আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
340 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (23 points)
edited by
আসসালামু  আলাইকুম।

১) ২৭ রমজানের মধ‍্যেই কুরআন খতম করতে হবে এমন কোনো বিষয় আছে কিনা?

২) জনৈক ব‍্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করে কুরআন খতম হওয়ার পর সেই সাওয়াব মৃতদের জন‍্য বখশে দিতে চান। এখন প্রশ্ন হলো সাওয়াব বখশে দিলে সেটার জন‍্য কি তিলাওয়াতকারী কি তার সাওয়াব পাবে কিনা?

৩)যিনি কুরআন খতম করেছেন তিনি প্রতিবার কুরআন খতম করে মসজিদে ইমাম কে বলেন এবং  কিছু হাদিয়া দেন।এটি কি ঠিক কিনা?
৪)কুরআন খতমের সাওয়াব বখশে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইমাম  দুআ করলে তখন পরিবারের কোনো নির্দিষ্ট সদস‍্যের নাম বলা কি ঠিক?নাকি এই সাওয়াব সকল মৃত ব‍্যক্তিরাই পায়?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
রমজান মাসে কুরআন খতম করা মুস্তাহাব। 

এটি ২৭ তারিখের আগেই হতে হবে,এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا أَبُو كَامِلٍ الْجَحْدَرِيُّ، فُضَيْلُ بْنُ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ فِرَاسٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ كُنَّ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهُ لَمْ يُغَادِرْ مِنْهُنَّ وَاحِدَةً فَأَقْبَلَتْ فَاطِمَةُ تَمْشِي مَا تُخْطِئُ مِشْيَتُهَا مِنْ مِشْيَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم شَيْئًا فَلَمَّا رَآهَا رَحَّبَ بِهَا فَقَالَ " مَرْحَبًا بِابْنَتِي " . ثُمَّ أَجْلَسَهَا عَنْ يَمِينِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ ثُمَّ سَارَّهَا فَبَكَتْ بُكَاءً شَدِيدًا فَلَمَّا رَأَى جَزَعَهَا سَارَّهَا الثَّانِيَةَ فَضَحِكَتْ . فَقُلْتُ لَهَا خَصَّكِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ بَيْنِ نِسَائِهِ بِالسِّرَارِ ثُمَّ أَنْتِ تَبْكِينَ فَلَمَّا قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلْتُهَا مَا قَالَ لَكِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ مَا كُنْتُ أُفْشِي عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سِرَّهُ . قَالَتْ فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ عَزَمْتُ عَلَيْكِ بِمَا لِي عَلَيْكِ مِنَ الْحَقِّ لَمَا حَدَّثْتِنِي مَا قَالَ لَكِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ أَمَّا الآنَ فَنَعَمْ أَمَّا حِينَ سَارَّنِي فِي الْمَرَّةِ الأُولَى فَأَخْبَرَنِي " أَنَّ جِبْرِيلَ كَانَ يُعَارِضُهُ الْقُرْآنَ فِي كُلِّ سَنَةٍ مَرَّةً أَوْ مَرَّتَيْنِ وَإِنَّهُ عَارَضَهُ الآنَ مَرَّتَيْنِ وَإِنِّي لاَ أُرَى الأَجَلَ إِلاَّ قَدِ اقْتَرَبَ فَاتَّقِي اللَّهَ وَاصْبِرِي فَإِنَّهُ نِعْمَ السَّلَفُ أَنَا لَكِ " . قَالَتْ فَبَكَيْتُ بُكَائِي الَّذِي رَأَيْتِ فَلَمَّا رَأَى جَزَعِي سَارَّنِي الثَّانِيَةَ فَقَالَ " يَا فَاطِمَةُ أَمَا تَرْضَىْ أَنْ تَكُونِي سَيِّدَةَ نِسَاءِ الْمُؤْمِنِينَ أَوْ سَيِّدَةَ نِسَاءِ هَذِهِ الأُمَّةِ " . قَالَتْ فَضَحِكْتُ ضَحِكِي الَّذِي رَأَيْتِ .

আবূ কামিল জাহদারী ফুযায়ল ইবনু হুসায়ন (রহঃ) ..... ‘আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে রিওয়ায়াত করেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রীরা সবাই তার নিকট ছিলেন, তাদের মধ্যে কেউ বাদ ছিলেন না। এমন সময় ফাতিমাহ্ (রাযিঃ) আসলেন। তার চলার ভঙ্গি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চলার ধরণ থেকে একটুও আলাদা ছিল না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাকে দেখলেন তখন তিনি এ বলে খোশ-আমদেদ জানালেন, মারহাবা, হে আমার আদরের মেয়ে! তারপর তাকে তার ডানদিকে অথবা বামদিকে বসালেন এবং তার সঙ্গে চুপিসারে কিছু বললেন। এতে তিনি খুব কান্নাকাটি করলেন। যখন তিনি তার অস্থিরতা দেখলেন, তিনি আবার তার সাথে চুপেচুপে কিছু বললেন, তখন তিনি হেসে দিলেন। আমি তাকে বললাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সহধর্মিণীগণের উপস্থিতিতেই তোমার সাথে বিশেষভাবে কোন গোপন কথা বলেছেন। আবার তুমি কাঁদছ? তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে গেলেন। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমার নিকট কি বলেছেন? তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোপন কথা প্রচার করবো না।

আয়িশাহ (রাযিঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তিকাল হয়ে গেল তখন আমি তার উপর আমার অধিকারের কসম দিয়ে বললাম, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কী বলেছেন, আমাকে অবশ্যই বলতে হবে। তিনি বললেন, আচ্ছা, এখন তবে হ্যাঁ। প্রথমবার তিনি আমাকে গোপনে বললেন, জিবরীল (আঃ) প্রতি বছর একবার কি দু’বার আমাকে কুরআন তিলাওয়াত করান। এ বছর তিনি দু’বার পুনরাবৃত্তি করালেন, আমার ধারণা হয় আমার সময় সন্নিকটে এসে গেছে। তুমি আল্লাহকে ভয় করো এবং ধৈর্যধারণ করো। কারণ, আমি তোমার জন্য কত উত্তম পূর্বসুরী। তখন আমি কাঁদলাম, যা আপনি দেখেছেন। তারপর আমার অস্থিরতা দেখে তিনি দ্বিতীয়বার চুপিসারে বললেন, হে ফাতিমাহ! মু’মিন রমণীদের প্রধান ও এ উম্মাতের সকল মহিলাদের নেত্রী হওয়া কি তুমি অপছন্দ করো? ফাতিমাহ (রাযিঃ) বললেন, তখন আমি হাসলাম, আমার যে হাসি আপনি তা প্রত্যক্ষ করেছেন। (মুসলিম শরীফ ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৬০৯১, ইসলামিক সেন্টার ৬১৩২)

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণে সলফে সালেহিনের আদর্শ ছিল রমজান মাসে কুরআন খতম করা। ইব্রাহিম নাখায়ি বলেন: আসওয়াদ রমজানের প্রতি দুই রাত্রিতে একবার কুরআন খতম করতেন।[আস- সিয়ার, (৪/৫১)]

কাতাদা (রহঃ) সাতদিনে একবার কুরআন খতম করতেন। রমজান মাস এলে প্রতি তিনদিনে একবার কুরআন খতম করতেন। শেষ দশ রাত্রি শুরু হলে প্রতি রাতে একবার কুরআন খতম করতেন।[আস সিয়ার, (৫/২৭৬)]

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি রমজানের প্রতি রাত্রিতে কুরআন খতম করতেন।[নববির ‘আত তিবয়ান (পৃষ্ঠা-৭৪)] 
তিনি বলেন: উক্তিটির সনদ সহিহ।

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আলী আল-আযদি রমজানের প্রতি রাত্রিতে একবার কুরআন খতম করতেন।[তাহযিবুল কামাল (২/৯৮৩)]

রবী’ বিন সুলাইমান বলেন: শাফেয়ী রমজান মাসে ষাটবার কুরআন খতম করতেন।[আস সিয়ার (১০/৩৬)]

কাসেম বিন হাফেয ইবনে আসাকির বলেন: আমার পিতা নিয়মিত জামাতে নামায ও কুরআন তেলাওয়াত করতেন। প্রতি শুক্রবারে কুরআন খতম করতেন। রমজান মাসে প্রতিদিন খতম করতেন।[আস সিয়ার (২০/৫৬২)]


★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,   
২৭ রমজানের মধ্যেই কুরআন খতম করতে হবে এমন কোনো বিষয় নেই।
,
(০২)
হ্যাঁ তিলাওয়াত কারীও ছওয়াব পাবে।
,
(০৩)
নিয়ম হলো যিনি কুরআন পড়বেন তিনি পড়ার সময়  মাইয়্যিতের জন্য ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে পড়বেন।
এর দ্বারাই ছওয়াব পৌছে যাবে।

,
ইমামের মাধ্যম নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
,
(০৪)
নির্দিষ্ট নাম বলাও যাবে।
নাও বলা যাবে।
,
যদি সকলের জন্যই ঈসালে ছওয়াব করে,তাহলে সকলেই ছওয়াব পাবেন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...