আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
782 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (60 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম।

 ১।গোসল করার মগে করে এক মগ পানি দিয়ে অযু করলে কি অপচয় হবে?

২।হাদিসে বর্ণিত "১ মুদ" পানি বলতে ঠিক কতটুকু পানি বুঝায়?

৩।ইদানীং কিছু নাশীদে এমন ভোকাল ব্যাকগ্রাউন্ড দেওয়া থাকে যেগুলো আসলে ভোকাল হলেও শুনতে বাদ্যযন্ত্রের মতো লাগে।এধরণের নাশীদ শোনার হুকুম কী?

1 Answer

0 votes
by (564,870 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
অযুর ক্ষেত্রেও পানির অপচয় করা নিষেধ।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
   
عن عبد اللّٰہ بن عمرو رضي اللّٰہ عنہما أن رسول اللّٰہ مر بسعد، وہو یتوضأ، فقال: ’’ما ہذا السرف؟‘‘ فقال: أفي الوضوء إسراف؟ قال: ’’نعم، وإن کنت علی نہر جار‘‘۔ (سنن ابن ماجۃ / کتاب الطہارۃ وسننہا حدیث: ۴۲۵)

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) সূত্রে বর্ণিত আছে; একবার রাসুল (সা.) হজরত সাদ (রা.)-এর পাশ কেটে যাচ্ছিলেন। এ সময় সাদ (রা.) অজু করছিলেন। তার অজুতে পানি বেশি ব্যয় হচ্ছিল। প্রিয়তম রাসুল (সা.) তা দেখে বললেন, ‘কেন এই অপচয়?’ সাদ (রা.) আরজ করলেন ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! অজুতেও কি অপচয় হয়?’ রাসুল (সা.) বললেন ‘হ্যাঁ, এমনকি বহমান নদীতে অজু করলেও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ : ৪২৫)
,
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন, 
গোসল করার মগে করে এক মগ পানি দিয়ে অযু করলে সেটি অপচয় হবেনা।
,
(০২)
রাসুল (সা.) এক ‘মুদ্দ’ (প্রায় ১ লিটার বা ৭৯৬ মিলি সমপরিমাণ) পানি দিয়ে অজু সারতেন বলে হাদিসে রয়েছে। 

أَخْبَرَنَا هَارُونُ بْنُ إِسْحَاقَ الْكُوفِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، - يَعْنِي ابْنَ سُلَيْمَانَ - عَنْ سَعِيدٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ صَفِيَّةَ بِنْتِ شَيْبَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَتَوَضَّأُ بِمُدٍّ وَيَغْتَسِلُ بِنَحْوِ الصَّاعِ .

হারুন ইবনু ইসহাক কূফী (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুদ পানি দ্বারা উযু করতেন আর গোসল করতেন এক সা’ পানি দ্বারা।

সহিহ, (ইবনু মাজাহ হাঃ ২৬৯,নাসায়ী ৩৪৭)

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مَنْصُورِ بْنِ أَبِي الْجَهْمِ ، نَا أَبُو حَفْصٍ عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ نَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ ، ثَنَا أَبُو رَيْحَانَةَ ، عَنْ سَفِينَةَ مَوْلَى أُمِّ سَلَمَةَ ، قَالَ : كَانَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - يُوَضِّئُهُ الْمُدُّ ، وَيُغَسِّلُهُ الصَّاعُ
মুহাম্মাদ ইবনে মানসূর ইবনে আবুল জাহম (রহঃ) ... উম্মে সালামা (রাঃ)-এর মুক্তদাস সাফীনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মুদ্দ পানি দিয়ে উযু করতেন এবং এক সা' পানি দিয়ে এ গোসল করতেন।
(সুনানে দারা কুতনি ৩০৬)
,

‘মুদ্দ’ হল এক ‘সা‘-এর চার ভাগের এক ভাগ । অর্থাৎ চার মুদ্দে হয় এক ‘ছা’। 
আধুনিক হিসাবে  সা ও নিসফে সা
 
১ সা = ২৮০.৫০ তোলা
১  তোলা = ১১.৬৬ গ্রাম (প্রায়)
 
অতএব 
১ সা = ৩২৭০.৬০ গ্রাম (প্রায়) 
অর্থাৎ ৩ কেজি ২৭০ গ্রামের কিছু বেশি।
এবং আধা সা = ১৬৩৫.৩১৫ গ্রাম বা ১.৬৩৫৩১৫ কেজি (প্রায়) 
অর্থাৎ ১ কেজি ৬৩৫ গ্রামের কিছু বেশি।
(সেই হিসাবে এক মুদ সমপরিমাণ হলো ৮১৭.৬৫৭৫ গ্রাম।)

[সূত্র : আওযানে শরইয়্যাহ, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. পৃ. ১৮; মেট্রিক/আন্তর্জাতিক পদ্ধতি সংক্ষিপ্ত বিবরণ (জনসাধারণের জন্য) ১৯৮২; বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স ইনস্টিটিউশন পৃ. ৩]


কেহ কেহ বলেন যে গ্রামের হিসাবে এক মুদ প্রায় ৬২৫ গ্রাম।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন, 
গ্রহনযোগ্য মতানুসারে এক মুদ প্রায় ১ লিটার বা ৭৯৬ মিলি সমপরিমাণ।

আরো জানুনঃ 
,
(০৩)
যদি সেটির আওয়াজ বাদ্যযন্ত্রের সাথেই মিলে যায়,তাহলে সেটি শোনা জায়েজ হবেনা।  

বিখ্যাত তাবেয়ী হযরত নাফে’ রাহ. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার চলার পথে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বাঁশির আওয়াজ শুনলেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি দুই কানে আঙ্গুল দিলেন। কিছু দূর গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, হে নাফে’! এখনো কি আওয়াজ শুনছ? আমি বললাম হ্যাঁ। অতঃপর আমি যখন বললাম, এখন আর আওয়াজ শোনা যাচ্ছে না তখন তিনি কান থেকে আঙ্গুল সরালেন এবং বললেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলার পথে বাঁশির আওয়াজ শুনে এমনই করেছিলেন। -মুসনাদে আহমদ হাদীস : ৪৫৩৫; সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪৯২৪ 

বিখ্যাত তাবেয়ী মুজাহিদ রাহ. থেকেও এমন একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।-ইবনে মাজাহ হাদীস : ১৯০১
,
উক্ত আওয়াজ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম মুহূর্তের জন্যও কানে তুলতে রাজি ছিলেন না। 
তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত আওয়াজ কোনোভাবেই ছাহাবায়ে কেরাম গন শ্রবন করতেননা। 

আরো জানুনঃ


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...