আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
217 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (33 points)
edited by
প্রথমে ব্যক্তি পরিচয় দেই--
আমার বোন শরীয়ত সম্পর্ক্এ অজ্ঞ। কিন্তু পাগল নয়  (বোনকে কোনো বিষয় বুজালেও বুজে না।  শরীয়ত সম্পর্কে অজ্ঞ। কাউকে কাফের বলার হাদিস শারীফ যদি আমি ওকে বুজাই,,তাহলে তাও বুজবে না। আরকি বিষয়টা বুড়ো লোকদের মত। কোনো বুড়ো মুসলিম মানুষ যদি কাউকে গালি হিসেবে কাফের শব্দ ব্যবহার করে আবার ঐ বুড়ো লোককে যদি এই ব্যাপারে বুজান যে, "দাদা এরকম কাউকে কাফের বলা ঠিক না",, রিপিট ঐ বুড়ো লোক না বুঝে আমাকে বিভিন্ন কিছু বলবে মহান আল্লাহ্ এর হুকুম হলে বুজতে পারছেন বিষয়টা আমার বোন কেমন।  বোনের  বয়স ১৬+)

এখন মুল বিষয়--
যেমন কয়েকদিন আগে ও আমাকে হিন্দু বলা প্রসংগে আপনাদের জিজ্ঞেস করলে আপনারা পরামর্শ দেন, "সতর্কতাবশত বোনের ঈমান নবায়ন জরুরি"
তো পরে ও ঈমান নবায়ন করলো।

প্রশ্ন হলো,, আবার যদি হেলায় ধুলায় এমনি অর্থাৎ  আমার কোনো কাজ-কে টার্গেট করে যেমন আমি যদি নামাজ পড়ি না,,এই গুনাহ-কে টার্গেট করে আমার নাম  না ধরে অথবা উদাহরণস্বরুপ আমার নাম নিয়েও যদি আমাকে টার্গেট করে যদি হিন্দু বলে ফেলে।
এতে কি বোনের ঈমানের সমস্যা হবে কি না,,যেহেতু ও বুজে কম দুনিয়াবি হোক আর শরীয়তগত হোক??

আরেকটি বিষয়,,ঈমান নবায়নের জন্য-ও যদি বলি তাইলে, ও না বুযে রাগ করে।

প্রশ্নের ছুরতে আমার বোনের ঈমানের কোনো সমস্য হবে কি না?? যেহেতু ও বুজে না।

1 Answer

0 votes
by (589,200 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/16115 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, 
ইসলামে কুফুর, কাফের ও কাউকে কাফের বলে ঘোষণা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর একটি বিষয়। সমকালে বিষয়টি জনপরিসরে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। ক্ষুদ্র এই রচনাটিতে এ সংক্রান্ত সূক্ষ্ম ও জটিল আলোচনায় না গিয়ে এর সাধারণ ও প্রাথমিক কিছু বিষয়ের উপর আলোকপাত করা হবে।

পরিভাষার সাথে শব্দমূলের একটা গভীর যোগাযোগ থাকে। সেটা ধরতে পারলে পরিভাষাটিকে গভীর থেকে বুঝা সহজ হয়। এ জন্য পারিভাষিক অর্থে যাওয়ার আগে শাব্দিক অর্থের দিকে একটু নজর দেওয়া যাক। আরবি ‘কুফরুন’ শব্দের মধ্যে ঢেকে দেওয়া, অকৃতজ্ঞতা করা ও আল্লাহকে অস্বীকার করার অর্থগুলো পাওয়া যায়।

পারিভাষিকভাবে কুফুরকে পরিচয় করাতে গিয়ে নানাজন নানা শব্দে একে উল্লেখ করেছেন। শব্দ ভিন্ন হলেও একটু গভীরভাবে দেখলে বুঝা যাবে মর্মগতভাবে সবগুলো আসলে একই অর্থ ধারণ করছে। যেমন, আল্লামা ইবনে হাজম রহ. বলেছেন : আল্লাহ তাআলার রুবুবিয়্যাতকে অস্বীকার করা, কুরআনুল কারীমে যে সকল নবীর নুওয়াত প্রমাণিত হয়েছে, তাদের কোন একজনের নবী হওয়াকে অস্বীকার করা, কিংবা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল বিষয় নিয়ে এসেছেন, সেগুলো থেকে এই অস্বীকারকারীর নিকট যেগুলো বিরাট দলের বর্ণনার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, তার কোন কিছুকে অস্বীকার করা; অথবা, এমন কোন কাজ করা, যার কুফুরী হওয়ার ব্যাপারে অকাট্য প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে—এমন সব কিছুর জন্য আল্লাহ তাআলা ‘কুফরুন’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। (আল ফাসল ফিল মিলাল ওয়াল আহওয়া ওয়াননিহাল, ৩:১১৮)

এখানে অস্বীকার করার দ্বারা উদ্দেশ্য হলো স্বীকার না করা। সুতরাং যদি এমন হয়, একজন লোক এগুলোকে অস্বীকার করে না, আবার স্বীকারও করে না; হয়তো সে বিশ্বাস করে না, বা তার সন্দেহ আছে; তাই সে চুপ থাকে ও এড়িয়ে চলে, তাহলে সেও কাফের বলে বিবেচিত হবে। ইবনে তাইমিয়া রহ. এর সংজ্ঞার মধ্যে এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। (মাজমুউল ফাতওয়া, ১৩:৩৩৫)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/5807

অকাট্য প্রমাণ ছাড়া কোনো মুসলমানকে কাফের বলা যাবে না

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি যদি (অন্যায়ভাবে) তার মুসলমান ভাইকে ‘কাফির’ বলে, নিঃসন্দেহে তাদের যেকোনো একজনের প্রতি কুফরি আপতিত হবে। তার কথায় বাস্তবতা না থাকলে কুফরি তার নিজের দিকেই বর্তাবে।’ (বুখারি : ২/৯০১, মুসলিম : হাদিস ১১১)

এই হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে জানা যায়, অকাট্য প্রমাণ ছাড়া কোনো মুসলমানকে ‘কাফির’ বলা হারাম। এমনকি অজ্ঞতাবশত কেউ শরিয়তের কোনো বিধান অস্বীকার বা বিরোধিতা করলেও তার বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে। (মুখতাসারু ফতোয়া মিসরিয়া : ৫৭২; আল আওয়াসেম : ৪/১৭৪)

আল্লামা শামি (রহ.) লিখেছেন, ‘যে ব্যক্তি রসিকতা করে কিংবা খেলতামাশাচ্ছলে কুফরি শব্দ উচ্চারণ করে, সব আলেমের ঐকমত্যে সে কাফির হয়ে যাবে।’ (ফতোয়ায়ে শামি : ৪/২২৪)

ফতোয়ায়ে আলমগিরিতে বিষয়টি আরো সুন্দরভাবে এসেছে—‘ব্যঙ্গবিদ্রুপকারী যদি শরিয়তের কোনো বিধানকে হালকা মনে করে উপহাস করে এবং কুফরি শব্দ ব্যবহার করে, তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে, যদিও আন্তরিক বিশ্বাস এর বিপরীত হয়।’ (ফতোয়ায়ে আলমগিরি : ২/৩৭৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
উপরোক্ত মূলনীতির আলোকে আমরা বলবো যে, সতর্কতামূলক আপনার বোনের ঈমান নবায়ন করে নেয়া জরুরী। (শেষ)
যতবার আপনার বোন এভাবে বলবে, ততবারই আপনার বোনের উপর ঈমান নবায়ন জরুরী। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...