنسان في احسن تقويم
আমি মানুষকে সুন্দরতম গঠনে সৃষ্টি করেছি। (সূরা তিন ৪)। 

মানুষের মন-মনন, চিন্তা-চেতনা ও জ্ঞানের মর্যাদা প্রদানে কোরআন বলেছে, 
علم الانسان ما لم يعلم
আল্লাহতায়ালা মানুষকে এমন জ্ঞান দান করেছেন যা সে জানত না। (সূরা আলাক ৫)। 

আল্লাহ আরও বলেছেন, 
وعلم الأمم أسماء كلها
আমি আদমকে বস্তুজগতের সব জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি। (সূরা বাকারা ৩৩)।

সমগ্র সৃষ্টির তুলনায় মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের কথা কোরআন এভাবে উচ্চারণ করছে, আমি তো মানুষকে মর্যাদা দান করেছি, জলে ও স্থলে তাদের চলাচলের বাহন দিয়েছি, তাদের উত্তম রিজিক দিয়েছি। সৃষ্টির অনেকের ওপর আমি মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা বনি ইসরাইল ৭০)।

 পৃথিবীর ফুল ফল, বৃক্ষ-তরু-লতা, পাখ-পাখালি সব আয়োজনই মানুষের জন্য। মানুষের প্রয়োজনে সমগ্র সৃষ্টি নিবেদিত। সেই মানুষের হাড়, মাংস বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের যথেচ্ছ ব্যবহার, মানব অঙ্গ বেচাকেনা, আদান-প্রদান, কাটাছেঁড়া করা আদৌ কি মানুষের মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ? নাকি চিরায়ত ধারায় মর্যাদাবান জাতি মানব সভ্যতার প্রতি অভিশাপ? 

আল্লাহ তায়ালার দেওয়া অংগ প্রতঙ্গের মালিক মানুষ নয়,এগুলো সবই আল্লাহ তায়ালার  প্রদত্ত আমানত।
এই জন্য চোখ বা শরীরের যেকোনো অঙ্গ জীবিত অবস্থায় বা মৃত বরনের পর দান করা শরীয়তে জায়েজ  নেই।
(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা ১৮/৩৩৭ ঢাবিল,কিতাবুন নাওয়াজেল ১৬/১৯৬)
,
বিস্তারিত জানুনঃ  

★কোন সুস্থ্য মানুষের কোন অঙ্গ কর্তন করে আরেক অসুস্থ্য ব্যক্তির শরীরে প্রতিস্থাপন করা অনেক উলামায়ে কেরামদের মতে কোনো ভাবেই জায়েজ নেই।

তবে কিছু ইসলামী স্কলারদের মতে শর্ত স্বাপেক্ষে এটি জায়েজ।

শর্তগুলি হলোঃ-
১. যথাসাধ্য চেষ্টা করবে,যেন মুসলমানের অঙ্গ মুসলমানদের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়।

২. কোন মানুষের এমন অঙ্গ কর্তন করা যাবে না যার উপর উক্ত ব্যক্তির প্রাণ নির্ভরশীল হয়। যেমন হার্ট ইত্যাদি।
৩. কোন মানুষের এমন অঙ্গ আলাদা করা জায়েজ নয়, যার দ্বারা ব্যক্তি মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়। যেমন চোখ ইত্যাদি স্থানান্তর করা।

৪. অভিজ্ঞ এবং নির্ভরযোগ্য ডাক্তার একথা বলেন যে, এছাড়া আর কোন গত্যান্তর নেই।
৫. যার অঙ্গ আলাদা করা হচ্ছে, তার অনুমতি থাকা বা মৃত্যুপথযাত্রী হলে তার ওয়ারিসদের পক্ষ থেকে পূর্ণ সমর্থন থাকতে হবে।

৬.জীবিত ব্যক্তির শরীর থেকে এমন অঙ্গই কেবল নেয়া যাবে, যার ব্যাপারে ডাক্তারগণ বলেন যে, এর কোন বিশেষ প্রয়োজন উক্ত ব্যক্তির নেই।
৭. অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্ট করার দ্বারা শরীরে কোন বিকৃত পরিবর্তন হতে পারবে না। যা অঙ্গ বিকৃতি ঘটায়।

৮. কোন মুসলমানের অঙ্গ কোন কাফেরকে কিছুতেই দেয়া যাবে না।
৯. যদি কোন মৃত লাওয়ারিস হয়, তাহলে তার অঙ্গ কিছুতেই ট্রান্সপ্লান্ট করা যাবে না।

১০, যার জন্য অঙ্গটি ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে, এর দ্বারা লোকটি সুস্থ্য হয়ে যাবে। (ফাতাওয়া উসমানী-৪/২২৩-২২৬)
,
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে হার্ট পরিবর্তন করা জায়েজ নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (75 points)
তাহলে, বর্তমানে হার্ট পরিবর্তনের যে চিকিৎসা সেটা নাজায়েজ?
by (678,880 points)
হার্ট পরিবর্তন করতে হলে একজন জীবিত মানুষের হার্ট কেটে রোগীর মধ্যে লাগানো হয়,সুতরাং এটি কোনোভাবেই জায়েজ নেই।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...